১৭. ‘উবাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উবাদাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দিল- আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রাসূল আর নিশ্চয়ই ‘ঈসা (‘আ.) আল্লাহ্র বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তাঁর সেই কালিমাহ যা তিনি মারইয়ামকে পৌঁছিয়েছেন এবং তাঁর নিকট হতে একটি রূহ মাত্র, আর জান্নাত সত্য ও জাহান্নাম সত্য, আল্লাহ্ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, তার ‘আমাল যাই হোক না কেন। ওয়ালীদ (রহ.)….জুনাদাহ (রহ.) হতে বর্ণিত হাদীসে জুনাদাহ অতিরিক্ত বলেছেন যে, জান্নাতে আট দরজার যেখান দিয়েই সে চাইবে। (বুখারী পর্ব ৬০ : /৪৭ হাঃ ৩৪৩৫, মুসলিম ১/১০ হাঃ ২৮)
১৮. মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পেছনে বসা ছিলাম। আমার ও তাঁর মাঝে লাগামের রশির প্রান্তদেশ ভিন্ন অন্য কিছুই ছিল না। তিনি বললেনঃ মু‘আয! আমি বললামঃ হাযির আছি, হে আল্লাহ্র রাসূল! অতঃপর কিছুক্ষণ চললেন। পুনরায় বললেনঃ হে মু‘আয! আমি বললামঃ হাযির আছি, হে আল্লাহ্র রাসূল! অতঃপর আর কিছুক্ষণ চললেন। আবার বললেনঃ হে মু‘আয ইবনু জাবাল! আমি বললামঃ হাযির আছি, হে আল্লাহ্র রাসূল তিনি বললেনঃ তুমি কি জান, বান্দার উপর আল্লাহ্র কী হক? আমি বললামঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ বান্দার উপর আল্লাহ্র হক এই যে, তারা কেবল তাঁরই ‘ইবাদাত করবে, অন্য কিছুকে তাঁর শরীক করবে না। এরপর কিছু সময় চললেন। অতঃপর বললেনঃ হে মু‘আয ইবনু জাবাল! আমি বললামঃ হাযির আছি, হে আল্লাহ্র রাসূল! তিনি বললেনঃ বান্দারা যখন তাদের দায়িত্ব পালন করে, তখন আল্লাহ্র প্রতি বান্দার অধিকার কি, তা জান কি? আমি বললামঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্র উপর বান্দার অধিকার এই যে, তিনি তাদের ‘আযাব দিবেন না। (বুখারী পর্ব ৭৭ : /১০১ হাঃ ৫৯৬৭, মুসলিম হাঃ ৩০)
১৯. মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ‘উফাইর নামক গাধার পিছনে সওয়ারী ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে মু‘আয তুমি কি জান আল্লাহ্র তাঁর বান্দার উপর কী হক্ব এবং আল্লাহ্র উপর বান্দার কী হক্ব। আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বান্দার উপর আল্লাহ্র হক্ব হচ্ছে সে তাঁর ‘ইবাদাত করবে এবং তাতে কাউকে অংশীদার করবে না। আর আল্লাহ্র উপর বান্দার হক্ব হচ্ছে তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার না করলে তাকে শাস্তি না দেয়া। মু‘আয (রাঃ) বললেন, আমি কি মানুষদেরকে এর সুসংবাদ দেব না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাদেরকে এই সুসংবাদ দিও না। কেননা তারা এর উপর ভরসা করে বসে থাকবে (তারা বেশী করে ভাল কাজ করবে না)। (বুখারী পর্ব ৫৬ : /৪৬ হাঃ ২৮৫৬, মুসলিম হাঃ ৩০)
২০. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা মু‘আয (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে সওয়ারীতে ছিলেন, তখন তিনি তাকে ডাকলেন, হে মু‘আয ইবনু জাবাল! মু‘আয (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার সার্বিক সহযোগিতা ও খিদমাতে হাযির আছি। তিনি ডাকলেন, মু‘আয! মু‘আয (রাঃ) উত্তর দিলেন, আমি হাযির, ইয়া রাসূলুল্লাহ্ এবং প্রস্তুত।’ তিনি আবার ডাকলেন, মু‘আয। তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ্ এবং প্রস্তুত’। এরূপ তিনবার করলেন। অতঃপর বললেনঃ যে কোন বান্দা আন্তরিকতার সাথে এ সাক্ষ্য দেবে যে, ‘আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র রাসূল’- তার জন্য আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম হারাম করে দিবেন। মু‘আয (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি মানুষকে এ খবর দেব না, যাতে তারা সুসংবাদ পেতে পারে?’ তিনি বললেন, ‘তাহলে তারা এর উপরই ভরসা করবে।’ মু‘আয (রাঃ) (জীবন ভর এ হাদীসটি বর্ণনা করেন নি) মৃত্যুর সময় এ হাদীসটি বর্ণনা করে গেছেন যাতে (ইলম গোপন রাখার) গুনাহ্ না হয়। (বুখারী পর্ব ৩ : /৪৯ হাঃ ১২৮, মুসলিম ১/১০, হাঃ ৩২)