বদর যুদ্ধের শহীদদের মর্যাদা এবং হাতিব বিন আবি বালতা (রা)-এর কাহিনী।

১৬২২. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আমাকে এবং যুবায়র ও মিকদাদ ইবনি আসওয়াদ [রাদি.]-কে পাঠিয়ে বলিলেন, তোমরা খাখ্ বাগানে যাও। সেখানে তোমরা এক মহিলাকে দেখিতে পাবে। তার নিকট একটি পত্র আছে, তোমরা তার কাছ থেকে তা নিয়ে আসবে। তখন আমরা রওনা দিলাম। আমাদের ঘোড়া আমাদের নিয়ে দ্রুত বেগে চলছিল। অবশেষে আমরা উক্ত খাখ্ নামক বাগানে পৌঁছে গেলাম এবং সেখানে আমরা মহিলাটিকে দেখিতে পেলাম। আমরা বললাম, পত্র বাহির কর। সে বলিল, আমার নিকট তো কোন পত্র নেই। আমরা বললাম, তুমি অবশ্যই পত্র বের করে দিবে, নচেৎ তোমার কাপড় খুলতে হইবে। তখন সে তার চুলের খোঁপা থেকে পত্রটি বের করে দিল। আমরা তখন সে পত্রটি নিয়ে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট হাজির হলাম। দেখা গেল, তা হাতিব ইবনি বালতাআ [রাদি.]-এর পক্ষ থেকে মাক্কাহর কয়েকজন মুশরিকের প্রতি লেখা হয়েছে। যাতে তাহাদেরকে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর কোন পদক্ষেপ সম্পর্কে সংবাদ দেয়া হয়েছে। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, হে হাতিব! এ কী ব্যাপার? তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আমার ব্যাপারে কোন তড়িত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। আসলে আমি কুরাইশ বংশোদ্ভূত নই। তবে তাহাদের সঙ্গে মিশে ছিলাম। আর যারা আপনার সঙ্গে মুহাজিরগণ রয়েছেন, তাহাদের সকলেরই মাক্কাহবাসীদের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। যার কারণে তাঁদের পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ নিরাপদ। তাই আমি চেয়েছি, যেহেতু আমার বংশগতভাবে এ সম্পর্ক নেই, কাজেই আমি তাহাদের প্রতি এমন কিছু অনুগ্রহ দেখাই, যদ্‌দ্বারা অন্তত তারা আমার আপনজনদের রক্ষা করিবে। আর আমি তা কুফরী কিংবা মুরতাদ হওয়ার উদ্দেশ্যে করিনি এবং কুফরীর প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কারণেও নয়। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, হাতিব তোমাদের নিকট সত্য কথা বলছে। তখন উমার [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এই মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেই। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, সে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তোমার হয়ত জানা নেই, আল্লাহ্ তাআলা বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারীদের ব্যাপারে অবহিত আছেন। তাই তাহাদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তোমার যা ইচ্ছে আমল কর। আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি।

[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৪১ হাদীস নং ৩০০৭; মুসলিম ৪৪/৩৬ হাঃ ২৪৯৪]

Was this article helpful?

Related Articles