আল্লাহ তাআলার দয়ার প্রশস্ততা এবং তা তাহাঁর রাগকে ছাড়িয়ে গেছে।

১৭৪৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা বান্দার তাওবা কারণে সেই লোকটির চেয়েও অধিক খুশী হন, যে লোকটি মরুভূমিতে তাহাঁর উট হারিয়ে পরে তা পেয়ে যায়।

[বোখারী পর্ব ৮০ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৬৩০৯; মুসলিম ৪৯ অধ্যায় ১, হাঃ ২৭৪৭] তাওবা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৭৪৯. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ যখন সৃষ্টির কাজ শেষ করিলেন, তখন তিনি তাহাঁর কিতাব লাওহে মাহফুজে লিখেন, যা আরশের উপর তাহাঁর নিকট আছে। নিশ্চয়ই আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রবল।

[বোখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৩১৯৪; মুসলিম ৪৯ অধ্যায় ৪ হাঃ ২৭৫১] তাওবা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৭৫০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহ রহমতকে একশ ভাগে ভাগ করিয়াছেন। তার মধ্যে নিরানব্বই ভাগ তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আর পৃথিবীতে একভাগ অবতীর্ণ করিয়াছেন। ঐ এক ভাগের কারণেই সৃষ্ট জগত একে অন্যের উপর দয়া করে। এমনকি ঘোড়া তার বাচ্চার উপর থেকে পা তুলে নেয় এ ভয়ে যে, সে ব্যথা পাবে।

[বোখারী পর্ব ৭৮ অধ্যায় ১৯ হাদীস নং ৬০০০; মুসলিম ৪৯ অধ্যায় ৪, হাঃ ৬৪৬৯] তাওবা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৭৫১. উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট কিছু সংখ্যক বন্দী আসে। বন্দীদের মধ্যে একজন মহিলা ছিল। তার স্তন দুধে পূর্ণ ছিল। সে বন্দীদের মধ্যে কোন শিশু পেলে তাকে ধরে কোলে নিত এবং দুধ পান করাত। নাবী [সাঃআঃ] আমাদের বললেনঃ তোমরা কি মনে করো এ মহিলা তার সন্তানকে আগুনে ফেলে দিতে পারে? আমরা বললামঃ ফেলার ক্ষমতা রাখলে সে কখনো ফেলবে না। তারপর তিনি বললেনঃ এ মহিলাটি তার সন্তানের উপর যতটুকু দয়ালু, আল্লাহ তাহাঁর বান্দার উপর তদপেক্ষা অধিক দয়ালু।

[বোখারী পর্ব ৭৮ অধ্যায় ১৮ হাদীস নং ৫৯৯৯; মুসলিম ৪৯ অধ্যায় ৪, হাঃ ২৭৫৪] তাওবা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৭৫২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক ব্যক্তি [জীবনেও] কোন ভাল আমাল করেনি। মৃত্যুর সময় সে বলিল, মারা যাবার পর তোমরা তাকে পুড়িয়ে ফেল। আর অর্ধেক স্থলে আর অর্ধেক সাগরে ছড়িয়ে দাও। সে আরো বলিল, আল্লাহ্‌র কসম! আল্লাহ্ যদি তাকে পেয়ে যান তাহলে অবশ্যই তাকে এমন শাস্তি দেবেন, যা জগতসমূহের আর কাউকে দেবেন না। তারপর আল্লাহ্ সাগরকে হুকুম দিলে সাগর এর মধ্যকার অংশকে একত্রিত করিল। স্থলকে হুকুম দিলে সেও তার মধ্যকার অংশ একত্রিত করিল। তারপর আল্লাহ্ বললেনঃ তুমি কেন এরূপ করলে? সে উত্তর করিল, তোমার ভয়ে। আর তুমি অধিক জ্ঞাত। এর প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করে দিলেন।

[বোখারী পর্ব ৯৭ অধ্যায় ৩৪ হাদীস নং ৭৫০৬; মুসলিম ৪৯ অধ্যায় ৪ হাঃ ২৭৫৬] তাওবা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৭৫৩. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তোমাদের আগের এক লোক, আল্লাহ্ তাআলা তাকে প্রচুর ধন-সম্পদ দান করেছিলেন। যখন তার মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল তখন সে তার ছেলেদেরকে জড় করে জিজ্ঞেস করিল আমি তোমাদের কেমন পিতা ছিলাম? তারা বলিল আপনি আমাদের উত্তম পিতা ছিলেন। সে বলিল, আমি জীবনে কখনও কোন নেক আমল করিতে পারিনি। আমি যখন মারা যাব তখন তোমরা আমার লাশকে জ্বালিয়ে ছাই করে দিও এবং প্রচণ্ড ঝড়ের দিন ঐ ছাই বাতাসে উড়িয়ে দিও। সে মারা গেল। ছেলেরা ওসিয়াত অনুযায়ী কাজ করিল। আল্লাহ্ তাআলা তার ছাই জড় করে জিজ্ঞেস করিলেন, এমন ওসিয়াত করিতে কে তোমাকে উদ্বুদ্ধ করিল? সে বলিল, হে আল্লাহ্! তোমার শাস্তির ভয়। ফলে আল্লাহ্‌র রহমত তাকে ঢেকে নিল।

[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৫৪ হাদীস নং ৩৪৭৮; মুসলিম ৪৯ অধ্যায় ৪ হাঃ ২৭৫৭] তাওবা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

Was this article helpful?

Related Articles