ইশার সলাতের সময় এবং তা বিলম্ব করা।

৩৭২. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক রাতে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ইশার সলাত আদায় করিতে বিলম্ব করিলেন। এ হলো ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রসারের পূর্বের কথা। [সালাতের জন্য] তিনি বেরিয়ে আসেননি, এমন কি উমার [রাদি.] বলিলেন, মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। অতঃপর তিনি বেরিয়ে এলেন এবং মাসজিদের লোকদের লক্ষ্য করে বললেনঃ “তোমরা ব্যতীত যমীনের অধিবাসীদের কেউ ইশার সলাতের জন্য অপেক্ষায় নেই। [

বোখারী পর্ব ৯ : /২২ হাঃ ৫৬৬, মুসলিম ৫/৩৯, হাঃ ৬৩৮] নামাজের স্থান-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৩৭৩. আব্দুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

এক রাতে কর্মব্যস্ততার কারণে আল্লাহর রসূল ইশার সলাত আদায়ে দেরী করিলেন, এমন কি আমরা মাসজিদে ঘুমিয়ে পড়লাম। অতঃপর জেগে উঠে পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লাম। অতঃপর পুনরায় জেগে উঠলাম। তখন আল্লাহর রসূল আমাদের নিকট বেরিয়ে এলেন, অতঃপর বলিলেন, তোমরা ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ এ সলাতের অপেক্ষা করছে না।

[বোখারী পর্ব ৯ : /২৪ হাঃ ৫৭০, মুসলিম ৫/৩৯, হাঃ ৬৩৯] নামাজের স্থান-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৩৭৪. হুমাইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনাস [রাদি.]-এর নিকট জিজ্ঞেস করা হয় যে, নাবী [সাঃআঃ] আংটি পরেছেন কিনা? তিনি বললেনঃ নাবী [সাঃআঃ] এক রাতে এশার সলাত আদায়ে অর্ধরাত পর্যন্ত দেরী করেন। এরপর তিনি আমাদের মাঝে আসেন। আমি যেন তাহাঁর আংটির চমক দেখিতে লাগলাম। তিনি বললেনঃ লোকজন সলাত আদায় করে শুয়ে পড়েছে। আর যতক্ষণ থেকে তোমরা সলাতের অপেক্ষায় রয়েছ, ততক্ষণ তোমরা সলাতের মধ্যেই রয়েছ।

[বোখারী পর্ব ৭৭ : /৪৮ হাঃ ৫৮৬৯, মুসলিম ৫/৩৯, হাঃ ৬৪০] নামাজের স্থান-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৩৭৫. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ও আমার সাথিরা-যারা [আবিসিনিয়া হইতে] জাহাজ মারফত আমার সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন, বাকীয়ে বুতহানের একটা মুক্ত এলাকায় বসবাসরত ছিলাম। তখন নাবী [সাঃআঃ] থাকতেন মাদীনায়। বুতহানের অধিবাসীরা পালাক্রমে একদল করে প্রতি রাতে ইশার সলাতের সময় আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর খিদমতে আসতেন। পালাক্রমে ইশার সলাতের সময় আমি ও আমার কতিপয় সঙ্গী নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে হাযির হলাম। তখন তিনি কোনো কাজে খুব ব্যস্ত ছিলেন, ফলে সলাত আদায়ে বিলম্ব করিলেন। এমন কি রাত অর্ধেক হয়ে গেলো। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] বেরিয়ে এলেন এবং সবাইকে নিয়ে সলাত আদায় করিলেন। সলাত শেষে তিনি উপস্থিত ব্যক্তিদেরকে বললেনঃ প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্থানে বসে যাও। তোমাদের সুসংবাদ দিচ্ছি যে, আল্লাহ্‌র পক্ষ হইতে তোমাদের জন্য এটি এক নিয়ামত যে, তোমরা ব্যতীত মানুষের মধ্যে কেউ এ মুহূর্তে সলাত আদায় করছে না। কিংবা তিনি বলেছিলেনঃ তোমরা ব্যতীত কোনো উম্মাত এ সময় সলাত আদায় করেনি। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] কোন্ বাক্যটি বলেছিলেন বর্ণনাকারী তা নিশ্চিত করে বলিতে পারেননি। আবু মূসা [রাদি.] বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর এ কথা শুনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত মনে বাড়ি ফিরলাম।

[বোখারী পর্ব ৯ : /২২ হাঃ ৫৬৭, মুসলিম ৫/৩৯, হাঃ ৬৪১] নামাজের স্থান-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


৩৭৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক রাতে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ইশার সলাত আদায় করিতে দেরী করেছিলেন, এমন কি লোকজন একবার ঘুমিয়ে জেগে উঠল, আবার ঘুমিয়ে পড়ে জাগ্রত হলো। তখন উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] উঠে গিয়ে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে বলিলেন, আস-সালাত। অতঃপর আল্লাহ্‌র নাবী [সাঃআঃ] বেরিয়ে এলেন- যেন এখনো আমি তাঁকে দেখছি, তাহাঁর মাথা হইতে পানি টপ্‌কে পড়ছিলো এবং তাহাঁর হাত মাথার উপর ছিলো। তিনি এসে বললেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হইবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাহাদেরকে এভাবে [বিলম্ব করে] ইশার সলাত আদায় করার নির্দেশ দিতাম। ইবনি জুরাইজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] [অত্র হাদীসের এক রাবী] বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর বর্ণনা অনুযায়ী আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যে মাথায় হাত রেখেছিলেন তা কিভাবে রেখেছিলেন, বিষয়টি সুস্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করার জন্য আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে বললাম। আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর আঙ্গুলগুলো সামান্য ফাঁক করিলেন, অতঃপর সেগুলোর অগ্রভাগ সম্মুখ দিক হইতে [চুলের অভ্যন্তরে] প্রবেশ করালেন। অতঃপর আঙ্গুলগুলো একত্রিত করে মাথার উপর দিয়ে এভাবে টেনে নিলেন যে, তার বৃদ্ধাঙ্গুল কানের সে পার্শ্বকে স্পর্শ করে গেলো যা মুখমণ্ডল সংলগ্ন চোয়ালের হাড্ডির উপর শ্মশ্রুর পাশে অবস্থিত। তিনি [নাবী [সাঃআঃ]] চুলের পানি ঝরাতে কিংবা চুল চাপড়াতে এরূপই করিতেন। এবং তিনি বলেছিলেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হইবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাহাদেরকে এভাবেই [বিলম্ব করে] সলাত আদায় করার নির্দেশ দিতাম।

[বোখারী পর্ব ৯ : /২৪ হাঃ ৫৭১, মুসলিম ৫/৩৯, হাঃ ৬৩৯] নামাজের স্থান-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

Was this article helpful?

Related Articles