নফল সলাত বা এ জাতীয় ইবাদাতের উপর মাতাপিতার প্রতি সদাচরণকে অগ্রাধিকার দেয়া।

১৬৫৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেন, তিনজন শিশু ছাড়া আর কেউ দোলনায় থেকে কথা বলেনি। বানী ইসরাঈলের এক ব্যক্তি যাকে জুরাইজ নামে ডাকা হতো। একদা ইবাদাতে রত থাকা অবস্থায় তার মা এসে তাকে ডাকল। সে ভাবল আমি কি তার ডাকে সাড়া দেব, না সলাত আদায় করিতে থাকব। তার মা বলিল, হে আল্লাহ্! ব্যভিচারিণীর মুখ না দেখা পর্যন্ত তুমি তাকে মৃত্যু দিও না। জুরাইজ তার ইবাদাত খানায় থাকত। একবার তার নিকট একটি নারী আসল। তার সঙ্গে কথা বলিল। কিন্তু জুরাইজ তা অস্বীকার করিল। অতঃপর নারীটি একজন রাখালের নিকট গেল এবং তাকে দিয়ে মনোবাসনা পূর্ণ করিল। পরে সে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করিল। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো। এটি কার থেকে? স্ত্রী লোকটি বলিল, জুরাইজ থেকে। লোকেরা তার নিকট আসল এবং তার ইবাদাতখানা ভেঙ্গে দিল। আর তাকে নীচে নামিয়ে আনল ও তাকে গালি গালাজ করিল। তখন জুরাইজ উযূ সেরে ইবাদাত করিল। অতঃপর নবজাত শিশুটির নিকট এসে তাকে জিজ্ঞেস করিল। হে শিশু! তোমার পিতা কে? সে জবাব দিল সেই রাখাল। তারা বলিল, আমরা আপনার ইবাদাতখানাটি সোনা দিয়ে তৈরি করে দিচ্ছি। সে বলিল, না। তবে মাটি দিয়ে।

বনী ইসরাঈলের একজন নারী তার শিশুকে দুধ পান করাচ্ছিল। তার কাছ দিয়ে একজন সুদর্শন পুরুষ আরোহী চলে গেল। নারীটি দুআ করিল, হে আল্লাহ্! আমার ছেলেটি তার মত বানাও। শিশুটি তখনই তার মায়ের স্তন ছেড়ে দিল এবং আরোহীটির দিকে মুখ ফিরালো। আর বলিল, হে আল্লাহ্! আমাকে তার মত কর না। অতঃপর মুখ ফিরিয়ে স্তন্য পান করিতে লাগল।

আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ]-কে দেখিতে পাচ্ছি তিনি আঙ্গুল চুষছেন।

অতঃপর সেই নারীটির পার্শ্ব দিয়ে একটি দাসী চলে গেল। নারীটি বলিল, হে আল্লাহ! আমার শিশুটিকে এর মত করো না। শিশুটি তাৎক্ষণিক তার মায়ের স্তন্য ছেড়ে দিল। আর বলিল, হে আল্লাহ্! আমাকে তার মত কর। তার মা বলিল, তা কেন? শিশুটি বলিল, সেই আরোহীটি ছিল যালিমদের একজন। আর এ দাসীটির ব্যাপারে লোকে বলেছে তুমি চুরি করেছ, যিনা করেছ। অথচ সে [দাসীটি] কিছুই করেনি।

[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৪৮ হাদীস নং ৩৪৩৬; মুসলিম পর্ব ৪৫ অধ্যায় ২ হাঃ ২৫৫০]

Was this article helpful?

Related Articles