মহান আল্লাহ বলেনঃ
“তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে, তিনি তার প্রতিদান দেবেন। “(সূরা সাবাঃ ৩৯)
“যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় কর, তা তোমাদের নিজেদের জন্য। তোমরা তো শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থেই ব্যয় করে থাক। যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় কর, তার পুরস্কার তোমাদের পুরপুরিভাবে দান করা হবে। তোমাদের প্রতি যুলুম করা হবে না। “(সূরা আল-বাকারাঃ ২৭২)
“যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় কর, আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত। “(সূরা আল- বাকারাঃ ২৭৩)
৫৪৪. ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। নবী (সা) বলেছেনঃ দু’জন লোক আর কারো প্রতি হিংসা পোষণ করা যায় না। এক ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার যোগ্যতা ও ক্ষমতাও দান করেছেন। আরেক ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ জ্ঞান ও বিচক্ষণতা দান করেছেন এবং সে তার সাহায্যে ফায়সালা করে ও (অপরকে) তা শিক্ষা দেয়।
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি করেছেন। ইমাম নববী (র) বলেন, হাদীসটির অর্থ হচ্ছে, উপরোক্ত গুণ দু’টির অধিকারী ছাড়া আর কারো প্রতি ঈর্ষা বা ‘গিবতাহ’৬৫ করা সমীচীন নয়।
*৬৫. অন্যের সুখ-সমৃদ্ধির ধ্বংস কামনা না করে তার মত আমারও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হোক- এরূপ কামনা করাকে বলা হয় গিবতাহ বা ঈর্ষা। প্রথমটি পরিতাজ্য, দ্বিতীয়টি নির্দোষ ও গ্রহণযোগ্য।
৫৪৫. ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যার কাছে তার নিজের ধন-সম্পদের চাইতে তার ওয়ারিসের ধন-সম্পদ অধিকতর প্রিয়? সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে এমন তো কেউ নেই, বরং নিজের সম্পদই তার নিকট অধিকতর প্রিয়। তিনি বলেনঃ তাহলে জেনে রাখ, তার সম্পদ তা-ই যা সে অগ্রে পাঠিয়েছে।৬৬ আর ওয়ারিসের সম্পদ হল যা সে পেছনে রেখে গিয়েছে। (বুখারী)
*৬৬. দান-খয়রাত করা ও পরিমিত খাওয়া-পরার মাধ্যমেই সম্পদ আগে পাঠানো সম্ভব। হাদীসে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সম্পদ কল্যাণকর খাতে ব্যয় করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে, যাতে আখিরাতে তার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়।
৫৪৬. আদী ইবনে হাতেম (রা) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা) বলেছেনঃ তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে আত্নরক্ষা কর, এক টুকরা খেজুর দ্বারা হলেও। (বুখারী, মুসলিম)
৫৪৭. জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) -এর কাছে কোন জিনিস চাওয়া হলে জবাব তিনি কখনো “না “বলেননি। (বুখারী, মুসলিম)
৫৪৮. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা) বলেছেনঃ বান্দা প্রতিদিন সকালে উপনীত হলেই দু’জন ফেরেশতা আসমান থেকে অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! (তোমার পথে) খরচকারীকে তার প্রতিদান দাও। আরেকজন বলেন, হে আল্লাহ! (সম্পদ আটককারী) কৃপণকে ক্ষতিগ্রস্ত করো। (বুখারী, মুসলিম)
৫৪৯. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, “হে আদম সন্তান! খরচ করো, তোমার জন্যও খরচ করা হবে। “ (বুখারী, মুসলিম)
৫৫০. আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল (সা) কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ ইসলাম উত্তম? তিনি বলেনঃ তুমি লোকদেরকে আহার করাবে এবং পরিচিত ও অপরিচিত সকল্কে সালাম দেবে। (বুখারী, মুসলিম)
৫৫১. আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ চল্লিশটি (উত্তম) স্বভাব রয়েছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে উন্নত স্বভাব হল, দুধেল পশু দান করা। যে কোন আমলকারী ঐ স্বভাবগুলোর কোনটির উপর সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে এবং তার জন্য প্রতিশ্রুত প্রতিদানের বিষয়কে সত্য জেনে আমল করবে, তাকে অবশ্যই মহান আল্লাহ জান্নাতে দাখিল করবেন। (বুখারী)
৫৫২. আবু উমামা সুদাই ইবনে আজলান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ হে আদম সন্তান! তুমি যদি তোমার প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্পদ খরচ কর, তাহলে এটা তোমার জন্য কল্যাণকর। আর যদি তা ধরে রাখ তাহলে সেটা হবে তোমার জন্য অনিষ্টকর। তোমার জন্য যে পরিমাণ (সম্পদ) আবশ্যক, তা ধরে রাখতে অবশ্য তোমাকে ভর্ৎসনা করা হবে না। আর (দান) শুরু করবে তোমার নিকটাত্মীয়দের থেকে। দাতার হাত গ্রহীতার হাতের চাইতে উৎকৃষ্ট। (মুসলিম)
৫৫৩. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট ইসলামের নাম নিয়ে কিছু চাওয়া হলে তিনি অবশ্যই প্রার্থনাকারীকে কিছু দান করতেন। এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এলে তিনি তাকে দুই পাহাড়ের মাঝখানে বিচরণরত ছাগলগুলো দান করেন। লোকটি তার গোত্রের নিকট ফিরে গিয়ে বলল, হে আমার কওম! ইসলাম গ্রহণ কর, কারণ মুহাম্মাদ (সা) এত পরিমাণ দান করেন যে, তার পরে আর দারিদ্র্যের ভয় থাকে না। কোন লোক শুধু পার্থিব স্বার্থে ইসলাম গ্রহণ করলে, সে এ অবস্থার উপর স্বল্পকালই স্থির থাকত এবং অচিরেই তার কাছে ইসলাম দুনিয়া ও তার মধ্যকার সব কিছুর চাইতে অধিক প্রিয় হয়ে যেত।
ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
৫৫৪. উমার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) কিছু মাল বণ্টন করলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এদের চাইতে তো যাদের দেয়া হয়নি তারাই বেশি হকদার ছিল। তিনি বলেনঃ তারা আমাকে ইখতিয়ার দিয়েছে, আমার কাছে পর্যাপ্ত চাইবে অথবা আমাকে কৃপণতা দোষে দোষী করবে। অথচ আমি কৃপণ নই (তাই আমি তাদের দিচ্ছি)।
৫৫৫. জুবাইর ইবনে মুত’ইম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হুনাইনের যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে নবী (সা)-এর সাথে ছিলাম। কিছু সংখ্যক বেদু্ঈন তাঁর সাথে সাক্ষাত করে তাঁর নিকট কিছু চাইল, এমনকি তারা তাঁকে একটি গাছের কাছে ঘেরাও করে ফেলল। এক বেদুঈন তাঁর চাদর ছিনিয়ে নিল। নবী (সা) দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেনঃ আমার চাদর আমাকে দিয়ে দাও। আমার নিকট যদি এই গাছের কাঁটার সম-সংখ্যক মালও থাকত, তাহলে আমি তার সবই তোমাদের দান করতাম, তারপর তোমরা আমাকে না কৃপণ, না মিথ্যুক, না ভীরু পেতে। (বুখারী)
৫৫৬. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ দানে সম্পদ কমে না। আল্লাহ যাকে ক্ষমার গুণে সমৃদ্ধ করেন, তাকে অবশ্যই সম্মান দ্বারা ধন্য করেন। যে লোক শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিনয়-নম্রতা অবলম্বন করে, মহামহিম আল্লাহ তার মর্যাদা উন্নীত করেন। (মুসলিম)
৫৫৭. আবু কাবশা উমার ইবনে সাদ আল-আনমারী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছেনঃ তিনটি বিষয় রয়েছে যে সম্পর্কে আমি তোমাদের শপথ করে বলছি এবং তোমরা তা মনে গেঁথে নাওঃ দান করার কারণে (আল্লাহর) কোন বান্দার সম্পদ কমে না। এমন কোন মজলুম নেই, যে অত্যাচারিত হয়ে ধৈর্যধারণ করলে আল্লাহ তার সম্মান বৃদ্ধি করেন না। কোন লোক ভিক্ষার দ্বার খুললে আল্লাহ তার জন্য দারিদ্র্যের দ্বার খুলে দেন অথবা অনুরূপ কথা বলেছেন। আরেকটি কথা আমি তোমাদের বলছি, খুব মনোযোগ দিয়ে শুনে রাখ। দুনিয়া চার ধরনের লোকের জন্যঃ
(১) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন। সে এগুলোর ব্যাপারে তার রবকে ভয় করে, এগুলোর সাহায্যে তার আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে এবং এর সাথে সম্পৃক্ত আল্লাহর হক সম্পর্কে সজাগ থাকে। এ লোক উৎকৃষ্টতম মর্যাদার অধিকারী।
(২) ঐ বান্দা যাকে আল্লাহ জ্ঞান বা প্রজ্ঞা দান করেছেন কিন্তু তাকে ধন-সম্পদ দান করেননি। সে সাচ্চা নিয়তের অধিকারী। সে বলে, আমার কাছে যদি ধন-সম্পদ থাকত, তাহলে আমি অমুকের ন্যায় আমল করতাম এবং এটাই তার নিয়ত। এরা দু’জনই সাওয়াবের দিক থেকে বরাবর।
(৩) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহর ধন-সম্পদ দিয়েছেন কিন্তু জ্ঞান দান করেননি। সে জ্ঞান ছাড়াই যত্রতত্র সম্পদ বিনষ্ট করে। এ ব্যাপারে সে তার রবকে ভয় করে না, আত্মীয়তার বন্ধনও রক্ষা করে না এবং এতে আল্লাহর হক সম্পর্কেও সজাগ নয়। এ লোক রয়েছে নিকৃষ্টতম স্তরে।
(৪) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ সম্পদ ও জ্ঞান কোনটিই দান করেননি। সে বলে, আমাকে যদি আল্লাহ সম্পদ দান করতেন তাহলে তা দ্বারা আমি অমুকের ন্যায় আমল করতাম। এটাই তার নিয়াত। এ (শেষোক্ত) দু’জনের গুনাহর বোঝা সমান।
ইমাম তিরমিযী এটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এ হাদীসটি হাসান ও সহীহ।
৫৫৮. আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তারা একটি বকরী যবেহ করেন। নবী (সা) বলেনঃ তা থেকে কি অবশিষ্ট থাকল? আয়িশা (রা) বলেন, কাঁধ ছাড়া তার কিছু অবশিষ্ট নেই। নবী (সা) বলেনঃ বরং কাঁধ ছাড়া সবটুকুই অবশিষ্ট আছে।
ইমাম তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ।
হাদীসটির মর্ম হলঃ যে পরিমাণ গোশত আল্লাহর রাস্তায় দান করা হয়েছে, তার সাওয়াব আল্লাহর নিকট আখিরাতে আমাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে গেছে, শুধু ঐ কাঁধের গোশতটুকু ব্যতীত।
৫৫৯. আসমা বিনতে আবু বকর সিদ্দীক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আমাকে বলেছেনঃ সম্পদ আটকে রেখো না, তাহলে আল্লাহও তোমাকে না দিয়ে আটকে রাখবেন। অন্য এক রিওয়ায়াতে বলা হয়েছেঃ খরচ কর বা দান কর অথবা ছড়িয়ে দাও, হিসাব করে পুঞ্জীভূত করে রেখো না, তাহলে আল্লাহও তোমাকে গুণে গুণে দেবেন। উদ্বৃত্ত সম্পদ আটকে রেখো না, নতুবা আল্লাহও তোমাকে না দিয়ে আটকে রাখবেন।
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
৫৬০. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছেনঃ কৃপণ ও খরচকারীর দৃষ্টান্ত এমন দু’জন লোকের ন্যায় যাদের পরনে রয়েছে দু’টি লৌহবর্ম যা তাদের বুক থেকে গলা পর্যন্ত ঢেকে রয়েছে। খরচকারী যখনই কিছু খরচ করে তখনি ঐ বর্মটি প্রসারিত হয়ে তার (শরীরের) পুরো চামড়াকে ঢেকে নেয়, এমনকি তার আঙ্গুলসমূহকেও আবৃত করে ফেলে এবং পায়ের তলা পর্যন্ত ঢেকে যেতে থাকে। পক্ষান্তরে কৃপণ যখনই কিছু খরচ করতে চায় তখন ঐ লৌহ বর্মের বৃত্ত স্ব স্ব স্থানে এঁটে যায়। সে তাকে প্রশস্ত করতে চায় কিন্তু তা প্রশস্ত হয় না। (বুখারী, মুসলিম)
৫৬১. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার হালাল রোজগার থেকে একটি খেজুরের মূল্য পরিমাণ দান করে, বলা বাহুল্য আল্লাহ পাক হালাল বস্তু ছাড়া কিছু গ্রহণ করেন না, তবে আল্লাহ তা তাঁর (কুদরতী) ডান হাতে গ্রহণ করেন,৬৭ অতঃপর তাকে দানকারীর জন্য বৃদ্ধি করতে থাকেন যেরূপ তোমাদের কেউ অশ্বশাবক লালন-পালন করতে থাকে। অবশেষে তা পাহাড় সমতুল্য হয়ে যায়। (বুখারী, মুসলিম)
*৬৭. ইমাম রাযী এ হাদীস এবং এ জাতীয় অন্যান্য হাদিস সম্পর্কে বলেছেনঃ রাসূলুল্লাহ (সা) মানুষকে বোঝাবার জন্যই এরূপ উপমা দিয়েছেন এবং আল্লাহর দান হাতে দান গ্রহণ করার কথা বলেছেন। ইমাম তিরমিযী বলেনঃ এ সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের বক্তব্য হলঃ আমরা আওব হাদীসের উপর ঈমান পোষণ করি। আতে কোন প্রকার উপমার ধারনা রাখি না এবং এও বলি না যে, কেন বা কিভাবে এ সকল হাদীসে আল্লাহ তা’আলার উপমা দেয়া হয়েছে। আর এ ধরনের প্রশ্ন তোলাও নিন্দনীয়।
৫৬২. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা) বলেছেনঃ একদা এক লোক পানিবিহীন এক প্রান্তর দিয়ে যাচ্ছিল। সে মেঘখণ্ডের মধ্য থেকে একটি ডাক শুনতে পেলঃ অমুকের বাগানে পানি দাও। ফলে মেঘখণ্ডটি একদিকে এগিয়ে গেল এবং একটি প্রস্তরময় ভূখণ্ডে পানি বর্ষণ করল। এই পানি ছোট ছোট নালাসমূহ থেকে বড় একটি নালার দিকে প্রবাহিত হয়ে পুরো বাগানকে বেষ্টন করে নিল। পথিক উক্ত পানির পেছনে পেছনে যেতে থাকল। সে দেখতে পেল, একজন লোক তার বাগানে দাঁড়িয়ে আছে। সে তার বেলচা দিয়ে এদিক সেদিক পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে। পথিক তাকে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর বান্দা! আপনার নাম কি? সে বলল আমার নাম উমুক। অর্থাৎ সে ঐ নামই বলল, যা পথিক মেঘখণ্ড থেকে শুনতে পেয়েছিল। বাগানের মালিক বলল, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার নাম কেন জানতে চাচ্ছ? সে বলল, যে মেঘখণ্ড থেকে এ পানি বর্ষিত হয়েছে, তা থেকে আমি একটি আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম। আপনার নামোল্লেখ করে উক্ত আওয়াজে বলা হয়ঃ অমুকের বাগানে গিয়ে পানি বর্ষাও। তা এ বাগানে আপনি এমন কি আমল করেন? সে বলল, তা তুমি যখন আমার কাছে জানতেই চাইলে তাই বলছি, এ বাগানে যা কিছু উৎপন্ন হয়, আমি তার তত্ত্বাবধান করি। উৎপাদিত ফসলের এক-তৃতীয়াংশ দান করি। আমি ও আমার পরিবার-পরিজনের জীবিকার জন্য এক-তৃতীয়াংশ ব্যয় করি এবং এক-তৃতীয়াংশ পুনরায় এতে লাগিয়ে দিই। (মুসলিম)