মু’মিনদের জন্য বিনয়-নম্রতা প্রদর্শন
[Note: এ অধ্যায়ের কুরআনের আয়াত গুলো পরে আপডেট করা হবে]
৬০২. ইয়াদ ইবনে হিমার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ আল্লাহ আমার নিকট ওহী পাঠিয়েছেন যে, তোমরা পরস্পরের সাথে বিনয় ও নম্র আচরণ কর, এমনকি কেউ কারো উপর গৌরব করবে না এবং একজন আরেকজনের উপর বাড়াবাড়ি করবে না। (মুসলিম)
৬০৩. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ দানের দ্বারা সম্পদ কমে না। বান্দার ক্ষমার গুণ দ্বারা আল্লাহ তার ইজ্জত ও সম্মানই বৃদ্ধি করেন। কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য বিনয় ও নম্রতা অবলম্বন করলে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (মুসলিম)
৬০৪. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি কিছু সংখ্যক বালকের নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সালাম দিলেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা)ও তাই করতেন। (বুখারী, মুসলিম)
৬০৫. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদীনার কোন বাঁদী (অনেক সময় তার কোনো প্রয়োজনে) নবী (সা)-এর হাত ধরে যেখানে ইচ্ছা তাঁকে নিয়ে যেত। (বুখারী)
৬০৬. আসওয়াদ ইবনে ইয়াযীদ (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রা)-কে জিজ্ঞেস করা হল, নবী (সা) তাঁর ঘরে কি কাজ করতেন? তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর ঘরে থাকাকালে কাজ করতেন অর্থাৎ নিজ পরিবার-পরিজনদের সেবায় নিয়োজিত থাকতেন। নামাযের সময় হলে তিনি নামাযের জন্য চলে যেতেন। (বুখারী)
৬০৭. আবু রিফা’য়া তামীম ইবনে উসাইদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট গেলাম। তিনি তখন ভাষণ দিচ্ছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! (আমি) এক মুসাফির দ্বীন সম্পর্কে জানতে এসেছে। সে জানে না তার দ্বীন কী? রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর ভাষণ বন্ধ করে আমার দিকে মুখ ফিরিয়ে আমার দিকে এগিয়ে এলেন। একটি চেয়ার আনা হলে তিনি তাতে বসলেন এবং আমাকে ঐসব বিধান শেখাতে লাগলেন, যা আল্লাহ তাঁকে শিখিয়েছেন, তারপর ভাষণ দিতে ফিরে এসে তা সমাপ্ত করলেন। (মুসলিম)
৬০৮. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) আহার শেষে তাঁর তিন আঙ্গুল (বৃদ্ধাঙ্গুলী, তর্জনী, মধ্যমা) চাটতেন। আনাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) এও বলেছেনঃ তোমাদের কারো খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা ছাড়িয়ে সে যেন তা খেয়ে নেয় এবং শয়তানের জন্য ফেলে না রাখে। তিনি আহারের পাত্র চেটে খাওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেনঃ কারণ তোমাদের জানা নেই, তোমাদের খাবারের কোন অংশে বরকত নিহিত আছে। (মুসলিম)
৬০৯. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী (সা) বলেনঃ আল্লাহ এমন কোন নবী পাঠাননি, যিনি বকরী চরাননি। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, আপনিও কি? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আমিও কয়েক কিরাতের বিনিময়ে মক্কাবাসীদের বকরী চরাতাম। (বুখারী)
৬১০. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী (সা) বলেছেনঃ আমাকে যদি একটি বাহু বা পায়ার জন্যও দাওয়াত করা হয় তাহলে অবশ্যই আমি সাড়া দেব। আমাকে একটি পায়া অথবা হাদিয়া দেয়া হলে আমি তাও গ্রহণ করব। (বুখারী)
৬১১. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর আদবা নামক একটি উটনী ছিল। দৌড় প্রতিযোগিতায় সেটিকে অতিক্রম করা যেতো না বা পরাভূত করা যেতো না। অবশেষে এক বেদুঈন তার উঠতি বয়সের এক উটে চড়ে আসল। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর উটনীর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় সেটি আগে চলে গেল। মুসলিমদের নিকট বিষয়টি বেশ কষ্টদায়ক অনুভূত হল। নবী (সা) তা অনুভব করতে পারলেন। তিনি বলেনঃ আল্লাহর বিধান হল, দুনিয়ার বুকে কোন জিনিস উন্নতির উচ্চ শিখরে আরোহণ করার পর আল্লাহ সেটিকে অবনমিত করেন। (বুখারী)