হাস্‌সান বিন সাবিত (রা)-এর মর্যাদা।

১৬১৬. সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা উমার [রাদি.] মাসজিদে নববীতে আগমন করেন, তখন হাস্‌সান ইবনি সাবিত [রাদি.] কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। তখন তিনি বলিলেন, এখানে আপনার চেয়ে উত্তম ব্যক্তির উপস্থিতিতেও আমি কবিতা আবৃত্তি করতাম। অতঃপর তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর দিকে তাকালেন এবং বলিলেন, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি; আপনি কি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন যে, “তুমি আমার পক্ষ হইতে জবাব দাও। হে আল্লাহ! আপনি তাকে রুহুল কুদুস {জিবরীল [আ.]} দ্বারা সাহায্য করুন।” তিনি উত্তরে বলিলেন, হ্যাঁ।* {মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করিতে হাস্‌সান সাবিত [রাদি.]-এর প্রতি উমার [রাদি.] আপত্তি করাতে তিনি আবু হুরাইরাহ [রাদি.]-কে সাক্ষী হিসেবে পেশ করিলেন যে, তিনি আল্লাহর রসূল [সাঃ]-এর উপস্থিতিতেও মাসজিদে কবিতা আবৃত্তি করিয়াছেন।}

[বোখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ৬ হাদীস নং ৩২১২; মুসলিম ৪৪/৪৩ হাঃ ২৪৮৫]


১৬১৭, বারাআ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] হাস্‌সান [রাদি.]-কে বলেছেন, তুমি তাহাদের কুৎসা বর্ণনা কর অথবা তাহাদের কুৎসার জবাব দাও। তোমার সঙ্গে জিবরীল [আ.] আছেন।

[বোখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ৬ হাদীস নং ৩২১৩; মুসলিম ৪৪/৪৩ হাঃ ২৪৮৬]


১৬১৮. উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন আয়েশা [রাদি.]-এর সম্মুখে হাস্‌সান [রাদি.]-কে তিরস্কার করিতে উদ্যত হলে, তিনি আমাকে বলিলেন, তাকে গালি দিও না। সে নাবী [সাঃআঃ]-এর তরফ হইতে কবিতার মাধ্যমে শত্রুর কথার আঘাত প্রতিহত করত।

[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ১৬ হাদীস নং ৩৫৩১; মুসলিম ৪৪/৪৩ হাঃ ২৪৮৯]


১৬১৯. মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়েশা [রাদি.]-এর নিকট গেলাম। তখন তাহাঁর কাছে হাস্‌সান ইবনি সাবিত [রাদি.] তাঁকে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করে শোনাচ্ছেন। তিনি আয়েশা [রাদি.]-এর প্রশংসায় বলছেন,

“তিনি সতী, ব্যক্তিত্বসম্পন্না ও জ্ঞানবতী, তাহাঁর প্রতি কোন সন্দেহই আরোপ করা যায় না।

তিনি অভুক্ত থাকেন, তবুও অনুপস্থিত লোকেদের গোশত খান না [অর্থাৎ গীবত করেন না]।

এ কথা শুনে আয়েশা [রাদি.] বলিলেন, কিন্তু আপনি তো এরূপ নন। মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন যে, আমি আয়েশা [রাদি.]-কে বললাম যে, আপনি কেন তাকে আপনার কাছে আসার অনুমতি দেন? অথচ আল্লাহ তাআলা বলছেন, “তাহাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে, তার জন্য আছে কঠিন শাস্তি।” আয়েশা [রাদি.] বলেন, অন্ধত্ব থেকে কঠিনতর শাস্তি আর কী হইতে পারে? তিনি তাঁকে আরো বলেন যে, হাস্‌সান ইবনি সাবিত [রাদি.] রাসূলাল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পক্ষাবলম্বন করে কাফিরদের সঙ্গে মুকাবালা করিতেন অথবা কাফিরদের বিপক্ষে নিন্দাপূর্ণ কবিতা রচনা করিতেন।

[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৩৫ হাদীস নং ৪১৪৬; মুসলিম ৪৪/৩৪, হাঃ ২৪৮৮]


১৬২০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হাসসান [রাদি.] কবিতার ছন্দে মুশরিকদের নিন্দা করিতে অনুমতি চাইলে নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, আমার বংশকে কিভাবে তুমি আলাদা করিবে? হাসসান [রাদি.] বলিলেন, আমি তাহাদের মধ্য হইতে এমনভাবে আপনাকে আলাদা করে নিব যেমনভাবে আটার খামির হইতে চুলকে আলাদা করে নেয়া হয়।

[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ১৬ হাদীস নং ৩৫৩১; মুসলিম ৪৪/৩৪ হাঃ ২৪৮৯]

Was this article helpful?

Related Articles