৩৯৬. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক সফরে তাঁরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে ছিলেন। সারা রাত পথ চলার পর যখন ভোর কাছাকাছি হল, তখন বিশ্রাম নেয়ার জন্য থেমে গেলেন এবং গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে পড়লেন। অবশেষে সূর্য উদিত হয়ে অনেক উপরে উঠে গেল, {ইমরান [রাদি.] বলেন} যিনি সর্বপ্রথম ঘুম হইতে জাগলেন তিনি হলেন আবু বাক্র [রাদি.]। আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] নিজে জাগ্রত না হলে তাঁকে জাগানো হত না। অতঃপর উমার [রাদি.] জাগলেন। আবু বাক্র [রাদি.] তাহাঁর শিয়রের নিকট গিয়ে বসে উচ্চৈঃস্বরে আল্লাহু আকবার বলিতে লাগলেন। শেষে নাবী [সাঃআঃ] জেগে উঠলেন এবং অন্যত্র চলে গিয়ে অবতরণ করে আমাদেরকে নিয়ে ফজরের সলাত আদায় করিলেন। তখন এক ব্যক্তি আমাদের সাথে সলাত আদায় না করে দূরে দাঁড়িয়ে থাকল। নাবী [সাঃআঃ] সলাত শেষ করে বলিলেন, হে অমুক! আমাদের সঙ্গে সলাত আদায় করিতে কিসে বাধা দিল? লোকটি বলিল, আমি অপবিত্র হয়েছি। নাবী [সাঃআঃ] তাকে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করার নির্দেশ দিলেন, অতঃপর সে সলাত আদায় করিল। [ইমরান [রাদি.] বলেন] নাবী [সাঃআঃ] আমাকে অগ্রবর্তী দলের সঙ্গে পাঠিয়ে দিলেন এবং আমরা ভীষণ তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়লাম। এই অবস্থায় আমরা পথ চলছি। হঠাৎ উষ্ট্রে আরোহী এক মহিলা আমাদের নযরে পড়ল। সে পানি ভর্তি দুটি মশকের মাঝখানে পা ঝুলিয়ে বসে ছিল। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম, পানি কোথায়? সে বলিল, [আশেপাশে] কোথায়ও পানি নেই। আমরা বললাম, তোমার ও পানির জায়গার মধ্যে দূরত্ব কতটুকু? সে বলিল একদিন ও এক রাতের দূরত্ব। আমরা তাকে বললাম, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট চল। সে বলিল, আল্লাহর রসূল কী? আমরা তাকে যেতে না দিয়ে তাকে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট নিয়ে গেলাম। নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এসেও ঐ রকম কথাই বলিল যা সে আমাদের সঙ্গে বলেছিল। তবে সে তাহাঁর নিকট বলিল, সে কয়েকজন ইয়াতীম সন্তানের মা। নাবী [সাঃআঃ] তার মশক দুটি নামিয়ে ফেলতে আদেশ করিলেন। অতঃপর তিনি মশক দুটির মুখে হাত বুলালেন। আমরা তৃষ্ণার্ত চল্লিশ জন মানুষ পানি পান করে পিপাসা মিটালাম। অতঃপর আমাদের সকল মশক, বাসনপত্র পানি ভর্তি করে নিলাম। তবে উটগুলোকে পানি পান করান হয়নি। এত সবের পরও মহিলার মশকগুলো এত পানি ভর্তি ছিল যে তা ফেটে যাবার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের নিকট যা কিছু আছে উপস্থিত কর। কিছু খেজুর ও রুটির টুকরা জমা করে তাঁকে দেয়া হল। এ নিয়ে নারীটি খুশীর সঙ্গে তার গৃহে ফিরে গেল। গৃহে গিয়ে সকলের নিকট সে বলিল, আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল, এক মহা যাদুকরের সঙ্গে অথবা মানুষে যাকে নাবী বলে ধারণা করে তার সঙ্গে। আল্লাহ্ এই মহিলার মাধ্যমে এ বস্তিবাসীকে হিদায়াত দান করিলেন। স্ত্রীলোকটি নিজেও ইসলাম গ্রহণ করিল এবং বস্তিবাসী সকলেই ইসলাম গ্রহণ করিল।
[বোখারী পর্ব ৬১ : /২৫ হাঃ ৩৫৭১, মুসলিম ৫/৫৫, হাঃ ৬৮২] নামাজের স্থান-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি কেউ কোনো সলাতের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হইবে, তখন তাকে তা আদায় করিতে হইবে। এ ব্যতীত সে সলাতের অন্য কোনো কাফ্ফারা নেই। [কেননা, আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করিয়াছেন]
وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي
“আমাকে স্মরণের উদ্দেশে সলাত কায়েম কর”-[ত্বা–হা ১৪]।
[বোখারী পর্ব ৯ : /৩৭ হাঃ ৫৯৭, মুসলিম ৫/৫৫, হাঃ ৬৮৪] নামাজের স্থান-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস