চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তির মধ্যস্থতায় দূর্গের লোকেদের আত্মসমর্পণ করানো জায়িয।

১১৫৫. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন বনী কুরায়যার ইয়াহূদীরা সাদ ইবনি মাআয [রাদি.]-এর ফায়সালা মুতাবিক দুর্গ থেকে বেরিয়ে আসে, তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাঁকে ডেকে পাঠান। আর তিনি তখন ঘটনাস্থলের কাছেই ছিলেন। তখন সাদ একটি গাধার পিঠে আরোহণ করে আসলেন। যখন তিনি কাছে আসলেন, তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা তোমাদের নেতার প্রতি দণ্ডায়মান হও। তিনি এসে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট বসলেন। তখন তিনি তাঁকে বলিলেন, এরা তোমার ফায়সালায় রাজী হয়েছে। সাদ [রাদি.] বলেন, আমি এ রায় ঘোষণা করছি যে, তাহাদের মধ্য নিকট হইতে যারা যুদ্ধ করিতে পারে তাহাদেরকে হত্যা করা হইবে এবং নারী ও শিশুদের বন্দী করা হইবে। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি তাহাদের সম্পর্কে আল্লাহ্ তাআলার ফয়সালার মত ফয়সালাই করেছ।

বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৬৮ হাদীস নং ৩০৪৩; মুসলিম ৩২/২২ হাঃ ১৭৬৮


১১৫৬. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধে সাদ [রাদি.] আহত হয়েছিলেন। কুরাইশ গোত্রের হিব্বান ইবনি ইরকা নামক এক ব্যক্তি তাহাঁর উভয় বাহুর মধ্যবর্তী রগে তীর বিদ্ধ করেছিল। নিকট থেকে তার সেবা করার জন্য নাবী [সাঃআঃ] মাসজিদে নববীতে একটি তাঁবু তৈরি করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খন্দকের যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে যখন হাতিয়ার রেখে গোসল শেষ করিলেন তখন জিব্রীল [আ.] তাহাঁর মাথার ধূলাবালি ঝাড়তে ঝাড়তে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে হাজির হলেন এবং বলিলেন, আপনি হাতিয়ার রেখে দিয়েছেন, কিন্তু আল্লাহ্‌র কসম! আমি এখনো তা রেখে দেইনি। চলুন তাহাদের প্রতি। নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন কোথায়? তিনি বানী কুরাইযা গোত্রের প্রতি ইশারা করিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বনু কুরাইযার মহল্লায় এলেন। অবশেষে তারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ফয়সালা মান্য করে দুর্গ থেকে নিচে নেমে এল। কিন্তু তিনি ফয়সালার ভার সাদ [রাদি.]-এর উপর ন্যস্ত করিলেন। তখন সাদ [রাদি.] বলিলেন, তাহাদের ব্যাপারে আমি এই ফায়সালা দিচ্ছি যে, তাহাদের যোদ্ধাদেরকে হত্যা করা হইবে, নারী ও সন্তানদেরকে বন্দী করা হইবে এবং তাহাদের ধন-সম্পদ বণ্টন করা হইবে।

বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৩০ হাদীস নং ৪১২২; মুসলিম ৩২/২২, হাঃ ১৭৬৯] মুত্তাফাকুন আলাইহি PDF -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১১৫৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

সাদ [রাদি.] আল্লাহ্‌র কাছে দুআ করেছিলেন, হে আল্লাহ! আপনি তো জানেন, আপনার সন্তুষ্টির জন্য তাহাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার চেয়ে কোন কিছুই আমার কাছে অধিক প্রিয় নয়। যে সম্প্রদায় আপনার রসূল [সাঃআঃ]কে মিথ্যাচারী বলেছে এবং দেশ থেকে বের করে দিয়েছে, হে আল্লাহ! আমি মনে করি [খন্দক যুদ্ধের পর] আপনি তো আমাদের ও তাহাদের মধ্যে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন। যদি এখনো কুরাইশদের বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ বাকী থেকে থাকে তাহলে আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন, যাতে আমি আপনার রাস্তায় তাহাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করিতে পারি। আর যদি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়ে থাকেন তাহলে ক্ষত হইতে রক্ত প্রবাহিত করুন আর তাতেই আমার মৃত্যু দিন। এরপর তাহাঁর ক্ষত থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে তা প্রবাহিত হইতে লাগল। মসজিদে বানী গিফার গোত্রের একটি তাঁবু ছিল। তাহাদের দিকে রক্ত প্রবাহিত হইতে দেখে তারা বলিলেন, হে তাঁবুবাসীগণ! আপনাদের দিক থেকে এসব কী আমাদের দিকে আসছে? পরে তাঁরা জানলেন যে, সাদ [রাদি.] -এর ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ যখমের কারণেই তিনি মারা যান, আল্লাহ তাহাঁর উপর সন্তুষ্ট থাকুন।

বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৩০ হাদীস নং ৪১২২; মুসলিম ৩২/২২, হাঃ ১৭৬৯

Was this article helpful?

Related Articles