রোগীর জন্য দুআ করার ভাষা
৯০২. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সা)-এর নিকট যদি কোন ব্যক্তি কোন ব্যাপারে অভিযোগ করতো অথবা তার শরীরে কোন ফোঁড়া বা জখম হতো, তাহলে নবী করীম (সা) নিজের আঙ্গুল দিয়ে এমন করতেন। এ বর্ণনাকারী সুফিয়ান ইবন উয়াইনাহ নিজের শাহাদাত আঙ্গুল যমীনের ওপর রাখলেন তারপর তাকে উঠালেন এবং বললেন (এ দু’আ পড়লেন) “বিসমিল্লাহি তুরবাতু আরদ্বিনা বিরীকাতে বাদ্বিনা ইউশফা বিহী সাকীমুনা বিইযনি রাব্বিনা-আল্লাহর নামে শুরু করছি, আমাদের এ পৃথিবীর মাটি আমাদের কারো মুখ নিঃসৃত লালা মিশ্রিত, আমাদের রুগ্ন ব্যক্তি রোগমুক্তি লাভ করুক, আমাদের রবের নির্দেশে।” (বুখারী ও মুসলিম)
৯০৩. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সা) নিজের পরিবারের কোন রোগীকে দেখতে গেলে তার ওপর ডান হাত বুলাতেন এবং বলতেনঃ “আল্লাহুমা রাব্বান নাস, আযহিবিল বা’স্ ওয়া আশফি আনতাশ শাফী, লা-শিফাআ ইল্লা শিফাউকা শিফাআন লা-ইউগাদিরু সাকামা। হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রভু! রোগ দূর করুন, আরোগ্য দান করুন, আপনিই আরোগ্য দানকারী, আপনার আরোগ্য ব্যতীত আর কোন আরোগ্য কার্যকর নয়, এমন আরোগ্য যা কোন রোগকে অবশিষ্ট রাখে না।” (বুখারী ও মুসলিম)
৯০৪. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি সাবিত (র)-কে বলেনঃ তোমাকে কি আমি রাসূলুল্লাহ (সা) যে ঝাড়-ফুঁক করেছিলেন সে ঝাড়-ফুঁক করবো না? হযরত সাবিত (র) বলেনঃ অবশ্যই, করুন। আনাস (রা) বললেনঃ ‘আল্লাহুম্মা রাব্বান নাস, মুযহিবাল বা’স ইশফি আনতাশ শাফী, লা শাফিয়া ইল্লা আনতা শিফাআন লা-ইউগাদিরু সাকামা” –“হে আল্লাহ! মানুষের প্রভু! বিপদ দূরকারী আরোগ্য দান করুন। আপনিই আরোগ্য দানকারী, আপনি ব্যতীত আরোগ্য দানকারী আর কেউ নেই, এমন আরোগ্য যার পর আর কোন রোগ থাকে না।” (বুখারী)
৯০৫. হযরত সা’দ ইবনু আবু ওয়াককাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার অসুস্থাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সা) আমাকে দেখতে গেলেন। তিনি দু’আ করলেনঃ “হে আল্লাহ! সা’দকে আরোগ্য দান করুন! হে আল্লাহ! সা’দকে আরোগ্য দান করুন! হে আল্লাহ! সা’দকে আরোগ্য দান করুন।” (মুসলিম)
৯০৬. হযরত আবু আবদুল্লাহ উসমান ইবনে আবুল আস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি নিজের শরীরে যে ব্যথা অনুভব করছিলেন সে সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট অভিযোগ করলেন। রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁকে বললেনঃ তোমার শরীরের যে স্থানে ব্যথা অনুভব হচ্ছে সেখানে নিজের হাতটি রাখ এবং তিনবার ‘বিসমিল্লাহ’ পড়। তারপর সাতবার এ দু’আটি পড়, “আউযু বিইযযাতিল্লাহি ওয়া কুদরাতিহী মিন শাররি মা আজিদু ওয়া উহাযিরু” -আমি আল্লাহর মর্যাদা ও কুদরাতের মাধ্যমে আশ্রয় চাচ্ছি সেই জিনিসের অনিষ্ট থেকে যাকে আমি পাচ্ছি এবং যার আধিক্যকে আমি ভয় করছি।” (মুসলিম)
৯০৭. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) নবী করীম (সা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন কোন রোগীকে দেখতে যায় যার মৃত্যু নিকটবর্তী নয় (বলে মনে হয়)। তারপর তার কাছে সাতবার এ বাক্যটি বলেঃ “আস আলুল্লাহাল আযীমা রাব্বাল আরশিল আযীম আঁই ইয়াশফিয়াকা-বিশাল আরশের প্রভু মহান আল্লাহর নিকট আমি প্রার্থনা করছি। তিনি তোমাকে আরোগ্য দান করুন।” তবে আল্লাহ তাকে সে রোগ থেকে আরোগ্য দান করবেন। (আবু দাউদ ও তিরমিযী )
৯০৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সা) জনৈক ব্যক্তিকে তার অসুস্থাবস্থায় তাকে দেখতে গেলেন। আর তিনি যখনই কোন অসুস্থকে দেখতে যেতেন তখই বলতেনঃ “লা বা’সা তাহরুন ইনশাআল্লাহ”-কোন চিন্তা নেই, ইনশাআল্লাহ এ রোগ গুনাহ থেকে পবিত্র করবে। (বুখারী)
৯০৯. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। জিবরাঈল (আ) নবী করীম (সা)-এর নিকট এসে বলেনঃ হে মুহাম্মদ! আপনার কি কোন অভিযোগ আছে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন জিবরীল বললেনঃ ‘বিসমিল্লাহ আরকীকা মিন কুল্লি শাইয়িন ইউযীকা ওয়া মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনি হাসিদিন, আল্লাহু ইযাশফীকা, বিসমিল্লাহি আরকীকা’-আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি এমন প্রত্যেকটি জিনিসের জন্য, যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেক ব্যক্তির অনিষ্ট ও হিংসুকের নযর থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি। (মুসলিম)
৯১০. হযরত আবু সাঈদ খুদরী ও আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তারা উভয়ে এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর পক্ষে সাক্ষ্য দেন যে, নিশ্চয়ই তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার-আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই এবং আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ তার প্রভু তার এ কথাগুলোকে সত্যতার স্বীকৃতি দেন। তারপর বলেনঃ আমি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই এবং আমিই মহান। আর যখন সে বলেঃ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু’ আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই, মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, আমি একক, আমার কোন শরীক নেই। আবার যখন সে বলে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ” -আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবুদ নেই, রাজত্ব তাঁরই প্রশংসা তাঁরই জন্য। মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি ব্যতীত আর কোন মাবুদ নেই, প্রশংসা সমস্ত আমারই জন্য এবং রাজত্ব আমারই। আর যখন সে বলে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লা-হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” (আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবুদ নেই এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ব্যতীত গুনাহ থেকে দূরে থাকা ও আনুগত্যের শক্তি লাভ করা সম্ভব নয়), আল্লাহ বলেনঃ আমি ব্যতীত কোন মা’বুদ নেই এবং গুনাহ থেকে দূরে থাকা ও আনুগত্যের শক্তি লাভ করা আমার পক্ষ থেকে ব্যতীত সম্ভব নয়। আর তিনি বলতেনঃ যে ব্যক্তি নিজের রোগের মধ্যে এ কথাগুলো বলে, তারপর মারা যায়, আগুন (দোযখের আগুন) তাকে খাবে না। (তিরমিযী) ইমাম তিরমিযী একে বিশুদ্ধ বলেছেন।