ইফক বা অপবাদ ও অপবাদ দানকারীদের তাওবা কবূল হওয়ার হাদীস।

১৭৬৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

যখন অপবাদ রটনাকারীগণ তাহাঁর প্রতি অপবাদ রটিয়েছিল।

আয়েশা [রাদি.] বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সফরে যেতে ইচ্ছে করিতেন তখন তিনি তাহাঁর স্ত্রীগণের [নির্বাচনের জন্য] কোরা ব্যবহার করিতেন। এতে যার নাম উঠত তাকেই তিনি সঙ্গে নিয়ে সফরে যেতেন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, এমনি এক যুদ্ধে তিনি আমাদের মাঝে কোরা ব্যবহার করেন, এতে আমার নাম উঠে আসে। তাই আমিই রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সফরে গেলাম। এ ঘটনাটি পর্দার হুকুম নাযিলের পর ঘটেছিল। তখন আমাকে হাওদাজসহ সাওয়ারীতে উঠানো ও নামানো হত। এমনিভাবে আমরা চলতে থাকলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন এ যুদ্ধ থেকে নিষ্ক্রান্ত হলেন, তখন তিনি [গৃহাভিমুখে] প্রত্যাবর্তন করিলেন। ফেরার পথে আমরা মাদীনাহর নিকটবর্তী হলে তিনি একদিন রাতের বেলা রওয়ানা হওয়ার জন্য আদেশ করিলেন। রওয়ানা হওয়ার ঘোষণা দেয়া হলে আমি উঠলাম এবং [প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য] পায়ে হেঁটে সেনাছাউনী পেরিয়ে [সামনে] গেলাম। অতঃপর প্রয়োজন সেরে আমি আমার সাওয়ারীর কাছে ফিরে এসে বুকে হাত দিয়ে দেখলাম যে, [ইয়ামানের অন্তর্গত] যিফার শহরের পুতি দ্বারা তৈরি করা আমার গলার হারটি ছিঁড়ে কোথায় পড়ে গেছে। তাই আমি ফিরে গিয়ে আমার হারটি খোঁজ করিতে লাগলাম। হার খুঁজতে খুঁজতে আমার আসতে দেরী হয়ে যায়। আয়েশা [রাদি.] বলেন, যে সমস্ত লোক উটের পিঠে আমাকে উঠিয়ে দিতেন তারা এসে আমার হাওদাজ উঠিয়ে তা আমার উটের পিঠে তুলে দিলেন, যার উপর আমি আরোহণ করতাম। তারা ভেবেছিলেন, আমি ওর মধ্যেই আছি, কারণ খাদ্যাভাবে মহিলারা তখন খুবই হালকা হয়ে গিয়েছিল এবং তাহাদের দেহ মাংসল ছিল না। তাঁরা খুবই স্বল্প পরিমাণ খানা খেতে পেত। তাই তারা যখন হাওদাজ উঠিয়ে উপরে রাখেন তখন তা হালকা বিষয়টিকে কোন প্রকার অস্বাভাবিক মনে করেননি। অধিকন্তু আমি ছিলাম একজন অল্প বয়স্কা কিশোরী। এরপর তারা উট হাঁকিয়ে নিয়ে চলে যায়। সৈন্যদল চলে যাওয়ার পর আমি আমার হারটি খুঁজে পাই এবং নিজ জায়গায় ফিরে এসে দেখি তাঁদের [সৈন্যদের] কোন আহ্বানকারী এবং কোন জওয়াব দাতা সেখানে নেই। তখন আমি আগে যেখানে ছিলাম সেখানে বসে রইলাম। ভাবলাম, তাঁরা আমাকে দেখিতে না পেয়ে অবশ্যই আমার কাছে ফিরে আসবে। ঐ স্থানে বসে থাকা অবস্থায় ঘুম চেপে ধরলে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। বানূ সুলামী গোত্রের যাকওয়ান শাখার সাফওয়ান ইবনি মুআত্তাল [রাদি.] {যাকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফেলে যাওয়া আসবাবপত্র সংগ্রহের জন্য পশ্চাতে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন} সৈন্যদল চলে যাওয়ার পর সেখানে ছিলেন। তিনি সকালে আমার অবস্থানস্থলের কাছে এসে একজন ঘুমন্ত মানুষ দেখে আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে চিনে ফেললেন। পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে তিনি আমাকে দেখেছিলেন। তিনি আমাকে চিনতে পেরে ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়লে আমি তা শুনে জেগে উঠলাম এবং চাদর টেনে আমার চেহারা ঢেকে ফেললাম। আল্লাহ্‌র কসম! আমি কোন কথা বলিনি এবং তাহাঁর থেকে ইন্না লিল্লাহ…….. পাঠ ব্যতীত অন্য কোন কথাই শুনতে পাইনি। এরপর তিনি সওয়ারী থেকে নামলেন এবং সওয়ারীকে বসিয়ে তার সামনের পা নিচু করে দিলে আমি গিয়ে তাতে উঠে পড়লাম। পরে তিনি আমাকেসহ সওয়ারীকে টেনে আগে আগে চললেন, অতঃপর ঠিক দুপুরে প্রচণ্ড গরমের সময় আমরা গিয়ে সেনাদলের সঙ্গে মিলিত হলাম। সে সময় তাঁরা একটি জায়গায় অবতরণ করেছিলেন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, এরপর যাদের ধ্বংস হওয়ার ছিল তারা [আমার উপর অপবাদ দিয়ে] ধ্বংস হয়ে গেল। তাহাদের মধ্যে এ অপবাদ দেয়ার ব্যাপারে যে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল সে হচ্ছে আবদুল্লাহ ইবনি উবাই ইবনি সুলূল।

বর্ণনাকারী উরওয়াহ [রাদি.] বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, তার [আবদুল্লাহ ইবনি উবাই ইবনি সুলূল] সামনে অপবাদের কথাগুলো প্রচার করা হত এবং আলোচনা করা হত আর অমনি সে এগুলোকে বিশ্বাস করত, খুব ভাল করে শুনত আর শোনা কথার ভিত্তিতেই ব্যাপারটিকে প্রমাণ করার চেষ্টা করত। উরওয়াহ [রাদি.] আরো বর্ণনা করিয়াছেন যে, অপবাদ আরোপকারী ব্যক্তিদের মধ্যে হা্সসান ইবনি সাবিত, মিসতাহ ইবনি উসাসা এবং হামনা বিনত জাহাশ [রাদি.] ব্যতীত আর কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তারা কয়েকজন লোকের একটি দল ছিল, এটুকু ব্যতীত তাহাদের ব্যাপারে আমার আর কিছু জানা নেই। যেমন [আল-কুরআনে] মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ এ ব্যাপারে যে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিল তাকে আবদুল্লাহ ইবনি উবাই বিন সুলূল বলে ডাকা হয়ে থাকে। বর্ণনাকারী উরওয়াহ [রাদি.] বলেন, আয়েশা [রাদি.] এ ব্যাপারে হাসসান ইবনি সাবিত [রাদি.]-কে গালমন্দ করাকে পছন্দ করিতেন না। তিনি বলিতেন, হাসসান ইবনি সাবিত [রাদি.] তো সেই লোক যিনি তার এক কবিতায় বলেছেন,

আমার মান সম্মান এবং আমার বাপ দাদা মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর মান সম্মান রক্ষায় নিবেদিত।

আয়েশা [রাদি.] বলেন, অতঃপর আমরা মাদীনায় আসলাম। মাদীনায় এসে এক মাস পর্যন্ত আমি অসুস্থ থাকলাম। এদিকে অপবাদ রটনাকারীদের কথা নিয়ে লোকেদের মধ্যে আলোচনা ও চর্চা হইতে থাকল। কিন্তু এগুলোর কিছুই আমি জানি না। তবে আমি সন্দেহ করছিলাম এবং তা আরো দৃঢ় হচ্ছিল আমার এ অসুখের সময়। কেননা এর আগে আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে যে রকম স্নেহ-ভালবাসা পেতাম আমার এ অসুখের সময় তা আমি পাচ্ছিলাম না। তিনি আমার কাছে এসে সালাম করে কেবল “তুমি কেমন আছ” জিজ্ঞেস করে চলে যেতেন। তাহাঁর এ আচরণই আমার মনে ভীষণ সন্দেহ জাগিয়ে তোলে। তবে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাইরে বের হওয়ার আগে পর্যন্ত এ জঘন্য অপবাদের ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। উম্মে মিসতাহ [রাদি.] [মিসতাহর মা] একদা আমার সঙ্গে পায়খানার দিকে বের হন। আর প্রকৃতির ডাকে আমাদের বের হওয়ার অবস্থা এই ছিল যে, এক রাতে বের হলে আমরা আবার পরের রাতে বের হতাম। এটা ছিল আমাদের ঘরের পাশে পায়খানা তৈরি করার আগের ঘটনা। আমাদের অবস্থা প্রাচীন আরবের লোকদের অবস্থার মতো ছিল। তাহাদের মতো আমরাও পায়খানা করার জন্য ঝোপঝাড়ে চলে যেতাম। এমনকি [অভ্যাস না থাকায়] বাড়ির পার্শ্বে পায়খানা তৈরি করলে আমরা খুব কষ্ট পেতাম। আয়েশা [রাদি.] বলেন, একদা আমি এবং উম্মে মিসতাহ “যিনি ছিলেন আবু রূহম ইবনি মুত্তালিব ইবনি আবদে মানাফির কন্যা, যার মা সাখার ইবনি আমির-এর কন্যা ও আবু বকর সিদ্দীকের খালা এবং মিসতাহ ইবনি উসাসা ইবনি আব্বাদ ইবনি মুত্তালিব যার পুত্র” একত্রে বের হলাম। আমরা আমাদের কাজ থেকে নিস্ক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফেরার পথে উম্মে মিসতাহ তার কাপড়ে জড়িয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে বলিলেন, মিসতাহ ধ্বংস হোক। আমি তাকে বললাম, আপনি খুব খারাপ কথা বলছেন। আপনি কি বদর যুদ্ধে যোগদানকারী ব্যক্তিকে গালি দিচ্ছেন? তিনি আমাকে বলিলেন, ওগো অবলা, সে তোমার সম্বন্ধে কী কথা বলে বেড়াচ্ছে তুমি তো তা শোননি। আয়েশা [রাদি.] বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, সে আমার সম্পর্কে কী বলছে? তখন তিনি অপবাদ রটনাকারীদের কথাবার্তা সম্পর্কে আমাকে জানালেন। আয়েশা [রাদি.] বর্ণনা করেন, এরপর আমার পুরনো রোগ আরো বেড়ে গেল। আমি বাড়ি ফেরার পর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার কাছে আসলেন এবং সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কেমন আছ? আয়েশা [রাদি.] বলেন, আমি আমার পিতা-মাতার কাছে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক খবর জানতে চাচ্ছিলাম, তাই আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বললাম, আপনি কি আমাকে আমার পিতা-মাতার কাছে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেবেন? আয়েশা [রাদি.] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে অনুমতি দিলেন। তখন আমি আমার আম্মাকে বললাম, আম্মাজান, লোকজন কী আলোচনা করছে? তিনি বলিলেন, বেটী, এ ব্যাপারটিকে হালকা করে ফেল। আল্লাহ্‌র কসম! সতীন আছে এমন স্বামীর সোহাগ লাভে ধন্যা সুন্দরী রমণীকে তাহাঁর সতীনরা বদনাম করিবে না, এমন খুব কমই হয়। আয়েশা [রাদি.] বলেন, আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম, সুবহানাল্লাহ। লোকজন কি এমন গুজবই রটিয়েছে। আয়েশা [রাদি.] বর্ণনা করেন, সারারাত আমি কাঁদলাম। কাঁদতে কাঁদতে সকাল হয়ে গেল। এর মধ্যে আমার চোখের পানিও বন্ধ হল না এবং আমি ঘুমাতেও পারলাম না রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার স্ত্রীর [আমার] বিচ্ছেদের বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ ও আলোচনা করার নিমিত্তে আলী ইবনি আবু ত্বলিব এবং উসামাহ ইবনি যায়দ [রাদি.]-কে ডেকে পাঠালেন।

তিনি {আয়েশা [রাদি.]} বলেন, উসামাহ [রাদি.] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর স্ত্রীদের পবিত্রতা এবং তাহাদের প্রতি {নাবী [সাঃআঃ]-এর} ভালবাসার কারণে বলিলেন, তাঁরা আপনার স্ত্রী, তাহাদের সম্পর্কে আমি ভাল ব্যতীত আর কিছুই জানি না। আর আলী [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! আল্লাহ তো আপনার জন্য সংকীর্ণতা রাখেননি। তিনি ব্যতীত আরো বহু মহিলা আছে। অবশ্য আপনি এ ব্যাপারে দাসী {বারীরাহ [রাদি.]}-কে জিজ্ঞেস করুন। সে আপনার কাছে সত্য কথাই বলবে। আয়েশা [রাদি.] বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বারীরাহ [রাদি.]-কে ডেকে বলিলেন, হে বারীরাহ! তুমি তাহাঁর মধ্যে কোন সন্দেহপূর্ণ আচরণ দেখেছ কি? বারীরাহ [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, সে আল্লাহ্‌র শপথ যিনি আপনাকে সত্য বিধানসহ পাঠিয়েছেন, আমি তার মধ্যে কখনো এমন কিছু দেখিনি যার দ্বারা তাঁকে দোষী বলা যায়। তবে তাহাঁর সম্পর্কে কেবল এটুকু বলা যায় যে, তিনি হলেন অল্প বয়স্কা কিশোরী, রুটি তৈরী করার জন্য আটা খামির করে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। আর বাক্রী এসে অমনি তা খেয়ে ফেলে।

তিনি {আয়েশা [রাদি.]} বলেন, সেদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সঙ্গে সঙ্গে উঠে গিয়ে মিম্বরে বসে আবদুল্লাহ ইবনি উবাই-এর ক্ষতি থেকে রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলিলেন, হে মুসলিম সম্প্রদায়! যে আমার স্ত্রীর ব্যাপারে অপবাদ রটিয়ে আমাকে কষ্ট দিয়েছে তার এ অপবাদ থেকে আমাকে কে মুক্ত করিবে? আল্লাহ্‌র কসম! আমি আমার স্ত্রী সম্পর্কে ভাল ব্যতীত আর কিছুই জানি না। আর তাঁরা এক ব্যক্তির [সাফওয়ান ইবনি মুআত্তাল] নাম উল্লেখ করছে যার ব্যাপারেও আমি ভাল ব্যতীত কিছু জানি না। সে তো আমার সঙ্গেই আমার ঘরে যায়। আয়েশা [রাদি.] বলেন, বানী আবদুল আশহাল গোত্রের সাদ [ইবনি মুআয] [রাদি.] উঠে বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ]! আমি আপনাকে এ অপবাদ থেকে মুক্তি দেব। সে যদি আউস গোত্রের লোক হয় তাহলে তার শিরশ্চেদ করব। আর যদি সে আমাদের ভাই খাযরাজের লোক হয় তাহলে তার ব্যাপারে আপনি যা বলবেন তাই করব। আয়েশা [রাদি.] বলেন, এ সময় হাসসান ইবনি সাবিত [রাদি.]-এর মায়ের চাচাতো ভাই খাযরাজ গোত্রের নেতা সাদ ইবনি উবাদা [রাদি.] দাঁড়িয়ে এ কথার প্রতিবাদ করিলেন। আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ এ ঘটনার আগে তিনি একজন সৎ ও নেককার লোক ছিলেন। গোত্রীয় অহঙ্কারে উত্তেজিত হয়ে তিনি সাদ ইবনি মুআয [রাদি.]-কে বলিলেন, তুমি মিথ্যা কথা বলছ। আল্লাহ্‌র কসম! তুমি তাকে হত্যা করিতে পারবে না এবং তাকে হত্যা করার ক্ষমতাও তোমার নেই। সে তোমার গোত্রের লোক হলে তুমি তার নিহত হওয়া কখনো পছন্দ করিতে না। তখন সাদ ইবন মুআয [রাদি.]-এর চাচাতো ভাই উসাইদ ইবনি হুযাইর [রাদি.] সাদ ইবনি উবাদাহ [রাদি.]-কে বলিলেন, বরং তুমিই মিথ্যা বলছ। আল্লাহ্‌র কসম! আমরা অবশ্যই তাকে হত্যা করব। তুমি হলে মুনাফিক। তাই মুনাফিকদের পক্ষ নিয়ে কথাবার্তা বলছ।

তিনি {আয়েশা [রাদি.]} বলেন, এ সময় আউস ও খাযরাজ উভয় গোত্র খুব উত্তেজিত হয়ে যায়। এমনকি তারা যুদ্ধের সংকল্প করে বসে। এ সময় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিম্বরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের শান্ত করিলেন এবং নিজেও চুপ হয়ে গেলেন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, আমি সেদিন সারাক্ষণ কেঁদে কাটালাম। চোখের ধারা আমার বন্ধ হয়নি এবং একটু ঘুমও হয়নি। তিনি বলেন, আমি কান্না করছিলাম আর আমার পিতা-মাতা আমার পার্শ্বে উপবিষ্ট ছিলেন। এমনি করে একদিন দুরাত কেঁদে কেঁদে কাটিয়ে দিলাম। এর মধ্যে আমার একটুও ঘুম হয়নি। বরং অনবরত আমার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে থাকে। মনে হচ্ছিল যেন কান্নার কারণে আমার কলিজা ফেটে যাবে। আমি ক্রন্দনরত ছিলাম আর আমার আব্বা-আম্মা আমার পাশে উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় একজন আনসারী মহিলা আমার কাছে আসার অনুমতি চাইলে আমি তাকে আসার অনুমতি দিলাম। সে এসে বসল এবং আমার সঙ্গে কাঁদতে আরম্ভ করিল। তিনি বলেন, আমরা কান্না করছিলাম এই মুহূর্তে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের কাছে এসে সালাম করিলেন এবং আমাদের পাশে বসে গেলেন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, অপবাদ রটানোর পর আমার পার্শ্বে এসে এভাবে তিনি আর বসেননি। এদিকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একমাস কাল অপেক্ষা করার পরও আমার ব্যাপারে তাহাঁর নিকট কোন ওয়াহী আসেনি। আয়েশা [রাদি.] বলেন, বসার পর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কালিমা শাহাদাত পড়লেন। এরপর বলিলেন, আয়েশা তোমার ব্যাপারে আমার কাছে অনেক কথাই পৌঁছেছে, যদি তুমি এর থেকে পবিত্র হও তাহলে শীঘ্রই আল্লাহ তোমাকে এ অপবাদ থেকে মুক্ত করবেন। আর যদি তুমি কোন গুনাহ করে থাক তাহলে আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তওবা কর। কেননা বান্দা গুনাহ স্বীকার করে তওবা করলে আল্লাহ তাআলা তওবা কবূল করেন।

তিনি {আয়েশা [রাদি.]} বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কথা শেষ করলে আমার অশ্রুধারা বন্ধ হয়ে যায়। এক ফোঁটা অশ্রুও আমি আর বের করিতে পারলাম না। তখন আমি আমার আব্বাকে বললাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যা বলছেন আমার হয়ে তার জবাব দিন। আমার আব্বা বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কী জবাব দিব তা জানি না। তখন আমি আমার আম্মাকে বললাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যা বলছেন, আপনি তার উত্তর দিন। আম্মা বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কী উত্তর দিব তা জানি না। তখন আমি ছিলাম অল্প বয়স্কা কিশোরী। কুরআনও বেশী পড়তে পারতাম না। তথাপিও এ অবস্থা দেখে আমি নিজেই বললাম, আমি জানি আপনারা এ অপবাদের ঘটনা শুনেছেন, আপনারা তা বিশ্বাস করিয়াছেন এবং বিষয়টি আপনাদের মনে দৃঢ়মূল হয়ে আছে। এখন যদি আমি বলি যে, এর থেকে আমি পবিত্র তাহলে আপনারা আমাকে বিশ্বাস করবেন না। আর যদি আমি এ অপরাধের কথা স্বীকার করে নেই যে সম্পর্কে আল্লাহ জানেন যে, আমি এর থেকে পবিত্র, তাহলে আপনারা তা বিশ্বাস করবেন। আল্লাহ্‌র কসম! আমি ও আপনারা যে বিপাকে পড়েছি এর জন্য ইউসুফ [আ.]-এর পিতার কথা ব্যতীত আমি কোন দৃষ্টান্ত খুঁজে পাচ্ছি না। তিনি বলেছিলেনঃ “কাজেই পূর্ণ ধৈর্য্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ এ ব্যাপারে আল্লাহই একমাত্র আমার আশ্রয়স্থল।” অতঃপর আমি মুখ ঘুরিয়ে আমার বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম। আল্লাহ তাআলা জানেন যে, সে মুহূর্তেও আমি পবিত্র। অবশ্যই আল্লাহ আমার পবিত্রতা প্রকাশ করে দেবেন তবে আল্লাহ্‌র কসম, আমি কক্ষনো ভাবিনি যে, আমার সম্পর্কে আল্লাহ ওয়াহী অবতীর্ণ করবেন যা পাঠ করা হইবে। আমার সম্পর্কে আল্লাহ কোন কথা বলবেন আমি নিজেকে এতটা উত্তম মনে করিনি বরং আমি নিজেকে এর চেয়ে অনেক অধম বলে ভাবতাম। তবে আমি আশা করতাম যে, হয়তো রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে স্বপ্নযোগে দেখানো হইবে যার ফলে আল্লাহ আমার পবিত্রতা প্রকাশ করবেন। আল্লাহ্‌র কসম! রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখনো তাহাঁর বসার জায়গা ছেড়ে যাননি এবং ঘরের লোকজনও কেউ ঘর হইতে বেরিয়ে যাননি। এমন সময় তাহাঁর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ শুরু হল। ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় তাহাঁর যে বিশেষ ধরনের কষ্ট হত তখনও সে অবস্থা হল। এমনকি ভীষণ শীতের দিনেও তাহাঁর শরীর হইতে মোতির দানার মতো বিন্দু বিন্দু ঘাম গড়িতে পড়ত ঐ বাণীর গুরুভারে, যা তাহাঁর প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আয়েশা [রাদি.] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এ অবস্থা কেটে গেলে তিনি হাসিমুখে পহেলা যে কথা উচ্চারণ করিলেন সেটা হল, হে আয়েশা! আল্লাহ তোমার পবিত্রতা প্রকাশ করে দিয়েছেন।

তিনি {আয়েশা [রাদি.]} বলেন, এ কথা শুনে আমার মা আমাকে বলিলেন, তুমি উঠে গিয়ে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর প্রতি সম্মান কর। আমি বললাম, আল্লাহ্‌র কসম! আমি তাহাঁর দিকে উঠে যাব না। মহান আল্লাহ ব্যতীত কারো প্রশংসা করব না। আয়েশা [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহ [আমার পবিত্রতার ব্যাপারে] যে দশটি আয়াত অবতীর্ণ করিয়াছেন, তা হল,

১১. “যারা এ অপবাদ রটনা করেছে তারা তো তোমাদেরই একটি দল; এ ঘটনাকে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করো না; বরং তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তাহাদের প্রত্যেকের জন্য আছে প্রতিফল যতটুকু পাপ সে করেছে। আর এ ব্যাপারে যে নেতৃত্ব দিয়েছে তার জন্য আছে মহাশাস্তি।

১২. তোমরা যখন এটা শূনতে পেলে তখন কেন মুমিন কেন মুমিন স্ত্রীরা তাহাদের নিজেদের লোক সম্পর্কে ভাল ধারণা করিল না আর বলিল না, এটা তো খোলাখুলি অপবাদ।

১৩. তারা চারজন সাক্ষী হাযির করিল না কেন? যেহেতু তারা সাক্ষী হাযির করেনি, সেহেতু তারা আল্লাহ্‌র নিকট তারাই মিথ্যাবাদী।

১৪. দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাদের উপর যদি আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ ও দয়া না থাকতো, তবে তোমরা যাতে তড়িঘড়ি লিপ্ত হয়ে পড়েছিলে তার জন্য মহা শাস্তি তোমাদেরকে পাকড়াও করত।

১৫. যখন এটা তোমরা মুখে মুখে ছড়াচ্ছিলে আর তমাদের মুখ দিয়ে এমন কথা বলছিলে যে বিষয়ে তমাদের কোন জ্ঞান ছিল না, আর তোমরা এতাকে নগণ্য ব্যাপার মনে করেছিলে, কিন্ত আল্লাহ্‌র নিকট তা ছিল গুরুতর ব্যাপার।

১৬. তোমরা যখন এটা শুনলে তখন তোমরা কেন বললে না যে, এ ব্যাপারে আমাদের কথা বলা ঠিক নয়। আল্লাহ্‌ পবিত্র ও মহান, এটা তো এক গুরুতর অপবাদ!

১৭. আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন তোমরা আর কখনো এর [অর্থাৎ এ আচরণের] পুনরাবৃত্তি করনা যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক।

১৮. আল্লাহ তোমাদের জন্য স্পষ্টভাবে আয়াত বর্ণনা করছেন, কারণ তিনি হলেন সর্ববিষয়ে জ্ঞানের অধিকারী, বড়ই হিকমতওয়ালা।

১৯. যারা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার বিস্তৃতি ঘটুক তাহাদের জন্য আছে ভয়াবহ শাস্তি দুনিয়া ও আখিরাতে। আল্লাহ্‌ জানেন তোমরা জান না।

২০. তোমাদের প্রতি আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে [তোমরা ধ্বংস হয়ে যেতে], আল্লাহ দয়ার্দ্র ও বড়ই দয়াবান। [সূরাহ আন-নূর ২৪/১১-২০]।

আমার পবিত্রতার ব্যাপারে আল্লাহ এ আয়াতগুলো অবতীর্ণ করিলেন।

আত্মীয়তা এবং দারিদ্রের কারণে আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.] মিসতাহ ইবনি উসাসাকে আর্থিক ও বৈষয়িক সাহায্য করিতেন। কিন্তু আয়েশা [রাদি.] সম্পর্কে তিনি যে অপবাদ রটিয়েছিলেন এ কারণে আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.] কসম করে বলিলেন, আমি আর কখনো মিসতাহকে আর্থিক সাহায্য করব না। তখন আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন “তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহ্‌র পথে যারা গৃহত্যাগ করেছে তাহাদেরকে কিছুই দিবে না। তারা যেন তাহাদেরকে ক্ষমা করে এবং তাহাদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে। শোন! তোমরা কি পছন্দ কর না যে, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল; পরম দয়ালু” [সূরাহ আন-নূর ২৪/২২]।

আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.] বলে উঠলেন, হ্যাঁ, আল্লাহ্‌র কসম! অবশ্যই আমি পছন্দ করি যে, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দিন। এরপর তিনি মিসতাহ [রাদি.]-এর জন্য যে অর্থ খরচ করিতেন তা পুনঃ দিতে শুরু করিলেন এবং বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমি তাঁকে এ অর্থ দেয়া আর কখনো বন্ধ করব না।

আয়েশা [রাদি.] বলিলেন, আমার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যায়নাব বিনত জাহাশ [রাদি.]-কেও জিজ্ঞেস করেছিলেন। তিনি যাইনাব [রাদি.]-কে বলেছিলেন, তুমি আয়েশা [রাদি.] সম্পর্কে কী জান অথবা বলেছিলেন তুমি কী দেখেছ? তখন তিনি বলেছিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! আমি আমার চোখ ও কানকে হিফাযত করেছি। আল্লাহ্‌র কসম! আমি তাহাঁর ব্যাপারে ভাল ব্যতীত আর কিছুই জানি না।

আয়েশা [রাদি.] বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রীগণের মধ্যে তিনি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। আল্লাহ তাহাঁর তাকওয়ার কারণে তাঁকে রক্ষা করিয়াছেন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, অথচ তাহাঁর বোন হামনা [রাদি.] তাহাঁর পক্ষ নিয়ে অপবাদ রটনাকারীদের মতো অপবাদ ছড়াচ্ছিলেন। ফলে তিনি ধ্বংসপ্রাপ্তদের সঙ্গে ধ্বংস হয়ে গেলেন।

বর্ণনাকারী ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ঐ সমস্ত লোকের ঘটনা আমার কাছে যা পৌঁছেছে তা হলো এইঃ উরওয়াহ [রাদি.] বলেন, আয়েশা [রাদি.] বর্ণনা করিয়াছেন যে, আল্লাহ্‌র কসম! যে ব্যক্তি সম্পর্কে অপবাদ দেয়া হয়েছিল, তিনি এসব কথা শুনে বলিতেন, আল্লাহ মহান। ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি কোন রমণীর বস্ত্র অনাবৃত করে কোনদিন দেখিনি। আয়েশা [রাদি.] বলেন, পরে তিনি আল্লাহ্‌র পথে শহীদ হন।

[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৩৫ হাদীস নং ৪১৪১; মুসলিম ৪৯ অধ্যায় ১০ হাঃ ২৭৭০] তাওবা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৭৬৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন আমার সম্পর্কে আলোচনা চলছিল যা রটনা হয়েছে এবং আমি এ সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। তখন আমার ব্যাপারে ভাষণ দিতে রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] দাঁড়ালেন। তিনি প্রথমে কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করিলেন। তারপর আল্লাহ্‌র প্রতি যথাযোগ্য হামদ ও সানা পাঠ করিলেন। এরপরে বলিলেন, হে মুসলিমগণ! যে সকল লোক আমার স্ত্রী সম্পর্কে অপবাদ দিয়েছে, তাহাদের ব্যাপারে আমাকে পরামর্শ দাও। আল্লাহ্‌র কসম! আমি আমার পরিবারের ব্যাপারে মন্দ কিছুই জানি না। তাঁরা এমন এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে, আল্লাহ্‌র কসম, তার ব্যাপারেও আমি কখনও খারাপ কিছু জানি না এবং সে কখনও আমার অনুপস্থিতিতে আমার ঘরে প্রবেশ করে না এবং আমি যখন কোন সফরে গিয়েছি সেও আমার সঙ্গে সফরে গিয়েছে।

তারপর যখন রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমার ঘরে আসলেন। তখন তিনি আমার খাদিমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন। সে বলিল, আল্লাহ্‌র কসম, আমি এ ব্যতীত তাহাঁর কোন দোষ জানি না যে, তিনি ঘুমিয়ে পড়তেন এবং বাক্রী এসে তাহাঁর খামির অথবা বলিলেন, গোলা আটা খেয়ে যেত। তখন কয়েকজন সহাবী তাকে ধমক দিয়ে বলিলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছে সত্য কথা বল। এমনকি তাঁরা তাহাঁর নিকট ঘটনা খুলে বলিলেন। তখন সে বলিল, সুবহান আল্লাহ্, আল্লাহ্‌র কসম! আমি তাহাঁর ব্যাপারে এর চেয়ে অধিক কিছু জানি না, যা একজন স্বর্ণকার তার এক টুকরা লাল খাঁটি স্বর্ণ সম্পর্কে জানে। এ ঘটনা সে ব্যক্তির কাছেও পৌঁছল যার সম্পর্কে এ অভিযোগ উঠেছে। তখন তিনি বলিলেন, সুবহান আল্লাহ্! আল্লাহ্‌র কসম, আমি কখনও কোন মহিলার পর্দা খুলিনি।

আয়েশা [রাদি.] বলেন, পরবর্তী সময়ে এ [অভিযুক্ত] লোকটি আল্লাহ্‌র রাস্তায় শহীদ রূপে নিহত হন।

[বোখারী পর্ব ৬৫ অধ্যায় ২৪ হাদীস নং ৪৭৫৭; মুসলিম ৪৪ অধ্যায় ১০ হাঃ ২৪৮৮] তাওবা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

Was this article helpful?

Related Articles