উম্মুল মুমিনীন খাদীজাহ (রা)-এর মর্যাদা।

১৫৭৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি যে, সমগ্র নারীদের মধ্যে ইমরানের কন্যা মারইয়াম হলেন সর্বোত্তম আর নারীদের সেরা হলেন খাদীজাহ [রাদি.]।

[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৪৫ হাদীস নং ৩৪৩২; মুসলিম ৪৪/১২ হাঃ ২৪৩০]


১৫৭৪. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, পুরুষের মধ্যে অনেকেই পূর্ণতা অর্জন করিয়াছেন। কিন্তু মহিলাদের মধ্যে ফিরআউনের স্ত্রী আসিয়া এবং ইমরানের কন্যা মারইয়াম ব্যতীত আর কেউ পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়নি। তবে আয়িশাহ্র মর্যাদা সব মহিলার উপর এমন, যেমন সারীদের [গোশতের সুরুয়ায় ভিজা রুটির] মর্যাদা সকল প্রকার খাদ্যের উপর।

[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৩২ হাদীস নং ৩৪১১; মুসলিম ৪৪/১২ হাঃ ২৪৩১]


১৫৭৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, জিব্‌রাঈল [আ.] নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হাযির হয়ে বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ]! ঐ যে খাদীজাহ [রাদি.] একটি পাত্র হাতে নিয়ে আসছেন। ঐ পাত্রে তরকারী, অথবা খাদ্যদ্রব্য অথবা পানীয় ছিল। যখন তিনি পৌঁছে যাবেন তখন তাঁকে তাহাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হইতে এবং আমার পক্ষ থেকেও সালাম জানাবেন আর তাঁকে জান্নাতের এমন একটি ভবনের খোশ খবর দিবেন যার অভ্যন্তর ভাগ ফাঁকা-মোতি দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে থাকিবে না কোন প্রকার শোরগোল; কোন প্রকার দুঃখ-ক্লেশ।

[বোখারী পর্ব ৬৩ অধ্যায় ২০ হাদীস নং ৩৮২০; মুসলিম ৪৪/১২, হাঃ নং ২৪৩২]


১৫৭৬. ইসমাঈল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি আবু আউফা [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, নাবী [সাঃআঃ] খাদীজাহ [রাদি.]-কে জান্নাতের খোশ খবর দিয়েছিলেন কি? তিনি বলিলেন, হাঁ। এমন একটি ভবনের খোশ খবর দিয়েছিলেন, যে ভবনটি তৈরি করা হয়েছে এমন মোতী দ্বারা যার ভিতরদেশ ফাঁকা। আর সেখানে থাকিবে না শোরগোল, কোন প্রকার ক্লেশ ও দুঃখ

। [বোখারী পর্ব ৬৩ অধ্যায় ২০ হাদীস নং ৩৮১৯; মুসলিম ৪৪/১২ হাঃ ২৪৩২]


১৫৭৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর অন্য কোন স্ত্রীর প্রতি এতটুকু ঈর্ষা করিনি যতটুকু খাদীজাহ [রাদি.]-এর প্রতি করেছি। অথচ আমি তাঁকে দেখিনি। কিন্তু নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর কথা বেশি সময় আলোচনা করিতেন। কোন কোন সময় বকরী যবহ করে গোশতের পরিমাণ বিবেচনায় হাঁড়-মাংসকে ছোট ছোট টুকরা করে হলেও খাদীজাহ [রাদি.]-এর বান্ধবীদের ঘরে পৌঁছে দিতেন। আমি কোন সময় ঈর্ষা ভরে নাবী [সাঃআঃ]-কে বলতাম, মনে হয়, খাদীজাহ [রাদি.] ছাড়া দুনিয়াতে যেন আর কোন নারী নাই। উত্তরে তিনি [সাঃআঃ] বলিতেন, হাঁ। তিনি এমন ছিলেন, এমন ছিলেন, তাহাঁর গর্ভে আমার সন্তানাদি জন্মেছিল।

[বোখারী পর্ব ৬৩ অধ্যায় ২০ হাদীস নং ৩৮১৮; মুসলিম ৪৪/১২, হাঃ নং ২৪৩৫]


১৫৭৮. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ খাদীজাহ্র বোন হালা বিনতে খুয়াইলিদ [একদিন] রাসূলাল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য অনুমতি চাইলেন। [দুবোনের গলার স্বর ও অনুমতি চাওয়ার ভঙ্গি একই রকম ছিল বলে] নাবী [সাঃআঃ] খাদীজাহ্র অনুমতি চাওয়ার কথা মনে করে হতচকিত হয়ে পড়েন। তারপর [প্রকৃতিস্থ হয়ে] তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! এতো দেখছি হালা! আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেনঃ এতে আমার ভারী ঈর্ষা হলো। আমি বললাম, কুরাইশদের বুড়ীদের মধ্য থেকে এমন এক বুড়ীর কথা আপনি আলোচনা করেন যার দাঁতের মাড়ির লাল বর্ণটাই শুধু বাকি রয়ে গিয়েছিল, যে শেষ হয়ে গেছেও কত কাল আগে। তার পরিবর্তে আল্লাহ তো আপনাকে তার চেয়েও উত্তম উত্তম স্ত্রী দান করিয়াছেন।* {আয়িশাহ্‌ [রাদি.]-এর কথার জবাবে নাবী [সাঃআঃ] কী বলেছেন তা উল্লেখ সহীহুল বোখারীতে নেই। তবে হাদীস সংকলক আহ্‌মাদ ও তারবানী এ প্রসঙ্গে বর্ণনা করিয়াছেন যে, আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ এতে নাবী [সাঃআঃ] ক্রুদ্ধ হন। অবশেষে আমি বললামঃ যিনি আপনাকে সত্যের বাহকরূপে পাঠিয়েছেন তাহাঁর কসম, ভবিষ্যতে আমি তাহাঁর[খাদীজাহ্র] সম্পর্কে উত্তম মন্তব্য ছাড়া অন্য কোনরূপ মন্তব্য করবো না

। [বোখারী পর্ব ৬৩ অধ্যায় ২০ হাদীস নং ৩৮২১; মুসলিম ৪৪/১২, হাঃ নং ২৪৩৭]

Was this article helpful?

Related Articles