৯২৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি শাদী করলে, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কেমন মেয়ে শাদী করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা রমণীকে বিয়ে করেছি। তিনি বলিলেন, কুমারী মেয়ে এবং তাহাদের কৌতুকের প্রতি তোমার আগ্রহ নেই? [রাবী বলেন] আমি এ ঘটনা আম্র ইবনি দীনার [রাদি.]-কে অবগত করালে তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, নাবী [সাঃআঃ] আমাকে বলেছেন, তুমি কেন কুমারী মেয়েকে শাদী করলে না, যাতে তুমি তার সাথে এবং সে তোমার সাথে ক্রীড়া-কৌতুক করিতে পারত?
[বোখারী পর্ব ৬৭ : /১০, হাঃ ৫০৮০; মুসলিম ১৭/১৬, হাঃ ৭১৫]
৯৩০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাতটি বা [বর্ণনাকারীর সন্দেহ] নয়টি মেয়ে রেখে আমার পিতা ইন্তিকাল করেন। অতঃপর আমি এক বিধবা মহিলাকে বিয়ে করি। আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ জাবির! তুমি বিয়ে করেছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি অতঃপর জিজ্ঞেস করলেনঃ কুমারী বিয়ে করেছ বা বিধবা? আমি বললামঃ বিধবা। তিনি বললেনঃ কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সাথে প্রমোদ করিতে, সেও তোমার সাথে প্রমোদ করত। তুমিও তাকে হাসাতে, সেও তোমাকে হাসাতো। জাবির [রাদি.] বলেনঃ আমি তাঁকে বললাম, অনেকগুলো কন্যা সন্তান রেখে আবদুল্লাহ [তাহাঁর পিতা] মারা গেছেন, তাই আমি ওদের-ই মত কুমারী মেয়ে বিয়ে করা পছন্দ করিনি। আমি এমন মেয়েকে বিয়ে করলাম, যে তাহাদের দেখাশোনা করিতে পারে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তোমাকে বরকত দিন অথবা বললেনঃ কল্যাণ দান করুন ।
[বোখারী পর্ব ৬৯ : /১২, হাঃ ৫৩৬৭; মুসলিম ১৭/১৬, হাঃ ৭১৫]
৯৩১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক যুদ্ধে আমি রসূল [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে ছিলাম। যখন আমরা ফিরে আসছিলাম, আমি আমার মন্থর গতি উটের পিঠে ত্বরা করিতে লাগলাম। তখন আমার পিছনে একজন আরোহী এসে মিলিত হলেন। তাকিয়ে দেখলাম যে, তিনি রসূল [সাঃআঃ]। তিনি বলিলেন, তোমার এ ব্যস্ততার কারণ কী? আমি বললাম, আমি সদ্য শাদী করেছি। তিনি বলিলেন, কুমারী, না পূর্ব-বিবাহিতা বিয়ে করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা। তিনি বলিলেন, কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সাথে আমোদ-প্রমোদ করিতে, আর সেও তোমার সাথে আমোদ-প্রমোদ করত।
[রাবী] বলেন, আমরা মাদীনায় পৌঁছে নিজ নিজ বাড়িতে যেতে চাইলাম। রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা অপেক্ষা কর- পরে রাতে অর্থাৎ এশা নাগাদ ঘরে যাবে, যাতে এলোকেশী নারী তার চুল আঁচড়িয়ে নিতে পারে এবং প্রবাসী স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করিতে পারে।
হাদীসে এও আছে, হে জাবির! বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও, বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও। [কোন রাবী বলেন] অর্থাৎ সন্তান কামনা কর, সন্তান কামনা কর। [বোখারী পর্ব ৬৭ : /১২১, হাঃ ৫২৪৫; মুসলিম ১৭/১৬, হাঃ ৭১৫]
৯৩২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে ছিলাম। আমার উটটি অত্যন্ত ধীরে চলছিল বরং চলতে অক্ষম হয়ে পড়েছিল। এমতাবস্থায় নাবী [সাঃআঃ] আমার কাছে এলেন এবং বলিলেন, জাবির? আমি বললাম, জী। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার অবস্থা কী? আমি বললাম, আমার উট আমাকে নিয়ে অত্যন্ত ধীরে চলছে এবং অক্ষম হয়ে পড়ছে। ফলে আমি পিছনে পড়ে গেছি। তখন তিনি নেমে চাবুক দিয়ে উটটিকে আঘাত করিতে লাগলেন। তারপর বলিলেন, এবার আরোহণ কর। আমি আরোহণ করলাম। এরপর অবশ্য আমি উটটিকে এমন পেলাম যে, আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] হইতে অগ্রসর হওয়ায় বাধা দিতে হয়েছিল। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি বিবাহ করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, কুমারী না বিবাহিতা? আমি বললাম, বিবাহিতা । তিনি বলিলেন, তরুণী বিবাহ করলে না কেন? তুমি তার সাথে হাসি-তামাসা এবং সে তোমার সাথে পূর্ণভাবে হাসি-তামাসা করত। আমি বললাম, আমার কয়েকটি বোন রয়েছে, ফলে আমি এমন এক মহিলাকে বিবাহ করিতে পছন্দ করলাম, যে তাহাদেরকে মিল-মহব্বতে রাখতে, তাহাদের পরিচর্যা করিতে এবং তাহাদের উপর উত্তমরূপে কর্তৃত্ব করিতে সক্ষম হয়। তিনি বলিলেন, শোন! তুমি তো বাড়িতে পৌঁছবে? যখন তুমি পৌঁছবে তখন তুমি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবে। তিনি বলিলেন, তোমার উটটি বিক্রি করিবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তা এক উকীয়ার বিনিময়ে আমার নিকট হইতে কিনে নিলেন। তারপর আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] আমার আগে [মদীনায়] পৌঁছলেন এবং আমি [পরের দিন] ভোরে পৌঁছলাম। আমি মাসজিদে নাববীতে গিয়ে তাঁকে দরজার সামনে পেলাম। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, এখন এলে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, তোমার উটটি রাখ এবং মাসজিদে প্রবেশ করে দু রাকআত সালাত আদায় কর। আমি মাসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করলাম। তারপর তিনি বিলাল [রাদি.]-কে উকীয়া ওজন করে আমাকে দিতে বলিলেন। বিলাল [রাদি.] ওজন করে দিলেন এবং আমার পক্ষে ঝুঁকিয়ে দিলেন। আমি রওয়ানা হলাম। যখন আমি পিছনে ফিরেছি তখন তিনি বলিলেন, জাবিরকে আমার কাছে ডাক। আমি ভাবলাম, এখন হয়তো উটটি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন। আর আমার নিকট এর চেয়ে অপছন্দনীয় আর কিছুই ছিল না। তিনি বলিলেন, তোমার উটটি নিয়ে নাও এবং তার দামও তোমার
। [বোখারী পর্ব ৩৪ : /৩৪, হাঃ ২০৯৭; মুসলিম ১৭/১৮, হাঃ ৭১৫]