২৫৭. ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর বাণীঃ (لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ) এর ব্যাখ্যায় বলেন যে, জিবরীল (’আ.) যখন ওয়াহী নিয়ে আসতেন তখন রসূল তাঁর জিহ্বা ও ঠোঁট দু’টো দ্রুত নাড়তেন। এটা তাঁর জন্য কষ্টকর হত এবং তাঁর চেহারা দেখেই বোঝা যেত। তাই আল্লাহ্ তা’আলা (لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَهُ وَقُرْآنَهُ) ’’তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তোমার জিহবা সঞ্চালন করবে না; এ কুরআন সংরক্ষণ ও পাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমারই’’ নাযিল করলেন। এতে আল্লাহর ইরশাদ করেছেনঃ এ কুরআনকে আপনার বক্ষে সংরক্ষণ করা ও পড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমারই। সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর, অর্থাৎ আমি যখন ওয়াহী নাযিল করি তখন তুমি মনোযোগ সহকারে শ্রবণ কর। অতঃপর এর বিশদ ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই। অর্থাৎ তোমার মুখে তা বর্ণনা করার দায়িত্ব আমারই। রাবী বলেন, এরপর জিবরীল (’আ.) চলে গেলে আল্লাহর ও’য়াদা (ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ) মুতাবিক তিনি তা পাঠ করতেন।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৬৫: তাফসীর, অধ্যায় ৭৫, হাঃ ৪৯২৯; মুসলিম, পর্ব ৪ : সালাত, অধ্যায় ৩২, হাঃ ৪৪৮
২৫৮. ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত, মহান আল্লাহর বাণীঃ ’’ওয়াহী দ্রুত আয়ত্ত করার জন্য আপনি ওয়াহী নাযিল হওয়ার সময় আপনার জিহবা নাড়বেন না।’’ (সূরা কিয়ামাহঃ ১৬)-এর ব্যাখ্যায় ইবনু ’আব্বাস বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াহী অবতরণের সময় তা আয়ত্ত করতে বেশ চেষ্টা করতেন এবং প্রায়ই তিনি তাঁর উভয় ঠোঁট নড়াতেন।’ ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) বলেন, ’আমি তোমাকে দেখানোর জন্য ঠোঁট দুটি নাড়ছি যেভাবে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নড়াতেন।’ সা’ঈদ (রহ.) (তাঁর শিষ্যদের) বলেন, ’আমি ইবনু ’আব্বাস (রাযি.)-কে যেরূপে তাঁর ঠোঁট দুটি নড়াতে দেখেছি, সেভাবেই আমার ঠোঁট দুটি নড়াচ্ছি।’ এই বলে তিনি তাঁর ঠোঁট দুটি নড়ালেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’আলা অবতীর্ণ করলেনঃ ’’ওয়াহী দ্রুত আয়ত্ত করার জন্য আপনি ওয়াহী নাযিল হওয়ার সময় আপনার জিহবা নড়াবেন না।’’ (সূরা ক্বিয়ামাহঃ ১৬)
ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) বলেন, ’’এর অর্থ হলোঃ তোমার কলবে তা হেফাযত করা এবং তোমার দ্বারা তা পাঠ করানো। ’’সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন’’ (সূরা কিয়ামাহঃ ১৮)। ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) বলেন, অর্থাৎ মনোযোগ সহকারে শুন এবং চুপ থাক। ’’তারপর এর বিশদ বর্ণনার দায়িত্ব তো আমারই।’’ (সূরা কিয়ামাহঃ ১৯)।’ অর্থাৎ তুমি তা পাঠ করবে, এটাও আমার দায়িত্ব। তারপর যখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিবরীল (আ.) আসতেন, তখন তিনি মনোযোগ সহকারে কেবল শুনতেন। জিবরীল চলে গেলে তিনি যেমন পাঠ করেছিলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তদ্রূপ পাঠ করতেন।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ১: ওয়াহীর সূচনা, অধ্যায় ৪, হাঃ ৫; মুসলিম, পর্ব ৪ : সালাত, অধ্যায় ৩২, হাঃ ৪৪৮