পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্র ব্যবহার ও তা থেকে পানি পান করা নিষিদ্ধ।

১৩৩৭. উম্মু সালামাহ [রাদি. হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রূপার পাত্রে পান করে সে তো তার উদরে জাহান্নামের আগুন প্রবেশ করায়।

[বোখারী পর্ব ৭৪ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ৫৬৩৪; মুসলিম ৩৭/১, হাঃ ২০৬৫] অলঙ্কার -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৩৩৮. বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের সাতটি জিনিসের হুকুম দিয়েছেন এবং সাতটি জিনিস থেকে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি আমাদের হুকুম দিয়েছেনঃ রোগীর সেবা করিতে, জানাযার পেছনে যেতে, হাঁচি দানকারীর জবাব দিতে, দাওয়াতকারীর দাওয়াত গ্রহণ করিতে, অধিক অধিক সালাম দিতে, মাযলুমের সাহায্য করিতে এবং কসমকারীকে কসম ঠিক রাখার সুযোগ করে দিতে। আর আমাদের তিনি নিষেধ করছেনঃ স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করিতে, কিংবা তিনি বলেছেন, রূপার পাত্রে পানি পান করিতে, মায়াসির অর্থাৎ এক জাতীয় নরম ও মসৃন রেশমী কাপড় কালসী অর্থাৎ রেশম মিশ্রিত কাপড় ব্যবহার করিতে এবং পাতলা কিংবা মোটা এবং অলঙ্কার খচিত রেশমী কাপড় ব্যবহার করিতে।

[বোখারী পর্ব ৭৪ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ৫৬৩৫; মুসলিম ৩৭/১, হাঃ ২০৬৬] অলঙ্কার -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৩৩৯. আবদুর রহমান ইবনি আবু লাইলা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার তাঁরা হুযাইসলামিক ফাউন্ডেশনহ [রাদি.]-এর কাছে উপস্থিত ছিলেন। তিনি পানি পান করিতে চাইলে এক অগ্নি উপাসক তাঁকে পানি এনে দিল। সে যখনই পাত্রটি তাহাঁর হাতে রাখল, তিনি সেটা ছুঁড়ে মারলেন এবং বলিলেন, আমি যদি একবার বা দুবারের অধিক তাকে নিষেধ না করতাম, তাহলেও হতো। অর্থাৎ তিনি যেন বলিতে চান, তা হলেও আমি এরূপ করতাম না। কিন্তু আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা রেশম বা রেশম জাত কাপড় পরিধান করো না এবং সোনা ও রূপার পাত্রে পান করো না এবং এগুলোর বাসনে আহার করো না। কেননা পৃথিবীতে এগুলো কাফিরদের জন্য আর পরকালে তোমাদের জন্য।

[বোখারী পর্ব ৭০ অধ্যায় ২৯ হাদীস নং ৫৪২৬; মুসলিম ৩৭/১, হাঃ ২০৬৭] অলঙ্কার -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৩৪০. আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] মাসজিদে নববীর দরজার নিকটে এক জোড়া রেশমী পোষাক [বিক্রি হইতে] দেখে নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ]! যদি এটি আপনি খরিদ করিতেন আর জুমুআহর দিন এবং যখন আপনার নিকট প্রতিনিধি দল আসে তখন আপনি তা পরিধান করিতেন। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ এটা তো সে ব্যক্তিই পরিধান করে, আখিরাতে যার [মঙ্গলের] কোন অংশ নেই।

অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট এ ধরনের কয়েক জোড়া পোষাক আসে, তখন তার এক জোড়া তিনি উমার [রাদি.]-কে প্রদান করেন। উমার [রাদি.] আরয করিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ]! আপনি আমাকে এটি পরিধান করিতে দিলেন অথচ আপনি উতারিদের [রেশম] পোষাক সম্পর্কে যা বলার তা তো বলেছিলেন। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি তোমাকে এটি নিজের পরিধানের জন্য প্রদান করিনি। উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] তখন এটি মাক্কায় তাহাঁর এক ভাইকে দিয়ে দেন, যে তখন মুশরিক ছিল।

[বোখারী পর্ব ১১ অধ্যায় ৭ হাদীস নং ৮৮৬; মুসলিম ৩৭/১, হাঃ ২০৬৮] অলঙ্কার -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৩৪১. ক্বাতাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু উসমান নাহদী [রাদি.]-এর থেকে বলেনঃ আমাদের কাছে উমার [রাদি.]-এর থেকে এক পত্র আসে, এ সময় আমরা উত্‌বাহ ইবনি ফারকাদের সঙ্গে আযারবাইজানে অবস্থান করছিলাম। [তাতে লেখা ছিল :] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রেশম ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন, তবে এতটুকু এবং ইশারা করিলেন, বৃদ্ধ আঙ্গুলের সাথে মিলিত দুআঙ্গুল দ্বারা [বর্ণনাকারী বলেন :] আমরা বুঝলাম যে [বৈধতার পরিমাণ] জানিয়ে তিনি পাড় ইত্যাদি উদ্দেশ্য করিয়াছেন।

[বোখারী পর্ব ৭৭ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৫৮২৮; মুসলিম পর্ব ৩৭/ হাঃ ২০৬৯] অলঙ্কার -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৩৪২. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাকে একজোড়া রেশমী কাপড় দিলেন। আমি তা পরিধান করলাম। তাহাঁর মুখমণ্ডলে গোস্বার ভাব দেখিতে পেয়ে আমি আমার মহিলাদের মাঝে তা ভাগ করে দিয়ে দিলাম।

[বোখারী পর্ব ৫১ অধ্যায় ২৭ হাদীস নং ২৬১৪; মুসলিম ৩৭/১ হাঃ ২০৭১] অলঙ্কার -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৩৪৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এ কথা কি নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত? তিনি জোর দিয়ে বললেনঃ হ্যাঁ। নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত। যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরিধান করিবে, সে আখিরাতে তা কখনও পরিধান করিতে পারবে না।

[বোখারী পর্ব ৭৭ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৫৮৩২; মুসলিম পর্ব ৩৭/ হাঃ ৬০৭৩] অলঙ্কার -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


১৩৪৪. উকবাহ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ]-কে একটা রেশমী জুব্বা হাদিয়া হিসেবে দেয়া হয়েছিল। তিনি তা পরিধান করে সলাত আদায় করিলেন। কিন্তু সলাত শেষ হওয়ার সাথে সাথে দ্রুত তা খুলে ফেললেন, যেন তিনি তা পরা অপছন্দ করছিলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ মুত্তাকীদের জন্যে এ পোশাক সমীচীন নয়।*

[বোখারী পর্ব ৮ অধ্যায় ১৬ হাদীস নং ৩৭৫; মুসলিম ৩৭/১৫, হাঃ ২০৭৫] *পুরুষের জন্য রেশমি কাপড় পরিধান হারাম হওয়ার পূর্বের ঘটনা এটি। অলঙ্কার -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

Was this article helpful?

Related Articles