আলী বিন আবু ত্বলিব (রা)-এর মর্যাদা।

১৫৫৬. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলাল্লাহ [সাঃআঃ] তাবূক যুদ্ধাভিযানে রওয়ানা হন। আর আলী [রাদি.]-কে স্বীয় স্থলাভিষিক্ত করেন। আলী [রাদি.] বলেন, আপনি কি আমাকে শিশু ও নারীদের মধ্যে ছেড়ে যাচ্ছেন। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি কি এ কথায় রাযী নও যে, তুমি আমার কাছে সে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত মূসা [আঃ]র নিকট যে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিলেন হারূন [আঃ]। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, {হারূন [আ.] নাবী ছিলেন আর} আমার পরে কোন নাবী নেই।

[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৭৯ হাদীস নং ৪৪১৬; মুসলিম ৪৪/৪, হাঃ ২৪০৪]


১৫৫৭. সাহ্‌ল ইবনি সাআদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি খায়বারের যুদ্ধের সময় নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, আমি এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দিব যার হাতে বিজয় আসবে। অতঃপর কাকে পতাকা দেয়া হইবে, সেজন্য সকলেই আশা করিতে লাগলেন। পরদিন সকালে প্রত্যেকেই এ আশায় অপেক্ষা করিতে লাগলেন যে, হয়ত তাকে পতাকা দেয়া হইবে। কিন্তু নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, আলী কোথায়? তাঁকে জানানো হলো যে, তিনি চক্ষুরোগে আক্রান্ত। তখন তিনি আলীকে ডেকে আনতে বলিলেন। তাকে ডেকে আনা হল। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর মুখের লালা তাহাঁর উভয় চোখে লাগিয়ে দিলেন। তৎক্ষণাৎ তিনি এমনভাবে সুস্থ হয়ে গেলেন যে, তাহাঁর কোন অসুখই ছিল না। তখন আলী [রাদি.] বলিলেন, আমি তাহাদের বিরুদ্ধে ততক্ষণ লড়াই চালিয়ে যাব, যতক্ষণ না তারা আমাদের মত হয়ে যায়। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি সোজা এগিয়ে যাও। তুমি তাহাদের প্রান্তরে উপস্থিত হলে প্রথমে তাহাদেরকে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানাও এবং তাহাদের কর্তব্য সম্পর্কে তাহাদের অবহিত কর। আল্লাহ্‌র কসম, যদি একটি ব্যক্তিও তোমার দ্বারা হিদায়াত লাভ করে, তবে তা তোমার জন্য লাল রংয়ের উটের চেয়েও উত্তম।

[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১০২ হাদীস নং ২৯৪২; মুসলিম ৪৪/৪ হাঃ ২৪০৬]


১৫৫৮. সালামাহ ইবনি আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধে আলী[রাদি.] আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] থেকে পেছনে থেকে যান, [কারণ] তাহাঁর চোখে অসুখ হয়েছিল। তখন তিনি বলিলেন, আমি কি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] থেকে পিছিয়ে থাকব? অতঃপর আলী [রাদি.] বেরিয়ে পড়লেন এবং নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে এসে মিলিত হলেন। যখন সে রাত এল, যে রাত শেষে সকালে আলী [রাদি.] খায়বার জয় করেছিলেন, তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, আগামীকাল আমি এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দিব, কিংবা [বলেন] আগামীকাল এমন এক ব্যক্তি পতাকা গ্রহণ করিবে যাকে আল্লাহ্ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ] ভালবাসেন। অথবা তিনি বলেছিলেন, যে আল্লাহ্ তাআলা ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-কে ভালবাসে, আল্লাহ্ তাআলা তারই হাতে খায়বার বিজয় দান করবেন। হঠাৎ আমরা দেখিতে পেলাম যে, আলী [রাদি.] এসে হাজির, অথচ আমরা তাহাঁর আগমন আশা করিনি। তারা বলিলেন, এই যে আলী [রাদি.] চলে এসেছেন। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাঁকে পতাকা প্রদান করিলেন। আর আল্লাহ্ তাআলা তাহাঁরই হাতে বিজয় দিলেন।

[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১২১ হাদীস নং ২৯৭৫; মুসলিম হাঃ ২৪০৭]


১৫৫৯. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ফাতিমা [রাদি.]-এর গৃহে এলেন, কিন্তু আলী [রাদি.]-কে ঘরে পেলেন না। তিনি ফাতিমা [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার চাচাত ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তাহাঁর মধ্যে বাদানুবাদ হওয়ায় তিনি আমার সাথে রাগ করে বাইরে চলে গেছেন। আমার নিকট দুপুরের বিশ্রামও করেননি। অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে বললেনঃ দেখ তো সে কোথায়? সে ব্যক্তি খুঁজে এসে বললোঃ হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ], তিনি মাসজিদে শুয়ে আছেন। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] এলেন, তখন আলী [রাদি.] কাত হয়ে শুয়ে ছিলেন। তাহাঁর শরীরের এক পাশের চাদর পড়ে গেছে এবং তাহাঁর শরীরে মাটি লেগেছে। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর শরীরের মাটি ঝেড়ে দিতে দিতে বললেনঃ উঠ, হে আবু তুরাব! উঠ, হে আবু তুরাব! {আবু তুরাবঃ আলী [রাদি.]-এর উপাধি}

[বোখারী পর্ব ৮ অধ্যায় ৫৮ হাদীস নং ৪৪১; মুসলিম ৪৪/৪, হাঃ ২৪০৯]

Was this article helpful?

Related Articles