৮৫৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাক্কাহ বিজয়ের দিন নাবী [সাঃআঃ] বলেছিলেনঃ এখন হইতে আর হিজরত নেই, রয়েছে কেবল জিহাদ এবং নিয়ত। সুতরাং যখন তোমাদেরকে জিহাদের জন্য ডাকা হইবে, এ ডাকে তোমরা সাড়া দিবে। আসমান-যমীন সৃষ্টির দিন হইতেই আল্লাহ তাআলা এ শহরকে হারম [মহাসম্মানিত] করে দিয়েছেন। আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত করার কারণেই কিয়ামাত পর্যন্ত এ শহর থাকিবে মহাসম্মানিত হিসেবে। এ শহরে লড়াই করা আমার পূর্বেও কারো জন্য বৈধ ছিল না এবং আমার জন্যও দিনের কিছু অংশ ব্যতীত বৈধ হয়নি। আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত করার কারণে তা থাকিবে কিয়ামাত পর্যন্ত মহাসম্মানিত হিসেবে। এর কাঁটা উপড়ে ফেলা যাবে না, তাড়ানো যাবে না এর শিকার্য জানোয়ারকে, ঘোষণা করার উদ্দেশ্য ব্যতীত কেউ এ স্থানে পড়ে থাকা কোন বস্তুকে উঠিয়ে নিতে পারবে না এবং কর্তন করা যাবে না এখানকার কাঁচা ঘাস ও তরুলতাগুলোকে। আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! ইযখির বাদ দিয়ে। কেননা এ তো তাহাদের কর্মকারদের জন্য এবং তাহাদের ঘরে ব্যবহারের জন্য। বর্ণনাকারী বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হাঁ, ইযখির বাদ দিয়ে।
[বোখারী পর্ব ২৮/১০ হাঃ ১৮৩৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৮১, হাঃ ১৩৫৩] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬০. আবু শুরায়হ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আমর ইবনি সাঈদ [মদীনার গভর্নর]-কে বলিলেন, যখন তিনি মাক্কায় সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিলেন- হে আমাদের নেতা আমাকে অনুমতি দিলে আপনাকে এমন একটি হাদীস শুনাতে পারি যেটা মাক্কাহ বিজয়ের পরের দিন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছিলেন। আমার দুই কান তা শ্রবণ করেছে, আমার হৃদয় তা আয়ত্ত রেখেছে, আর আমার চোখদুটো তা দেখেছে। তিনি আল্লাহ্র হামদ ও সানা বর্ণনা করে বললেনঃ মাক্কাকে আল্লাহ্ হারাম করিয়াছেন, কোন মানুষ তাকে হারাম করেনি। তাই যে ব্যক্তি আল্লাহ্তে ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে তার জন্য সেখানে রক্তপাত করা, সেখানকার গাছ কাটা বৈধ নয়। কেউ যদি আল্লাহর রাসূলের [সেখানকার] লড়াইকে দলীল হিসেবে পেশ করে তবে তোমরা বলে দাও, আল্লাহ্ তাআলা তাহাঁর রসূল কে এর অনুমতি দিয়েছিলেন ; কিন্তু তোমাদেরকে তা দেন নি। আমাকেও সে দিনের কিছু সময়ের জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন। অতঃপর পূর্বের মতই আজ আবার একে তার নিষিদ্ধ হবার মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। উপস্থিতগণ যেন অনুপস্থিতদের নিকট [এ বাণী] পৌঁছে দেয়। অতঃপর আবু শুরায়হ্ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হল, আপনার এ হাদীস শুনে আমর কি বলিলেন? [আবু শুরায়হ্ [রাদি.] উত্তর দিলেন] তিনি বললেনঃ হে আবু শুরায়হ্! [এ বিষয়ে] আমি তোমার চেয়ে অধিক জানি। মাক্কাহ্ কোন বিদ্রোহীকে, কোন খুনের পলাতক আসামীকে এবং কোন চোরকে আশ্রয় দেয় না।
[বোখারী পর্ব ৩/৩৭ হাঃ ১০৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৮২, হাঃ ১৩৫৪] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা যখন তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-কে মাক্কাহ বিজয় দান করিলেন, তখন তিনি [সাঃআঃ] লোকদের মাঝে দাঁড়িয়ে আল্লাহর হাম্দ ও সানা [প্রশংসা] বর্ণনা করিলেন। এরপর বলিলেন, আল্লাহ তাআলা মাক্কায় [আবরাহার] হস্তি বাহিনীকে প্রবেশ করিতে দেননি এবং তিনি তাহাঁর রসূল ও মুমিন বান্দাদেরকে মাক্কাহ্র উপর আধিপত্য দান করিয়াছেন। আমার আগে অন্য কারোর জন্য মাক্কায় যুদ্ধ করা বৈধ ছিল না, তবে আমার পক্ষে দিনের সামান্য সময়ের জন্য বৈধ করা হয়েছিল, আর তা আমার পরেও কারোর জন্য বৈধ হইবে না। কাজেই এখানকার শিকার তাড়ানো যাবে না, এখানকার গাছ কাটা ও উপড়ানো যাবে না, ঘোষণাকারী ব্যক্তি ব্যতীত এখানকার পড়ে থাকা জিনিস তুলে নেয়া যাবে না। যার কোন লোক এখানে নিহত হয় তবে দুটির মধ্যে তার কাছে যা ভাল বলে বিবেচিত হয়, তা গ্রহণ করিবে। ফিদ্ইয়া গ্রহণ অথবা কিসাস। আব্বাস [রাদি.] বলেন, ইযখিরের অনুমতি দিন। কেননা, আমরা এগুলো আমাদের কবরের উপর এবং ঘরের কাজে ব্যবহার করে থাকি। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেন, ইযখির ব্যতীত [অর্থাৎ তা কাটা ও ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হল]। তখন ইয়ামানবাসী আবু শাহ [রাদি.] দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমাকে লিখে দিন। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা আবু শাহকে লিখে দাও। [ওয়ালিদ ইবনি মুসলিম বলেন] আমি আওযায়ীকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল ! আমাকে লিখে দিন তাহাঁর এ উক্তির অর্থ কী? তিনি বলেন, এ ভাষণ যা রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছ হইতে তিনি শুনেছেন, তা লিখে দিন।
[বোখারী পর্ব ৪৫/৭ হাঃ ২৪৩৪, মুসলিম পর্ব ১৫/৮২, হাঃ ১৩৫৫] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস