ইহরামের প্রকারভেদ, আর তা হাজ্জে ইফরাদ এবং তামাত্তু এবং ক্বিরান এবং হাজ্জ ও উমরাহ্‌কে যুক্ত করা বৈধ এবং হাজ্জ ক্বারেন আদায়কারী কখন তার ইহরাম থেকে হালাল হইবে।

৭৫৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা বিদায় হাজ্জের সময় নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে বের হয়ে উমরাহর নিয়্যাতে ইহরাম বাঁধি। নাবী বললেনঃ যার সঙ্গে কুরবানীর পশু আছে সে যেন উমরাহর সাথে হাজ্জের ইহ্‌রামও বেঁধে নেয়। অতঃপর সে উমরাহ ও হাজ্জ উভয়টি সম্পন্ন না করা পর্যন্ত হালাল হইতে পারবে না। {আয়েশা [রাদি.] বলেন} এরপর আমি মাক্কায় ঋতুবতী অবস্থায় পৌঁছলাম। কাজেই বায়তুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সায়ী কোনটিই আদায় করিতে সমর্থ হলাম না। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে আমার অসুবিধার কথা জানালে তিনি বললেনঃ মাথার চুল খুলে নাও এবং তা আঁচড়িয়ে নাও এবং হাজ্জের ইহ্‌রাম বহাল রাখ এবং উমরাহ ছেড়ে দাও। আমি তাই করলাম, হাজ্জ সম্পন্ন করার পর আমাকে নাবী [সাঃআঃ] আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্‌র [রাদি.]-এর সঙ্গে তানঈম-এ প্রেরণ করেন।* সেখান হইতে আমি উমরাহর ইহ্‌রাম বাঁধি। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এ তোমার [ছেড়ে দেয়া] উমরাহর স্থলবর্তী। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, যাঁরা উমরাহর ইহ্‌রাম বেঁধেছিলেন, তাঁরা বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সায়ী সমাপ্ত করে হালাল হয়ে যান এবং মিনা হইতে ফিরে আসার পর দ্বিতীয়বার তাওয়াফ করেন আর যাঁরা হাজ্জ ও উমরাহ উভয়ের ইহরাম বেঁধেছিলেন তাঁরা একটি মাত্র তাওয়াফ করেন।

[বোখারী পর্ব ২৫/৩১ হাঃ ১৫৫৬, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭ হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৭৫৬. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বিদায় হজ্জের সময় বের হয়েছিলাম। আমাদের কেউ ইহরাম বেঁধেছিল উমরার আর কেউ বেঁধেছিল হজ্জের। আমরা মাক্কায় এসে পৌঁছলে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ যারা উমরার ইহরাম বেঁধেছে কিন্তু কুরবানীর পশু সাথে আনেনি, তারা যেন ইহরাম খুলে ফেলে। আর যারা উমরার ইহরাম বেঁধেছে ও কুরবানীর পশু সাথে এনেছে, তারা যেন কুরবানী করা পর্যন্ত ইহরাম না খোলে। আর যারা হজ্জের ইহরাম বেঁধেছে তারা যেন হাজ্জ পূর্ণ করে। আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ অতঃপর আমার হায়য শুরু হয় এবং আরাফার দিনেও তা বহাল থাকে। আমি শুধু উমরার ইহরাম বেঁধেছিলাম। নাবী [সাঃআঃ] আমাকে মাথার বেণী খোলার, চুল আঁচড়িয়ে নেয়ার এবং উমরাহর ইহরাম ছেড়ে হজ্জের ইহরাম বাঁধার নির্দেশ দিলেন। আমি তাই করলাম। পরে হাজ্জ সমাধান করলাম। অতঃপর আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্‌র [রাদি.]-কে আমার সাথে পাঠালেন। তিনি আমাকে তানঈম হইতে আমার পূর্বের পরিত্যক্ত উমরার পরিবর্তে উমরাহ পালনের অদেশ করিলেন।

[বোখারী পর্ব ৬/১৮ হাঃ ৩১৯, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭ হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৭৫৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা হাজ্জের উদ্দেশেই [মদীনা হইতে] বের হলাম। সারিফ নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার হায়য আসলো। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং বললেনঃ কী হলো তোমার? তোমার হায়য এসেছে? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বললেনঃ এ তো আল্লাহ্ তাআলাই আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি বায়তুল্লাহ্‌র তাওয়াফ ছাড়া হাজ্জের বাকী সব কাজ করে যাও। আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর স্ত্রীদের পক্ষ হইতে গাভী কুরবানী করিলেন।

[বোখারী পর্ব ৬/১ হাঃ ২৯৪, মুসলিম ১৫/১৭ হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৭৫৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে হাজ্জের ইহরাম বেঁধে বের হলাম, হাজ্জের মাসে এবং হাজ্জের কার্যাদি পালনের উদ্দেশ্যে। যখন সারিফ নামক স্থানে অবতরণ করলাম, তখন নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীগণকে বললেনঃ যার সাথে কুরবানীর জানোয়ার নেই এবং সে এই ইহরামকে উমরাহ্‌য় পরিণত করিতে চায়, সে যেন তা করে নেয় [অর্থাৎ উমরাহ করে হালাল হয়]। আর যার সাথে কুরবানীর জানোয়ার আছে সে এরূপ করিবে না। [অর্থাৎ হালাল হইতে পারবে না]। নাবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর কয়েকজন সমর্থ সাহাবীর নিকট কুরবানীর জানোয়ার ছিল, তাঁদের হাজ্জ উমরাহ্‌য় পরিণত হল না। {আয়েশা [রাদি.] বলিলেন} আমি কাঁদছিলাম, এমতাবস্থায় নাবী [সাঃআঃ] আমার নিকট এসে বললেনঃ তোমাকে কিসে কাঁদাচ্ছে? আমি বললাম, আপনি আপনার সাহাবীগণকে যা বলেছেন, আমি তা শুনিয়াছি। আমি তো উমরাহ হইতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে গেছি। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমার কী অবস্থা? আমি বললাম, আমি তো সালাত আদায় করছি না [ঋতুবতী অবস্থায়]। তিনি বললেনঃ এতে তোমার ক্ষতি হইবে না। তুমি তো আদম কন্যাদেরই একজন। তাহাদের অদৃষ্টে যা লেখা ছিল তোমার জন্যও তা লিখিত হয়েছে। সুতরাং তুমি তোমার হাজ্জ আদায় কর। সম্ভবতঃ আল্লাহ তাআলা তোমাকে উমরাহও দান করবেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, আমি এ অবস্থায়ই থেকে গেলাম এবং পরে মিনা হইতে প্রত্যাবর্তন করে মুহাস্‌সাবে অবতরণ করলাম। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] আবদুর রহমান {আয়েশা [রাদি.]-এর সহোদর ভাই} [রাদি.]-কে ডেকে বললেনঃ তুমি তোমার বোনকে হারামের বাইরে নিয়ে যাও। সেখান হইতে যেন সে উমরাহর ইহ্‌রাম বাঁধে। অতঃপর তোমরা তাওয়াফ করে নিবে। আমি তোমাদের জন্য এখানে অপেক্ষা করব। আমরা মধ্যরাতে এলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা কি তাওয়াফ সমাধা করেছ? আমি বললাম, হাঁ। এ সময় তিনি সাহাবীগণকে রওয়ানা হওয়ার ঘোষণা দিলেন। তাই লোকজন এবং যাঁরা ফাজরের পূর্বে তাওয়াফ করেছিলেন তাঁরা রওয়ানা হলেন। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] মাদীনাহ অভিমুখে রওয়ানা হলেন।

[বোখারী পর্ব ২৬/৯ হাঃ ১৭৮৮, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৭৫৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বের হলাম এবং একে হাজ্জের সফর বলেই আমরা জানতাম। আমরা যখন [মাক্কায়] পৌঁছে বাইতুল্লাহ-এর তাওয়াফ করলাম তখন নাবী [সাঃআঃ] নির্দেশ দিলেনঃ যারা কুরবানীর পশু সঙ্গে নিয়ে আসেনি তারা যেন ইহরাম ছেড়ে দেয়। তাই যিনি কুরবানীর পশু সঙ্গে আনেননি তিনি ইহরাম ছেড়ে দেন। আর নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণীগণ ইহরাম ছেড়ে দিলেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, আমি ঋতুবতী হয়েছিলাম বিধায় বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করিতে পারিনি। [ফিরতি পথে] মুহাসসাব নামক স্থানে রাত যাপনকালে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! সকলেই উমরাহ ও হাজ্জ উভয়টি সমাধা করে ফিরছে আর আমি কেবল হাজ্জ করে ফিরছি। তিনি বললেনঃ আমরা মাক্কাহ পৌঁছলে তুমি কি সে দিনগুলোতে তওয়াফ করনি? আমি বললাম, জী-না। তিনি বলিলেন, তোমার ভাই-এর সাথে তান্ঈম চলে যাও, সেখান হইতে উমরাহর ইহ্‌রাম বাঁধবে। অতঃপর অমুক স্থানে তোমার সাথে সাক্ষাৎ ঘটবে। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ কী বললে! তুমি কি কুরবানীর দিনগুলোতে তাওয়াফ করনি! আমি বললাম, হাঁ করেছি। তিনি বললেনঃ তবে কোন অসুবিধা নেই, তুমি চল। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, এরপর নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে এমতাবস্থায় আমার সাক্ষাৎ হলো যখন তিনি মাক্কাহ ছেড়ে উপরের দিকে উঠছিলেন, আর আমি মাক্কাহ্‌র দিকে অবতরণ করছি। অথবা আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, আমি উঠছি ও তিনি অবতরণ করছেন।

[বোখারী পর্ব ২৫/৩৪ হাঃ ১৫৬১, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১১] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৭৬০. আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্র [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে তাহাঁর সওয়ারীর পিঠে আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে বসিয়ে তানঈম হইতে উমরাহ করানোর নির্দেশ দেন।

[বোখারী পর্ব ২৬/৬ হাঃ ১৭৮৪, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১২] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৭৬১. আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্‌কে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি যে, তাহাঁর সঙ্গে তখন আরো কিছু লোক ছিল। আমরা রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীগণ শুধু হাজ্জের নিয়তে ইহ্‌রাম বেঁধেছিলাম। এর সঙ্গে উমরাহ্র নিয়ত ছিল না। বর্ণনাকারী আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, জাবির [রাদি.] বলেছেন, নাবী [সাঃআঃ] যিলহাজ্জ মাসের চার তারিখ সকাল বেলায় [মাক্কাহয়] আগমন করিলেন। এরপর আমরাও যখন আগমন করলাম, তখন নাবী [সাঃআঃ] আমাদেরকে ইহ্‌রাম খুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেনঃ তোমরা ইহ্‌রাম খুলে ফেল এবং স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হও। [রাবী] আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনা করেন, জাবির [রাদি.] বলেছেন, [স্ত্রীদের সঙ্গে যৌন সঙ্গম করা] তিনি তাহাদের উপর বাধ্যতামূলক করেননি বরং মুবাহ্ করে দিয়েছেন। এরপর তিনি অবগত হন যে, আমরা বলাবলি করছি: আমাদের ও আরাফার দিনের মাঝখানে মাত্র পাঁচদিন বাকি, তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমরা ইহ্‌রাম খুলে স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হই। তখন তো আমরা পৌঁছব আরাফায় আর আমাদের পুরুষাঙ্গ থেকে মযী ঝরতে থাকিবে। আত্বা বলেন, জাবির [রাদি.] এ কথা বোঝানোর জন্য হাত দিয়ে ইঙ্গিত করেছিলেন কিংবা হাত নেড়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে বললেনঃ তোমরা জান, আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহ্‌কে অধিক ভয় করি, তোমাদের তুলনায় আমি অধিক সত্যবাদী ও নিষ্ঠাবান। আমার সঙ্গে যদি কুরবানীর পশু না থাকত, আমিও তোমাদের মত ইহরাম খুলে ফেলতাম। সুতরাং তোমরা ইহ্‌রাম খুলে ফেল। আমি যদি আমার কাজের পরিণাম আগে জানতাম যা পরে অবগত হয়েছি তবে আমি কুরবাণীর পশু সঙ্গে আনতাম না। অতএব আমরা ইহ্‌রাম খুলে ফেললাম। নাবী [সাঃআঃ]-এর নির্দেশ শুনলাম এবং তাহাঁর আনুগত্য করলাম।

[বোখারী পর্ব ৯৬/১৭ হাঃ ৭৩৬৭, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২৪০] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৭৬২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আলী [রাদি.]-কে তাহাঁর কৃত ইহরামের উপর স্থির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুহাম্মাদ ইবনি বাক্র ইবনি জুরাইজ-আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-জাবির [রাদি.] সূত্রে আরও বর্ণনা করেন যে, জাবির [রাদি.] বলেছেনঃ আলী ইবনি আবু ত্বলিব তাহাঁর আদায়কৃত কর খুমুস নিয়ে [মাক্কায়] আসলেন। তখন নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, হে আলী! তুমি কিসের ইহ্‌রাম বেঁধেছ? তিনি বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ] যেটির ইহ্‌রাম বেঁধেছেন। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তা হলে তুমি কুরবানীর পশু পাঠিয়ে দাও এবং ইহ্‌রাম বাঁধা এ অবস্থায় অবস্থান করিতে থাক। বর্ণনাকারী {জাবির [রাদি.]} বলেন, সে সময় আলী [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর জন্য কুরবানীর পশু পাঠিয়েছিলেন।

[বোখারী পর্ব ৬৪/৬১ হাঃ ৪৩৫২, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৭৬৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীগণ হাজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলেন। নাবী [সাঃআঃ] ও তালহা [রাদি.] ব্যতীত কারো সাথে কুরবানীর পশু ছিল না। আর আলী [রাদি.] ইয়ামান হইতে এলেন এবং তাহাঁর সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল। তিনি বলেছিলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যে বিষয়ে ইহরাম বেঁধেছেন, আমিও তার ইহ্‌রাম বাঁধলাম। নাবী [সাঃআঃ] এ ইহ্‌রামকে উমরায় পরিণত করিতে এবং তাওয়াফ করে এরপরে মাথার চুল ছোট করে হালাল হয়ে যেতে নির্দেশ দিলেন। তবে যাদের সঙ্গে কুরবানীর জানোয়ার রয়েছে [তারা হালাল হইবে না]। তাঁরা বলিলেন, আমরা মিনার দিকে রওয়ানা হবো এমতাবস্থায় আমাদের কেউ স্ত্রীর সাথে সহবাস করে এসেছে। এ সংবাদ নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট পৌঁছলে তিনি বললেনঃ যদি আমি এ ব্যাপারে পূর্বে জানতাম, যা পরে জানতে পারলাম, তাহলে কুরবানীর জানোয়ার সঙ্গে আনতাম না। আর যদি কুরবানীর পশু আমার সাথে না থাকত অবশ্যই আমি হালাল হয়ে যেতাম। আর আয়িশাহ্ [রাদি.]-এর ঋতু দেখা দিল। তিনি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ব্যতীত হাজ্জের সব কাজই সম্পন্ন করে নিলেন। রাবী বলেন, এরপর যখন তিনি পাক হলেন এবং তাওয়াফ করিলেন, তখন বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আপনারা তো হাজ্জ এবং উমরাহ উভয়টি পালন করে ফিরছেন, আমি কি শুধু হাজ্জ করেই ফিরব? তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্র [রাদি.]-কে নির্দেশ দিলেন তাকে সঙ্গে নিয়ে তানঈমে যেতে। অতঃপর যুলহাজ্জ মাসেই হাজ্জ আদায়ের পর আয়িশাহ্ [রাদি.] উমরাহ আদায় করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] যখন জামরাতুল আকাবায় কঙ্কর মারছিলেন তখন সুরাকা ইবনি মালিক ইবনি জুশুম [রাদি.]-এর নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! এ হাজ্জের মাসে উমরাহ আদায় করা কি আপনাদের জন্য খাস? আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ না, এতো চিরদিনের [সকলের] জন্য।

[বোখারী পর্ব ২৬/৬ হাঃ ১৭৮৫, মুসলিম পর্ব ১৫/১৭, হাঃ ১২১৬] ওমরা হজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

Was this article helpful?

Related Articles