আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ
“তোমরা নামাযসমূহ সংরক্ষণ কর, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযটি।” (সূরা বাকারাঃ ২৩৮)
তিনি আরো বলেছেনঃ
“আর যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে তাহলে তাদের ছেড়ে দাও।” (সূরা তাওবাঃ ৫)
১০৭৫. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ কোন কাজটি সর্বাপেক্ষা উত্তম? তিনি জবাব দিলেনঃ যথাসময়ে নামায পড়া। আমি বললামঃ তারপর কোন কাজটি? তিনি বললেনঃ পিতামাতার সাথে ভাল ব্যবহার করা। আমি বললামঃ তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর পথে জিহাদ করা। (বুখারী ও মুসলিম)
১০৭৬. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ ইসলামের ভিত্তি ৫টি বিষয়ের ওপর স্থাপিত হয়েছেঃ ১. এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর রাসূল। ২. নামায কায়েম করা, ৩. যাকাত আদায় করা ৪. বাইতুল্লাহর হজ্জ করা এবং ৫. রমযান মাসের রোযা রাখা। (বুখারী ও মুসলিম)
১০৭৭. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ আমাকে মানুষের সাথে যুদ্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যে পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, “আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর রাসূল, আর যে পর্যন্ত না তারা নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে। তারপর যখন তারা এগুলো করবে, তাদের রক্ত ও সম্পদ আমার হাত থেকে সংরক্ষিত করে নিল। তবে কেবলমাত্র ইসলামের হক তাদের ওপর থাকে। আর তাদের হিসাবের দায়িত্ব ন্যস্ত হবে আল্লাহর ওপর।” (বুখারী ও মুসলিম)
১০৭৮. হযরত মু’আয (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আমাকে ইয়ামানে (শাসনকর্তার পদে অধিষ্ঠিত করে) পাঠালেন। তিনি আমাকে বললেনঃ তুমি আহলে কিতাবদের একটি গোষ্ঠির কাছে যাচ্ছ। অতঃপর তুমি তাদেরকে আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল- এ কথার সাক্ষ্য দেবার জন্য আহ্বান জানাবে। যদি তারা এ ব্যাপারে অনুগত হয়, তবে তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তাদের ওপর প্রত্যেক দিন ও রাতে ৫ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। তারা যদি এর প্রতি অনুগত হয়, তবে তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তাদের ওপর যাকাত ফরয করেছেন। তা গ্রহণ করা হবে তাদের ধনীদের কাছ থেকে এবং বিতরণ করা হবে তাদের দরিদ্রদের মধ্যে। তারা যদি এর প্রতি অনুগত হয়, তবে তাদের ভাল ও উৎকৃষ্ট সম্পদে হাত দেবে না। আর মাযলূমের ফরিয়াদকে ভয় করবে। কারণ তার ও আল্লাহর মধ্যে কোন পর্দা নেই। (মাযলূমের ফরিয়াদ অবশ্যই কবুল হয়)। (বুখারী ও মুসলিম)
১০৭৯. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছিঃ মানুষের এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামায ত্যাগ করা। (মুসলিম)
১০৮০. হযরত বুরাইদা (রা) নবী করীম (সা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমাদের ও তাদের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তা হচ্ছে নামায। অতএব যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করল সে কুফরী করল। (তিরমিযী) ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান।
১০৮১. হযরত শাকীক ইবনে আবদুল্লাহ তাবিঈ (রহঃ) (যাঁর মর্যাদা ও মহত্ব সম্পর্কে উলামায়ে কিরাম ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন) তিনি বলেনঃ মুহাম্মাদ (সা)-এর সাহাবায়ে কিরাম তাদের আমলের মধ্য থেকে নামায ব্যতীত আর কোন আমল ত্যাগ করা কুফরী মনে করতেন না। (তিরমিযী)
১০৮২. হযরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন বান্দার আমলের মধ্যে থেকে যে আমলটির হিসেব সর্বপ্রথম গ্রহণ করা হবে সেটি হবে নামায। যদি এ হিসাবটি নির্ভুল পাওয়া যায় তবে সে সফলকাম হবে ও নিজের লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে। আর যদি এ হিসাবটিতে ত্রুটি দেখা যায় তাহলে মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ বলবেন, দেখ আমার বান্দার কিছু নফলও আছে নাকি, তার সাহায্যে তার ফরযগুলোর ক্ষতিপূরণ করে দাও। তারপর সমস্ত আমলের হিসাব এভাবেই পূরণ করা হবে। (তিরমিযী) ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান।