আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ
“আপনার রবের দিকে লোকদের আহ্বান করুন হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে।” (সূরা নাহলঃ ১২৫)
৬৯৯. আবু ওয়াইল শাকীক ইবনে সালামা (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনে মাসঊদ (রা) প্রতি বৃহস্পতিবার আমাদের উদ্দেশ্যে ওয়াজ-নসীহত করতেন। এক ব্যক্তি তাকে বলল, হে আবু আবদুর রহমান! আমরা আশা করি যে, আপনি প্রতিদিন আমাদের ওয়াজ-নসীহত করবেন। তিনি বলেন, দেখ, প্রতিদিন ওয়াজ করার পথে আমার জন্য এটাই একমাত্র বাধা যে, আমি তোমাদের বিরক্ত করত অপছন্দ করি। আমি তোমাদের উপদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে সেই নীতিই অনুসরণ করি যে নীতি রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদের বেলায় অনুসরণ করতেন। (তিনি লক্ষ্য রাখতেন,) পাছে আমরা যেন বিরক্ত না হয়ে পড়ি। (বুখারী, মুসলিম)
৭০০. আবুল ইয়াকযান আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছিঃ একজন লোকের দীর্ঘ নামায ও সংক্ষিপ্ত ভাষণ দীন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান ও দূরদর্শিতার পরিচায়ক। কাজেই তোমরা নামাযকে দীর্ঘ করো এবং বক্তৃতা-ভাষণ কে সংক্ষিপ্ত করো। (মুসলিম)
৭০১. মু’আবিয়া ইবনুল হাকাম আস-সুলামী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে নামায পড়ছিলাম। তখন এক নামাযী হাঁচি দিলে আমি বললাম, ইয়ারহামুকাল্লাহ (আল্লাহ তোমার প্রতি রহম করুন)। এতে মুসল্লীরা আমার প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে লাগল। আমি বললাম, তোমরা মাতৃহারা হও! তোমাদের কি হলো? তোমরা আমার প্রতি এভাবে তাকাচ্ছো কেন? তারা তাদের উরুতে হাত চাপড়াতে লাগলো। আমি যখন বুঝলাম, তারা আমাকে চুপ করাতে চাচ্ছে, (তখন আমার রাগ হলো) কিন্তু আমি চুপ হয়ে গেলাম। এদিকে রাসূলুল্লাহ (সা) নামায সমাপন করলেন। তাঁর প্রতি আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক! আমি তাঁর পূর্বে ও পরে তাঁর চাইতে উৎকৃষ্ট শিক্ষক আর দেখিনি। আল্লাহর শপথ! তিনি আমাকে তিরস্কারও করলেন না, মারলেনও না এবং মন্দও বললেন না। তিনি (শুধু এতটুকু) বলেনঃ এই নামাযের মধ্যে মানবীয় কথাবার্তা সংগত নয়। নামায হচ্ছে তাসবীহ, তাকবীর ও আল কুরআন তিলাওয়াতের সমষ্টি অথবা অনুরূপ কথা রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সবেমাত্র আমি জাহিলিয়াতের যুগ ছেড়ে এসেছি এবং আল্লাহ আমাদের ইসলাম কবুলের তৌফিক দিয়েছেন। আমাদের অনেকে (এখনো) ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট যায়। তিনি বলেনঃ না, তাদের নিকট যেয়ো না। আমি বললাম, আমাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা শুভ-অশুভের নিদর্শনে বিশ্বাস করে। তিনি বলেনঃ এটা এমন জিনিস যা তারা তাদের অন্তরে অনুভব করে। তবে এটা যেন তাদেরকে (কোন কাজ করা বা না করা থেকে) বিরত না রাখে। (মুসলিম)
৭০২. ইরবাদ ইবনে সারিয়া (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদের উদ্দেশ্যে এমন বক্তৃতা করলেন যে, তাতে অন্তর কেঁপে গেল এবং চোখ অশ্রূসিক্ত হল …। এরপর পুরো হাদীস বর্ণনা করেন। এ হাদীস সুন্নাতের রক্ষণাবেক্ষণের নির্দেশ শীর্ষক অনুচ্ছেদে ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
ইমাম তিরমিযী বর্ণিত উক্ত হাদীসটি তাঁর মতে হাসান ও সহীহ।