পাপকর্ম ছাড়া আমীরের আনুগত্য করা ওয়াজিব ও পাপকর্মে আনুগত্য হারাম।

১২০৩. ইবনি আব্বাস হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন যে, [আরবী] আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে আবদুল্লাহ ইবনি হুযাফাহ ইবনি ক্বায়স ইবনি আদী সম্পর্কে যখন তাঁকে নাবী [সাঃআঃ] একটি সৈন্য দলের দলনায়ক করে প্রেরণ করেছিলেন।

[বোখারী পর্ব ৬৫ অধ্যায় ১১ হাদীস নং ৪৫৮৪, মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৪]


১২০৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করিল, সে আল্লাহ্‌রই আনুগত্য করিল। আর যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করিল, সে আল্লাহ্‌রই নাফরমানী করিল। এবং যে ব্যক্তি আমার [নির্বাচিত] আমীরের আনুগত্য করিল, সে আমারই আনুগত্য করিল। আর যে ব্যক্তি আমার [নির্বাচিত] আমীরের নাফরমানী করিল সে আমারই নাফরমানী করিল।

[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৭১৩৭; মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৫]


১২০৫. আবদুল্লাহ্ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্‌র নাফরমানীর নির্দেশ দেয়া না হয়, ততক্ষণ পছন্দনীয় ও অপছন্দনীয় সব বিষয়ে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য তার মান্যতা ও আনুগত্য করা কর্তব্য। যখন নাফরমানীর নির্দেশ দেয়া হয়, তখন আর কোন মান্যতা ও আনুগত্য নেই।

[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৭১৪৪; মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৯]


১২০৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] একটি ক্ষুদ্র সৈন্যদল প্রেরণ করিলেন এবং একজন আনসারী ব্যক্তিকে তাঁদের আমীর নিযুক্ত করে সেনাবাহিনীকে তার আনুগত্য করার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি [আমীর] তাহাদের উপর ক্ষুব্ধ হলেন এবং বললেনঃ নাবী [সাঃআঃ] কি তোমাদেরকে আমার আনুগত্য করার নির্দেশ দেননি? তাঁরা বলিলেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বলিলেন, আমি তোমাদের দৃঢ়ভাবে বলছি যে, তোমরা কাঠ সংগ্রহ করিবে এবং তাতে আগুন প্রজ্বলিত করিবে। এরপর তোমরা তাতে প্রবেশ করিবে। তারা কাঠ সংগ্রহ করিল এবং তাতে আগুন প্রজ্জ্বলিত করিল। এরপর যখন তারা প্রবেশ করিতে ইচ্ছে করিল, তখন একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল। তাঁদের কেউ কেউ বলিল, আগুন থেকে পরিত্রাণের জন্যই তো আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর অনুসরণ করেছি। তাহলে কি আমরা [অবশেষে] আগুনেই প্রবেশ করব? তাঁদের এসব কথোপকথনের মাঝে হঠাৎ আগুন নিভে যায়। আর তাহাঁর [আমীরের] ক্রোধও অবদমিত হয়ে পড়ে। এ ঘটনা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বর্ণনা করা হলে তিনি বললেনঃ যদি তারা তাতে প্রবেশ করত, তাহলে কোন দিন আর এত্থেকে বের হত না। জেনে রেখো! আনুগত্য কেবলমাত্র বিধিসঙ্গত কাজেই হয়ে থাকে।

[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৭১৪৫; মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৪০]


১২০৭. জুনাদাহ ইবনি আবু উমাইয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা উবাদাহ ইবনি সামিত [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি অসুস্থ ছিলেন। আমরা বললাম, আল্লাহ্ আপনাকে সুস্থ করে দিন। আপনি আমাদের এরূপ একটি হাদীস বর্ণনা করুন, যা আপনাকে উপকৃত করিবে এবং যা আপনি নাবী [সাঃআঃ] থেকে শুনেছেন। তিনি বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাদের আহ্বান করিলেন। আমরা তাহাঁর কাছে বাইআত করলাম।

এরপর তিনি [উবাদাহ] বলিলেন, আমাদের থেকে যে অঙ্গীকার তিনি গ্রহণ করেছিলেন তাতে ছিল যে, আমরা আমাদের সুখে-দুঃখে, বেদনায় ও আনন্দে এবং আমাদের উপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিলেও পূর্ণাঙ্গরূপে শোনা ও মানার উপর বাইআত করলাম। আরও [বাইআত করলাম] যে আমরা ক্ষমতা সংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হব না। কিন্তু যদি এমন স্পষ্ট কুফ্‌রী দেখ, তোমাদের নিকট আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে যে বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ বিদ্যমান, তবে ভিন্ন কথা।

[বোখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২ হাদীস নং ৭০৫৫-৭০৫৬; মুসলিম ২৯/৯, হাঃ ১৭০৯]

Was this article helpful?

Related Articles