সকাল-সন্ধ্যায় পঠিতব্য যিকির ও দুআ
[Note: এ অধ্যায়ের কুরআনের আয়াত গুলো পরে আপডেট করা হবে]
১৪৫২. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ সকাল ও সন্ধ্যায়, যে ব্যক্তি ১০০ বার “সুবহা- নাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি” বলে, কিয়ামতের দিন তার অপেক্ষা উত্তম আমল আর কারো হবে না? তবে একমাত্র সেই ব্যক্তির ব্যতীত যে একই কালেমাটি তার সমান বলে বা তার থেকে বেশিবার বলে। (মুসলিম)
১৪৫৩. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট এসে বললোঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! গত রাতে একটি বিচ্ছু আমাকে কামড় দিয়েছিল এবং তাতে আমি বড়ই কষ্ট পেয়েছি। তিনি বললেনঃ সন্ধ্যার সময় তুমি যদি “আ’উযূ বিকালিমাতিল্লাহিত তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা খালাকা বলতে, তবে অবশ্য বিচ্ছু তোমাকে কোন কষ্ট দিতো না।” (মুসলিম)
১৪৫৪. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম রাসূলুল্লাহ (সা) যখন সকাল হতো তখন বলতেনঃ “আল্লাহুম্মা বিকা আসবাহনা ওয়া বিকা আমসাইনা ওয়া বিকা নাহইয়া ওয়া বিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর”। (হে আল্লাহ! আপনারই সাহায্যে আমাদের সকাল হয় এবং আপনারই সাহায্যে আমাদের সন্ধ্যা হয় আর আপনারই সাহায্যে আমরা বাঁচি এবং আপনার রাস্তায় আমরা মরি আর আপনারই দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে।) আর যখন সন্ধ্যা হত তখন তিনি বলতেনঃ “আল্লাহুম্মা বিকা আমসাইনা ওয়া বিকা নাহইয়া ওয়া বিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর”। (হে আল্লাহ! আপনার সাহায্যে আমাদের সন্ধ্যা হয়, আপনার সাহায্যে আমরা বাঁচি ও আপনার সাহায্যে আমরা মরি এবং আপনারই দিকে আমাদের প্রত্যাবর্তন।”) (আবু দাঊদ ও তিরমিযী)
১৪৫৫. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা) বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে এমন কিছু কালেমা বলে দিন, যেগুলো আমি সকাল সন্ধ্যায় বলবো। জবাবে তিনি বললেন, বলোঃ “আল্লাহুম্মা ফাতিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি আ-লিমাল গাইবি ওয়াশ শাহাদাহ, রাব্বা কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালীকাহু আশহাদু আন লা- ইলাহা ইল্লা আনতা আউযূবিকা মিন শাররি নাফসী ওয়া শাররিশ শাইতান ওয়া শিরকিহি। (হে আল্লাহ! আসমানসমূহ ও পৃথিবীর স্রষ্টা, প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য বিষয়সমূহের জ্ঞানের অধিকারী, প্রত্যেকটি বস্তুর প্রতিপালক ও মালিক, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আমার নফসের অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের অনিষ্ট ও তার শিরক থেকে।”) রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ যখন তুমি সকাল ও সন্ধ্যা করবে এবং বিছানায় শয়ন করতে যাবে তখন এ কথাগুলো বলবে। (আবু দাঊদ ও তিরমিযী) ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ।
১৪৫৬. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (সা) যখন সন্ধ্যা করতেন তখন বলতেনঃ ‘‘আমসাইনা ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লাহি, ওয়াল হামদু লিল্লাহি, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু- আল্লাহর জন্য আমরা সন্ধ্যাকালে উপনীত হলাম এবং গোটা জগতও উপনীত হল। আর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই।” বর্ণনাকারী বলেনঃ আমার মনে হয় তিনি এই সঙ্গে একথাও বলেছিলেনঃ “লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর- রাজত্ব তাঁরই জন্য ও প্রশংসা তাঁরই জন্য এবং তিনি সব কিছুর ওপর শক্তিশালী।” “রাব্বি আসআলুকা খাইরা মা ফী হা-যিহিল লাইলাতি ওয়া খাইরা মা বাদাহা, ওয়া আউযূ বিকা শাররি মাফী-হা-যিহিল লাইলাতি ওয়া শাররি মা বা’দাহা, রাব্বি আউযু বিকা মিনাল কাসলি ওয়া সুইল কিবার, আউযূ বিকা মিন আযাবিন ওয়া আযাবিল কাবর- হে আমার রব! আমি আপনার নিকট এ রাতের সব কিছু কল্যাণ প্রার্থনা করছি এবং পরের সব কল্যাণও। আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি এ রাতের সব কিছু অকল্যাণ থেকে এবং পরের সব অকল্যাণ থেকেও। হে আমার রব! আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি আপনার নিকট আলস্য থেকে ও খারাপ বার্ধক্য থেকে। আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি জাহান্নামের আযাব ও কবরের আযাব থেকে।” সকাল বেলা তিনি আবার বলতেন, তবে শুরু করতেন এভাবেঃ আসবাহনা ওয়া আসবাহাল মুলকু লিল্লাহ- আল্লাহর জন্য আমরা ভোর করলাম এবং গোটা জগতও ভোর করল। (মুসলিম)
১৪৫৭. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে খুবাইব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (সা) বলেছেনঃ তুমি সন্ধ্যায় ও সকালে “কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ” ও মুআওয়িযাতাইন অর্থাৎ “কুল আউযূ বিরাব্বিল ফালাক” ও “কুল আউযূ বিরাব্বিন নাস” তিন বার করে পাঠ কর, তবে এগুলো সবকিছু থেকে তোমার জন্য যথেষ্ঠ হবে।” (আবু দাঊদ ও তিরমিযী) ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ।
১৪৫৮. হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি প্রত্যেক দিন সকালে ও প্রত্যেক রাতে সন্ধ্যায় “বিসমিল্লাহিল্লাযী লা ইযাদ্বুররু মা’আসমিহি শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়া লা ফিস সামা-ই ওয়া হুওয়াস সামীউল আলীম।” অর্থ- “শুরু করছি আমি সেই আল্লাহর নামে যাঁর নামের বরকতে আসমানে ও পৃথিবীতে কোন বস্তু ক্ষতি করে না এবং তিনি সর্বদ্রষ্টা ও সর্বজ্ঞ।” তিনবার পাঠ করলে কোন বস্তু তার ক্ষতি করতে পারবে না। (আবু দাঊদ ও তিরমিযী) ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ।