দ্বীনের পক্ষে কথা বলার সময় এবং শরীয়তের সীমালঙ্ঘন হওয়ার সময় রাগ করা
আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে সম্মান করবে, তা তার জন্য তার রবের কাছে অতি কল্যানকর।” (সূরা হজ্জঃ ৩)
তিনি আরো বলেছেনঃ
“যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহও তোমাদের সাহয্য করবেন।” (সূরা মুহাম্মদঃ ৭)
৬৪৯. আবু মাসঊদ উকবা ইবনে আমর আল-বদরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সা)-এর নিকট এসে বলল, অমুক ব্যক্তির কারণে আমার ফজরের নামাযে বিলম্ব হয়ে যায়, কেননা সে আমাদের নিয়ে খুব দীর্ঘ নামায পড়ে। সেদিন নবী (সা) অত্যন্ত অসন্তোষ সহকারে ওয়াজ করলেন, যেরূপ ইতিপূর্বে আমি আর কখনো তাঁকে অসন্তুষ্ট হতে দেখিনি। তিনি বলেনঃ হে লোকেরা! তোমাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যারা লোকদেরকে দূরে সরাচ্ছে। তোমাদের যে কেউ লোকদের ইমামতি করে, সে যেন নামাযকে সংক্ষিপ্ত করে। কারণ তার পেছনে (নামাযীদের মধ্যে) থাকে বৃদ্ধ, ছোট এবং ব্যস্ত ব্যক্তি। (বুখারী, মুসলিম)
৬৫০. আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) সফর থেকে ফিরে এলেন। আমি আমার ঘরের আঙিনায় ছবিযুক্ত একটি পর্দা টাঙিয়েছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সা) পর্দাটি দেখামাত্র সেটি ছিঁড়ে ফেললেন এবং তাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তিনি বলেনঃ হে আয়িশা! কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট সবচাইতে কঠোর শাস্তিপ্রাপ্ত হবে ঐসব লোক, যারা (ছবি তুলে বা বানিয়ে) আল্লাহর সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্য স্থাপন করে। (বুখারী, মুসলিম)
৬৫১. আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। কুরাইশরা এক মাখযুম গোত্রের এক (সম্ভ্রান্ত) মহিলার ব্যাপারে খুবই চিন্তায় পড়ে গেল। কারণ সে চুরি করেছিল। তারা পরস্পর বলাবলি করল, তাঁর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা) এর সাথে কে আলাপ করবে। তারাই আবার বলল, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর প্রিয়জন উসামা ইবনে যায়েদ ছাড়া আর কে-ই বা তাঁর সামনে এ ব্যাপারে মুখ খোলার হিম্মত রাখে? অবশেষে উসামা (রা) এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা) এর সাথে কথা বলেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ তুমি কি আল্লাহ নির্ধারিত হদ্দ (শাস্তি) সম্পর্কে সুপারিশ করছ? একথা বলে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন, তারপর বলেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতরা এজন্যই ধ্বংস হয়েছে যে, তাদের মধ্যকার কোন অভিজাত ব্যক্তি চুরি করলে তাকে ছেড়ে দিত এবং কোন দুর্বল ব্যক্তি চুরি করলে তার উপর হদ্দ কার্যকর করত। আল্লাহর শপথ! মুহাম্মাদের কন্যা ফাতিমাও যদি চুরি করত, তাহলে নিশ্চয় আমি তাঁর হাত কেটে দিতাম। (বুখারী, মুসলিম)
৬৫২. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখলেন মসজিদে কিবলার দিকে কফ লেগে রয়েছে। বিষয়টি তাঁর নিকট খুবই খারাপ লাগল, এমনকি তাঁর চেহারায় অসন্তুষ্টির ছাপ লক্ষ্য কর গেল। তৎক্ষণাৎ তিনি উঠে গিয়ে নিজ হাতে তা আঁচড়ে ফেলে দিলেন, তারপর বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন নামাযে দাঁড়ায়, তখন সে তার রবের সাথে একান্তে কথা বলে। তার রব তার ও কিবলার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করেন। অতএব তোমাদের কেউ যেন কিবলার দিকে থুথু না ফেলে, বরং বাম দিকে অথবা পায়ের নীচে নিক্ষেপ করে। অতঃপর তিনি তাঁর চাদরের এক কোণ ধরলেন এবং তাতে থুথু নিক্ষেপ করে তার একাংশ দ্বারা অপর অংশ রগড়ে দিলেন, তারপর বললেনঃ অথবা সে এরূপ করবে। (বুখারী, মুসলিম)