অসুখের কারণে ও সফরে যাওয়ার কারণে বা অন্য যে কোন কারণে সঙ্গত ওযর উপস্থিত হলে সলাতে অন্যকে ইমামের স্থলাভিষিক্ত করা।

২৩৫. উবাইদুল্লাহ্ ইব্‌নু `আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উত্‌বাহ [রহ.] হতে বর্ণিতঃ

উবাইদুল্লাহ্ ইব্‌নু `আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উত্‌বাহ [রহ.] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ]-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে বললাম, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর [অন্তিম কালের] অসুস্থতা সম্পর্কে কি আপনি আমাকে কিছু শুনাবেন? তিনি বলিলেন, অবশ্যই। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষারত। তিনি বলিলেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি দাও। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করিলেন। অতঃপর একটু উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর একটু হুঁশ ফিরে পেলে আবার তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলিলেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করিলেন। আবার উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেয়ে জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলিলেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। অতঃপর তিনি উঠে বসলেন, এবং গোসল করিলেন। এবং উঠতে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেলেন এবং জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। ওদিকে সাহাবীগণ `ইশার নামাজের জন্য নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর অপেক্ষায় মাসজিদে বসে ছিলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নিকট এ মর্মে একজন লোক পাঠালেন যে, তিনি যেন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে নেন। সংবাদ বাহক আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলিলেন যে, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আপনাকে লোকদের নিয়ে নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। আবূ বকর [রাঃআঃ] অত্যন্ত কোমল মনের লোক ছিলেন, তাই তিনি `উমার [রাঃআঃ]-কে বলিলেন, হে `উমার! আপনি সাহাবীগণকে নিয়ে নামাজ আদায় করে নিন। `উমার [রাঃআঃ] বলিলেন, আপনিই এর অধিক যোগ্য। তাই আবূ বকর [রাঃআঃ] সে কয়দিন নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একটু নিজে হালকাবোধ করিলেন এবং দু`জন লোকের কাঁধে ভর করে যুহরের নামাজের জন্য বের হলেন। সে দু`জনের একজন ছিলেন `আব্বাস [রাঃআঃ]। আবূ বকর [রাঃআঃ] তখন সাহাবীগণকে নিয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। তিনি যখন নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে দেখিতে পেলেন, পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাঁকে পিছিয়ে না আসার জন্য ইঙ্গিত করিলেন এবং বলিলেন, তোমরা আমাকে তাহাঁর পাশে বসিয়ে দাও। তাঁরা তাঁকে আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর পাশে বসিয়ে দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আবূ বকর [রাঃআঃ] নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নামাজের ইক্তিদা করে নামাজ আদায় করিতে লাগলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নামাজের ইক্তিদা করিতে লাগলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তখন উপবিষ্ট ছিলেন। উবায়দুল্লাহ্ বলেন, আমি `আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু `আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর অন্তিম কালের অসুস্থতা সম্পর্কে `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] আমাকে যে হাদিছ বর্ণনা করিয়াছেন, তা কি আমি আপনার নিকট বর্ণনা করব না? তিনি বলিলেন, করুন। তাই আমি তাঁকে সে হাদিছ শুনালাম। তিনি এ বর্ণনার কোন অংশেই আপত্তি করিলেন না, তবে তাঁকে তিনি জিজ্ঞেস করিলেন যে, `আব্বাস [রাঃআঃ]-এর সাথে যে অপর এক সাহাবী ছিলেন, `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] কি আপনার নিকট তাহাঁর নাম উল্লেখ করিয়াছেন? আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, তিনি হলেন, `আলী ইবনু আবূ তালিব [রাঃআঃ]।

হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ[সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৫১ হাদিছ ৬৮৭, মুসলিম ৪/২১, হাদিছ ৪১৮]


২৩৬. `আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

`আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ভারী হয়ে পড়লেন এবং তাহাঁর কষ্ট বেড়ে গেল। তখন তিনি তাহাঁর স্ত্রীগণের নিকট আমার ঘরে শুশ্রূষা পাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করিলেন। তারা তাঁকে সম্মতি দিলেন। অতঃপর একদা দু` ব্যক্তির উপর ভর করে বের হলেন, তখন তার উভয় পা মাটি স্পর্শ করছিল। তিনি `আব্বাস [রাঃআঃ] ও আরেক ব্যক্তির মাঝে ভর দিয়ে চলছিলেন। উবায়দুল্লাহ [রহ.] বলেন, `আয়িশাহ [রাঃআঃ] যা বলিলেন, তা আমি ইবনু `আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট আরয করলাম, তিনি তখন আমাকে বলিলেন, `আয়িশাহ [রাঃআঃ] যার নাম উল্লেখ করিলেন না, তিনি কে, তা জান কি? আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, তিনি হলেন `আলী ইবনু আবূ তালিব [রাঃআঃ]।

হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ৫১ : /১৪ হাদিছ ২৫৮৮, মুসলিম ৪/২১ হাদিছ ৪১৮]


২৩৭. `আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

`আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেন, আমি আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর ইমামতের ব্যাপার নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বারবার আপত্তি করেছি। আর আমার তাহাঁর কাছে বারবার আপত্তি করার কারণ ছিল এই, আমার অন্তরে এ কথা আসেনি যে, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর পরে তাহাঁর স্থলে কেউ দাঁড়ালে লোকেরা তাকে পছন্দ করিবে। বরং আমি মনে করতাম যে, কেউ তাহাঁর স্থলে দাঁড়ালে লোকেরা তাহাঁর প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করিবে, তাই আমি ইচ্ছে করলাম যে, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এ দায়িত্ব আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর পরিবর্তে অন্য কাউকে প্রদান করুন।

হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ৬৪ : /৮৩ হাদিছ ৪৪৪৫, মুসলিম ৪/২১ হাদিছ ৪১৮]


২৩৮. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যখন অন্তিম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, তখন নামাজের সময় হলে আযান দেয়া হলো। তখন তিনি বলিলেন, আবূ বকরকে লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে বল। তাঁকে বলা হলো যে, আবূ বকর [রাঃআঃ] অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক, তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন তখন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করা তাহাঁর পক্ষে সম্ভব হইবে না। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবার সে কথা বলিলেন এবং তারাও আবার তা-ই বলিলেন। তৃতীয়বারও তিনি সে কথা বলিলেন, তোমরা ইউসুফের সাথীদের ন্যায়। আবূ বকরকে নির্দেশ দাও যেন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে নেয়। আবূ বকর [রাঃআঃ] এগিয়ে গিয়ে নামাজ শুরু করিলেন। এদিকে নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিজেকে একটু হালকাবোধ করিলেন। দু`জন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে বেরিয়ে এলেন। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, আমার চোখে এখনও স্পষ্ট ভাসছে। অসুস্থতার কারণে তাহাঁর দু`পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। তখন আবূ বকর [রাঃআঃ] পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাকে স্বস্থানে থাকার জন্য ইঙ্গিত করিলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে আনা হলো, তিনি আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর পাশে বসলেন।

হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৩৯ হাদিছ ৬৬৪, মুসলিম ৪/২১, হাদিছ ৪১৮]


২৩৯. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

`আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যখন [রোগে] পীড়িত হয়ে পড়েছিলেন, বিলাল [রাঃআঃ] এসে নামাজের কথা বলিলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, আবূ বক্রকে বল, লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! আবূ বকর [রাঃআঃ] অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের ব্যক্তি। তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। যদি আপনি `উমার [রাঃআঃ]-কে এ নির্দেশ দেন [তবে ভাল হয়]। তিনি [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবার বললেনঃ লোকদের নিয়ে আবূ বকর [রাঃআঃ]-কে নামাজ আদায় করিতে বল। আমি হাফসা [রাঃআঃ]-কে বললাম, তুমি তাঁকে একটু বল যে, আবূ বকর [রাঃআঃ] অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের ব্যক্তি। তিনি যখন আপনার পরিবর্তে সে স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শোনাতে পারবেন না। যদি আপনি `উমার [রাঃআঃ]-কে এ নির্দেশ দিতেন [তবে ভাল হতো]। এ শুনে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তোমরা ইউসুফের সাথী রমণীদেরই মতো। আবূ বকর [রাঃআঃ]-কে লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে বল। আবূ বকর [রাঃআঃ] লোকদের নিয়ে নামাজ শুরু করিলেন। তখন আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিজে একটু সুস্থবোধ করিলেন এবং দু`জন সাহাবীর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মাসজিদে গেলেন। তাহাঁর দু` পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। আবূ বকর [রাঃআঃ] যখন তাহাঁর আগমন আঁচ করিলেন, পিছনে সরে যেতে উদ্যত হলেন। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার প্রতি ইঙ্গিত করিলেন [পিছিয়ে না যাওয়ার জন্য]। অতঃপর তিনি এসে আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর বামপাশে বসে গেলেন, অবশেষে আবূ বকর [রাঃআঃ] দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নামাজের অনুসরণ করছিল।

হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৬৮ হাদিছ ৭১৩, মুসলিম ৪/২১ হাদিছ ৪১৮]


২৪০. আনাস ইব্‌নু মালিক আনসারী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

আনাস ইব্‌নু মালিক আনসারী [রাঃআঃ] যিনি নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর অনুসারী, খাদিম এবং সাহাবী ছিলেন। তিনি বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] অন্তিম রোগে আক্রান্ত অবস্থায় আবূ বকর [রাঃআঃ] সাহাবীগণকে নিয়ে নামাজ আদায় করিতেন। অবশেষে যখন সোমবার এল এবং লোকেরা নামাজের জন্য কাতারে দাঁড়াল, তখন নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হুজরাহ্‌র পর্দা উঠিয়ে আমাদের দিকে তাকালেন। তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাহাঁর চেহারা যেন কুরআনুল কারীমের পৃষ্ঠা [এর ন্যায় ঝলমল করছিল]। তিনি মুচকি হাসলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে দেখিতে পেয়ে আমরা খুশীতে প্রায় আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম এবং আবূ বকর [রাঃআঃ] কাতারে দাঁড়ানোর জন্য পিছন দিকে সরে আসছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হয়তো সলাতে আসবেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদেরকে ইঙ্গিতে বলিলেন যে, তোমরা তোমাদের নামাজ পূর্ণ করে নাও। অতঃপর তিনি পর্দা ছেড়ে দিলেন। সে দিনই তিনি ওফাতপ্রাপ্ত হন।

হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৪৬ হাদিছ ৬৮০, মুসলিম ৪/২১ হাদিছ ৪১৯]


২৪১. আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, [রোগশয্যায় থাকার কারণে] তিনদিন পর্যন্ত নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বাইরে আসেন নি। এ সময় এক সময় নামাজের ইক্বামাত দেয়া হল। আবূ বকর [রাঃআঃ] ইমামত করার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলেন। এমন সময় নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাহাঁর ঘরের পর্দা ধরে উঠালেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর চেহারা যখন আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তাহাঁর চেহারার চেয়ে সুন্দর দৃশ্য আমরা আর কখনো দেখিনি। যখন তাহাঁর চেহারা আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তখন নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হাতের ইঙ্গিতে আবূ বকর [রাঃআঃ]-কে [ইমামতের জন্য] এগিয়ে যেতে বলিলেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। অতঃপর তাহাঁর মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে আর দেখার সৌভাগ্য হয়নি।

হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৪৬ হাদিছ ৬৮১, মুসলিম হাদিছ]


২৪২. আবূ মূসা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ

আবূ মূসা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ক্রমে তাহাঁর অসুস্থতা তীব্রতর হলে তিনি বলিলেন, আবূ বকরকে লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে বল। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলিলেন, তিনি তো কোমল হৃদয়ের লোক, যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন তিনি লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে পারবেন না। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবার বলিলেন, আবূ বকরকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] আবার সে কথা বলিলেন। তখন তিনি আবার বলিলেন, আবূ বকরকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে। তোমরা ইউসুফের [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সাথী রমণীদেরই মতো। অতঃপর একজন সংবাদদাতা আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নিকট সংবাদ নিয়ে আসলেন এবং তিনি নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর জীবদ্দশাতেই লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিলেন।

– হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৪৬ হাদিছ ৬৭৮, মুসলিম ৪/২১, হাদিছ ৪২০]

 

Was this article helpful?

Related Articles