মৃতের উপর পরিবার-পরিজনের ক্রন্দনের কারণে আযাব হয়ে থাকে।

৫৩৪. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিজনদের কান্নার কারণে আযাব দেয়া হয়।

[বোখারী পর্ব ২৩ : /৩৪ হাঃ ১২৮৬, মুসলিম ১১/৯ হাঃ ৯২৭] জানাজা ও মৃতের জন্য করনীয় -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫৩৫. আবু মূসা আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন উমার [রাদি.] আহত হলেন, তখন সুহাইব [রাদি.] হায়! আমার ভাই! বলিতে লাগলেন। উমার [রাদি.] বলিলেন, তুমি কি অবহিত নও যে, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জীবিতদের কান্নার কারণে অবশ্যই মৃতদের আযাব দেয়া হয়?

[বোখারী পর্ব ২৩: /৩২ হাঃ ১২৯০, মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯২৭] জানাজা ও মৃতের জন্য করনীয় -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৫৩৬.আবদুল্লাহ্ ইবনি উবাইদুল্লাহ্ ইবনি আবু মুলাইকাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মাক্কাহয় উসমান [রাদি.]-এর জনৈকা কন্যার মৃত্যু হল। আমরা সেখানে [জানাযায়] অংশগ্রহণ করার জন্য গেলাম। ইবনি উমার এবং ইবনি আব্বাস [রাদি.]-ও সেখানে উপস্থিত হলেন। আমি তাঁদের দুজনের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলাম, অথবা তিনি বলেছেন, আমি তাঁদের একজনের পার্শ্বে গিয়ে উপবেশন করলাম, পরে অন্যজন আগমন করে আমার পার্শ্বে উপবেশন করিলেন। [ক্রন্দনের শব্দ শুনে] ইবনি উমার [রাদি.] আমর ইবনি উসমানকে বলিলেন, তুমি কেন ক্রন্দন করিতে নিষেধ করছ না? কেননা, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিজনদের কান্নার কারণে আযাব দেয়া হয়। তখন ইবনি আব্বাস[রাদি.]বলিলেন, উমার[রাদি.]ও এমন কিছু বলিতেন।

অতঃপর ইবনি আব্বাস[রাদি.]বর্ণনা করিলেন, উমার[রাদি.]-এর সাথে মাক্কাহ থেকে প্রত্যাবর্তন করছিলাম। আমরা বাইদা [নামক স্থানে] উপস্থিত হলে উমার[রাদি.]বাবলা বৃক্ষের ছায়ায় একটি কাফিলা দর্শন করতঃ আমাকে বলিলেন, গিয়ে দেখো এ কাফিলা কার? ইবনি আব্বাস[রাদি.]বলেন, আমি গিয়ে দেখলাম সেখানে সুহাইব [রাদি.]আছেন। আমি তাঁকে তা অবহিত করলাম। তিনি বলিলেন, তাঁকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো। আমি সুহাইব [রাদি.]-এর নিকটে আবার গেলাম এবং বললাম, চলুন, আমীরুল মুমিনীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করুন। অতঃপর যখন উমার[রাদি.][ঘাতকের আঘাতে] আহত হলেন, তখন সুহাইব [রাদি.]তাহাঁর কাছে আগমন করতঃ এ বলে ক্রন্দন করিতে লাগলেন, হায় আমার ভাই! হায় আমার বন্ধু! এতে উমার[রাদি.]তাঁকে বলিলেন, তুমি আমার জন্য ক্রন্দন করছো? অথচ আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির জন্য তার আপন জনের কোন কোন কান্নার কারণে অবশ্যই তাকে আযাব দেয়া হয়। [বোখারী পর্ব ২৩ : /৩৩ হাঃ ১২৯০, মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯২৭]

ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, উমার [রাদি.]-এর মৃত্যুর পর আয়িশাহ্ [রাদি.]-এর নিকট আমি উমার [রাদি.]-এর এ উক্তি উল্লেখ করলাম। তিনি বলিলেন, আল্লাহ্ উমার [রাদি.]-কে রহম করুন। আল্লাহ্‌র কসম! আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এ কথা বলেননি যে, আল্লাহ্ ঈমানদার [মৃত] ব্যক্তিকে তার পরিজনের কান্নার কারণে আযাব দিবেন। তবে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলা কাফিরদের আযাব বাড়িয়ে দেন তার পরিজনের কান্নার কারণে। অতঃপর আয়িশাহ্ [রাদি.] বলিলেন, [এ ব্যাপারে] আল্লাহ্‌র কুরআনই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। [ইরশাদ হয়েছে]: বোঝা বহনকারী কোন ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করিবে না- [আনআমঃ ১৬৪]। তখন ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহ্ই [বান্দাকে] হাসান এবং কাঁদান। arbi

রাবী ইবনি আবু মুলাইকাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আল্লাহ্‌র কসম! [এ কথা শুনে] ইবনি উমার [রাদি.] কোন মন্তব্য করিলেন না।

[বোখারী পর্ব ২৩ : /৩২ হাঃ ১২৮৬, ১২৮৭, ১২৮৮, মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯২৭, ৯২৮, ৯২৯] জানাজা ও মৃতের জন্য করনীয় -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৫৩৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

এ কথাটি ঐ কথাটিরই মত যা রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ঐ কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, যে কূপে বাদ্‌র যুদ্ধে নিহত মুশরিকদের নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তিনি তাহাদেরকে যা বলার বলিলেন [এবং জানালেন] যে, আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। তিনি বলিলেন, এখন তারা ভালভাবে জানতে পারছে যে, আমি তাহাদেরকে যা বলেছিলাম তা ছিল সঠিক। এরপর আয়েশা [রাদি.] ==

[তুমি তো মৃতকে শুনাতে পারবে না] [সূরাহ নামল ২৭/৮০]

[এবং তুমি শুনাতে সমর্থ হইবে না তাহাদেরকে যারা কবরে রয়েছে] [সূরাহ ফাতির ৩৫/২২]

আয়াতাংশ দুটো তিলাওয়াত করিলেন। উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এর মানে হচ্ছে জাহান্নামে যখন তারা তাহাদের আসন গ্রহণ করে নেবে। arbi

[বোখারী পর্ব ৬৪: /৮ হাঃ ৩৯৭৬-৩৯৭৯, মুসলিম ১১/৯ হাঃ ৯৩১ ] জানাজা ও মৃতের জন্য করনীয় -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৫৩৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এক ইয়াহুদী স্ত্রীলোকের [ক্ববরের] পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, যার পরিবারের লোকেরা তার জন্য ক্রন্দন করছিল। তখন তিনি বললেনঃ তারা তো তার জন্য ক্রন্দন করছে। অথচ তাকে ক্ববরে আযাব দেয়া হচ্ছে।

[বোখারী পর্ব ২৩ : /৩৪ হাঃ ১২৮৯, মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯৩২] জানাজা ও মৃতের জন্য করনীয় -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৫৩৯. মুগীরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]- কে বলিতে শুনিয়াছি, যে [মৃত] ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা হয়, তাকে বিলাপকৃত বিষয়ের উপর আযাব দেয়া হইবে।

[বোখারী পর্ব ২৩ : /৩৪ হাঃ ১২৯১, মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯৩২] জানাজা ও মৃতের জন্য করনীয় -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

 

Was this article helpful?

Related Articles