সালাম সংক্রান্ত নিয়ম-পদ্ধতির বর্ণনা

সালামের পদ্ধতি

যে প্রথম সালাম করবে তার জন্য “আস্‌সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু” বলা মুস্তাহাব। যদিও যাকে সালাম করা হচ্ছে সে এক ব্যক্তি হোক। আর উত্তর দাতা বলবেঃ- “ওয়া আলাইকুমুস্‌সালামু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”।

৮৫১. ইমরান ইবনুল হুসাইন (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সা)-এর কাছে এসে বললো, আসসালামু আলাইকুম। তিনি তার সালামের জবাব দিলেন। সে ব্যক্তি বসে পড়লে নবী (সা) বলেনঃ দশটি নেকি লেখা হয়েছে। এরপর আর এক ব্যক্তি এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। তিনি তার জবাব দিলেন। সে ব্যক্তি বসে পড়লে তিনি বলেনঃ বিশটি নেকি লেখা হয়েছে। তারপর আর এক ব্যক্তি এল এবং বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহ। তিনি তার জবাব দিলেন। সে লোকটিও বসে পড়লে তিনি বলেনঃ তিরিশটি নেকি লেখা হয়েছে।

ইমাম আবু দাঊদ ও ইমাম তিরমিযী হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী এটিকে হাসান হাদীস বলেছেন।


৮৫২. আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আমাকে বললেনঃ এই যে জিবরীল, তোমাকে সালাম বলছেন। আয়িশা (রা) বলেন, আমি বললাম, ওয়া আলাইহিস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ (তাঁর উপর সালাম বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত)।

ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের এ সম্পর্কিত কোন রিওয়ায়াত ‘বারাকাতুহ’ শব্দটি উল্লেখিত হয়েছে, আবার কোন রিওয়ায়াতে উল্লেখিত হয়নি। তবে সিকাহ রাবীর (প্রখর স্মরণশক্তির অধিকারী ও পরম নির্ভরযোগ্য রাবীর) যোগকৃত বাড়তি বক্তব্য গ্রহণীয়।


৮৫৩. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। নবী (সা) যখন কোন কথা বলতেন, তিনবার পুনরাবৃত্তি করতেন, যাতে তাঁর কথা বুঝা যায়। আর যখন তিনি কোন গোত্রের কাছে এসে তাদের সালাম করতেন, তিনবার সালাম করতেন।

ইমাম বুখারী হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন। আর তিনবার সালাম করার ব্যাপারটি ঘটত তখন, যখন জামায়েতটি হত খুব বেশি বড় ও বিরাট।


৮৫৪. মিকদাদ (রা) তাঁর বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসে বলেনঃ আমরা দুধ থেকে নবী (সা)-এর জন্য তাঁর অংশ তুলে রেখে দিতাম। তিনি আসতেন রাত্রিবেলা। তখন তিনি এমনভাবে সালাম করতেন যা নিদ্রিত লোকদের জাগাতো না কিন্তু জাগ্রত লোকেরা তাঁর সালাম শুনে নিত। কাজেই নবী (সা) এলেন এবং যথারীতি সালাম করলেন। (মুসলিম)


৮৫৫. আসমা বিনতে ইয়াযীদ (রা) থেকে বর্ণিত। একদিন নবী (সা) মসজিদে যাচ্ছিলেন। সেখানে একদল মহিলা বসা ছিল। তিনি নিজের হাতের ইশারায় তাদের সালাম করলেন।

ইমাম তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এটি হাসান হাদীস। আর এটি আসলে এমন একটি ব্যাপার যেখানে নবী (সা) শব্দ ও ইশারা উভয়টি একত্রিত করেন। এর প্রতি সমর্থন পাওয়া যায় ইমাম আবু দাঊদের রিওয়ায়াত থেকেঃ “তারপর তিনি আমাদেরকে সালাম করলেন”।


৮৫৬. আবু জুরাই আল-হুজাইমী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কাছে এসে বললাম, আলাইকাস সালামু ইয়া রাসূলুল্লাহ (হে আল্লাহর রাসূল, আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)।   তিনি বলেনঃ ‘আলাইকাস সালাম’ বলো না। কারণ ‘আলাইকাস সালাম’ হচ্ছে মৃতদের সালাম।

ইমাম আবু দাঊদ ও ইমাম তিরমিযী হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন। ইমাম তিরমিযী এটিকে হাসান ও সহীহ বলেছেন। ইতিপূর্বে এ হাদীসটি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে।


 

Was this article helpful?

Related Articles