পবিত্র কুরআন শরীফ তেলাওয়াতের ফযীলত

ফযীলতসমূহ

কুরআন পাঠের ফযীলত

৯৯২. হযরত আবু উমামা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছিঃ কুরআন পড়। কারণ, কিয়ামতের দিন কুরআন তার পাঠকদের জন্য শাফা’আতকারী হিসেবে উপস্থিত হবে। (মুসলিম)


৯৯৩. হযরত আবু উমামাহ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছিঃ কিয়ামতের দিন কুরআনকে এবং যারা দুনিয়ায় পবিত্র কুরআন অনুযায়ী আমল করত তাদেরকে আনা হবে। কুরআনের আগে আগে থাকবে সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরান। আর এ সূরা দু’টি তাদের পাঠকারীদের পক্ষ থেকে জবাবদিহি করবে। (মুসলিম)


৯৯৪. হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ “তোমাদের সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কুরআন শিখে এবং অন্যদেরকে তা শিখায়।” (বুখারী)


৯৯৫. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করে এবং তেলাওয়াতে পারদর্শী হয়, (কিয়ামতের দিন) সে ব্যক্তি সম্ভ্রান্ত ফিরিশতাদের সাথে থাকবে। আর যে ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করে এবং তা পড়তে আটকে যায় আর তা পড়া তার জন্য কষ্টকর হয়, তার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব। (বুখারী ও মুসলিম)


৯৯৬. হযরত আবু মূসা আল-আশ’আরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যে মু’মিন ব্যক্তি কুরআন পড়ে তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে কমলা লেবুর মত। তার খুশবু মনোরম এবং স্বাদ চমৎকার। আর যে মু’মিন ব্যক্তি কুরআন পড়ে না তার দৃষ্টান্ত হলো খুরমার মতো। তার খুশবু নেই কিন্তু তার স্বাদ মিঠা। আর যে মুনাফিক কুরআন পড়ে তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে রাইহান ঘাস এর মত। খুশবু তার মনোরম কিন্তু স্বাদ তিক্ত। আর যে মুনাফিক কুরআন পড়ে না তার দৃষ্টান্ত হলো মাকাল ফলের মত। তার কোন খুশবু নেই এবং তার স্বাদও তিক্ত। (বুখারী ও মুসলিম)


৯৯৭. হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) থেকে বর্ণির্ত। নবী করীম (সা) বলেছেনঃ এই কিতাবের (কুরআন মাজীদ) মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা বহু জাতির উত্থান ঘটান (তাদেরকে উচ্চমর্যাদা দান করেন) আবার এ কিতাবের মাধ্যমে (আদেশ নিষেধ অমান্য করার কারণে) বহু জাতির পতন ঘটান। (মুসলিম)


৯৯৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) নবী করীম (সা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ দু’টি বিষয় ব্যতীত আর কিছুই ঈর্ষাযোগ্য নয়। প্রথম হচ্ছে সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ কুরআনের সম্পদ দান করেছেন এবং সে দিন-রাত তা তিলাওয়াত করে। দ্বিতীয় হচ্ছে সে ব্যক্তি যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং সে দিন-রাতের যে কোন সময় তা (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে। (বুখারী ও মুসলিম)


৯৯৯. হযরত বারা’আ ইবনে আযিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি (নফল নামাযে) সূরা কাহফ পড়ছিলেন এবং তার কাছে তার ঘোড়াটি দু’টি রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। একখণ্ড মেঘ তার ওপর ছেয়ে গেল। মেঘ খণ্ড ক্রমেই তার নিকটবর্তী হচ্ছিল আর তা দেখে ঘোড়াটি লাফালাফি শুরু করে দিল। সকাল হলে লোকটি নবী করীম (সা)-এর কাছে এসে তাঁকে ঘটনাটি জানাল। তিনি বললেনঃ ওটা ছিল ‘সাকীনাহ’ বা প্রশান্তি। কুরআনে পাকের কারণে নাযিল হয়েছিল।  (বুখারী ও মুসলিম)


১০০০. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের (কুরআন) একটি হরফ পাঠ করবে সে তার বদলায় একটি নেকী (পূণ্য) পাবে। আর একটি নেকী হবে দশটি নেকীর সমান। আমি (এ থেকে) আলামকে একটি হরফ বলছি না বরং ‘আলিফ’ একটি হরফ, ‘লাম’ একটি হরফ এবং ‘মীম’ একটি হরফ। (তিরমিযী)


১০০১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তির পেটে কুরআনের কোন অংশই নেই সে বিরান ঘরের মত। (তিরমিযী)


১০০২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) নবী করীম (সা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ (কিয়ামতের দিন) কুরআন তিলাওয়াতকারীকে বলা হবে, কুরআন পড় এবং জান্নাতের মনযিলে আরোহণ করতে থাক এবং থেমে থেমে ও ধীরে ধীরে কুরআন পড়তে থাক যেমন তুমি দুনিয়ায় পড়তে। কারণ জান্নাতে তোমার স্থান হবে সেখানে যেখানে তোমার শেষ হবে।  (আবু দাঊদ ও তিরমিযী)


 

Was this article helpful?

Related Articles