আবু বকর আস্সিদ্দীক (রা)-এর মর্যাদা।

১৫৪০. আবু বকর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা যখন গুহায় আত্মগোপন করেছিলাম তখন আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বললাম, যদি কাফিররা তাহাদের পায়ের নীচের দিকে দৃষ্টিপাত করে তবে আমাদেরকে দেখে ফেলবে। তিনি বলিলেন, হে আবু বকর! ঐ দুই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার কী ধারণা আল্লাহ্ যাঁদের তৃতীয় জন।

[বোখারী পর্ব ৬২ অধ্যায় ২ হাদীস নং ৩৬৫৩; মুসলিম ৪৪/১ হাদীস ২৩৮১]


১৫৪১. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলাল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] মিম্বরে বসলেন এবং বলিলেন, আল্লাহ্ তার এক বান্দাকে দুটি বিষয়ের একটি বেছে নেয়ার অধিকার দিয়েছেন। তার একটি হল দুনিয়ার ভোগ-বিলাস আর একটি হল আল্লাহ্‌র নিকট যা রক্ষিত রয়েছে। তখন সে বান্দা আল্লাহ্‌র কাছে যা রয়েছে তাই পছন্দ করিলেন। একথা শুনে, আবু বকর [রাদি.] কেঁদে ফেললেন, এবং বলিলেন, আমাদের পিতা-মাতাকে আপনার জন্য কুরবানী করলাম। তাহাঁর অবস্থা দেখে আমরা বিস্মিত হলাম। লোকেরা বলিতে লাগল, এ বৃদ্ধের অবস্থা দেখ, রাসূলাল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] এক বান্দা সম্বন্ধে খবর দিলেন যে, তাকে আল্লাহ্ ভোগ-সম্পদ দেওয়ার এবং তার কাছে যা রয়েছে, এ দুয়ের মধ্যে বেছে নিতে বলিলেন আর এ বৃদ্ধ বলছে, আপনার জন্য আমাদের মাতাপিতা উৎসর্গ করলাম। রাসূলাল্লাহ্‌ [সাঃআঃ]-ই হলেন সেই ইখতিয়ার প্রাপ্ত বান্দা। আর আবু বকর [রাদি.]-ই হলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তি।

রাসূলাল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি তার সঙ্গ ও সম্পদ দিয়ে আমার প্রতি সবচেয়ে ইহসান করিয়াছেন তিনি হলেন আবু বকর [রাদি.] । যদি আমি আমার উম্মতের কোন ব্যক্তিকে অন্তরঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করতাম তাহলে আবু বকরকেই করতাম। তবে তার সঙ্গে আমার ইসলামী ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক রয়েছে। মসজিদের দিকে আবু বকর [রাদি.] এর দরজা ছাড়া অন্য কারো দরজা খোলা থাকিবে না।

[বোখারী পর্ব ৬৩ অধ্যায় ৪৫ হাদীস নং ৩৯০৪; মুসলিম ৪৪/১, হাঃ নং ২৩৮২]


১৫৪২. আম্‌র ইবনি আস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে যাতুস্ সালাসিল যুদ্ধের সেনাপতি করে পাঠিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি তাহাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, মানুষের মধ্যে কে আপনার নিকট সবচেয়ে প্রিয়? তিনি বলিলেন, আয়িশাহ্। আমি বললাম, পুরুষদের মধ্যে কে? তিনি বলিলেন, তাহাঁর পিতা [আবু বকর]। আমি জিজ্ঞেস করলাম, অতঃপর কোন্ লোকটি? তিনি বলিলেন, উমার ইবনি খাত্তাব অতঃপর আরো কয়েকজনের নাম করিলেন।

[বোখারী পর্ব ৬২ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ৩৬৬২; মুসলিম ৪৪/১, হাঃ ২৩৮৪]


১৫৪৩. যুবায়র ইবনি মুতঈম [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক স্ত্রীলোক নাবী [সাঃআঃ]-এ নিকট এল। তিনি তাঁকে আবার আসার জন্য বলিলেন। স্ত্রীলোকটি বলিল, আমি এসে যদি আপনাকে না পাই তবে কী করব? এ কথা দ্বারা স্ত্রীলোকটি নাবী [সাঃআঃ]-এর মৃত্যুর প্রতি ইশারা করেছিল। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি আমাকে না পাও তাহলে আবু বকরের নিকট আসবে

[বোখারী পর্ব ৬২ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ৩৬৫৯; মুসলিম ৪৪/১ হাঃ ২৩৮৬]


১৫৪৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা নাবী [সাঃআঃ] ফাজরের সালাত শেষে লোকজনের দিকে ঘুরে বসলেন এবং বলিলেন, একদা এক লোক একটি গরু হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ সেটির পিঠে চড়ে বসলো এবং ওকে প্রহার করিতে লাগল। তখন গরুটি বলিল, আমাদেরকে এজন্য সৃষ্টি করা হয়নি, আমাদেরকে চাষাবাদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এতদশ্রবণে লোকজন বলে উঠল, সুবহানাল্লাহ্! গরুও কথা বলে? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি এবং আবু বকর ও উমার তা বিশ্বাস করি। অথচ তখন তাঁরা উভয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। আর এক রাখাল একদিন তার ছাগল পালের মাঝে অবস্থান করছিল, এমন সময় একটি চিতা বাঘ পালে ঢুকে একটি ছাগল নিয়ে গেল। রাখাল বাঘের পিছনে ধাওয়া করে ছাগলটি উদ্ধার করে নিল। তখন বাঘটি বলিল, তুমি ছাগলটি আমার থেকে কেড়ে নিলে বটে, তবে ঐদিন কে ছাগলকে রক্ষা করিবে যেদিন হিংস্র জন্তু ওদের আক্রমণ করিবে এবং আমি ব্যতীত তাহাদের অন্য কোন রাখাল থাকিবে না। লোকেরা বলিল, সুবহানাল্লাহ! চিতা বাঘ কথা বলে! নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি এবং আবু বকর ও উমার তা বিশ্বাস করি অথচ তাঁরা উভয়েই সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৫৪ হাদীস নং ৩৪৭১; মুসলিম ৪৪/১ হাঃ ২৩৮৮]

Was this article helpful?

Related Articles