৫০৫. ইবনি জুরাইজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
হাসান ইবনি মুসলিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাউস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর মাধ্যমে ইবনি আববাস [রাদি.]বর্ণনা করিয়াছেন, আমি নাবী [সাঃআঃ], আবু বাক্র, উমার ও উসমান [রাদি.]-এর সঙ্গে ঈদুল ফিত্রে উপস্থিত ছিলাম। তাঁরা খুত্বাহ্র পূর্বে সলাত আদায় করিতেন, পরে খুত্বাহ দিতেন। নাবী [সাঃআঃ] বের হলেন, আমি যেন দেখিতে পাচ্ছি তিনি হাতের ইঙ্গিতে [লোকদের] বসিয়ে দিচ্ছেন। তখন নাবী [সাঃআঃ] কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেনঃ
يَأَيُّهَا النَّبيُّ إِذَا جَاءَكَ الْمُؤمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ
………….. “হে নাবী! যখন ঈমানদার মহিলাগণ আপনার নিকট এ শর্তে বায়আত করিতে আসেন….. -[মুমতাহিনাঃ ১২]। এ আয়াত শেষ করে নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের জিজ্ঞেস করিলেন, তোমরা এ বায়আতের উপর আছ? তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা বলিল, হাঁ, সে ছাড়া আর কেউ এর জবাব দিল না। হাসান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জানেন না, সে মহিলা কে? অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা সাদাকাহ কর। সে সময় বিলাল [রাদি.] তাহাঁর কাপড় প্রসারিত করে বলিলেন, আমার মা-বাপ আপনাদের জন্য কুরবান হোক, আসুন, আপনারা দান করুন। তখন নারীগণ তাঁদের ছোট-বড় আংটিগুলো বিলাল [রাদি.]-এর কাপড়ের মধ্যে ফেলতে লাগলেন। আবদুর রায্যাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ………….. হলো বড় আংটি যা জাহিলী যুগে ব্যবহৃত হতো।
[বোখারী পর্ব ১৩ : /১৯ হাঃ ৯৭৯, মুসলিম ৮/১, হাঃ ৮৮৪] ঈদের সলাত ও মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৫০৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী ঈদুল ফিত্রের দিন দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করিলেন, পরে খুত্বাহ দিলেন। খুত্বাহ শেষে নেমে নারীদের নিকট আসলেন এবং তাঁদের নসীহত করিলেন। তখন তিনি বিলাল [রাদি.]-এর হাতের উপর ভর দিয়ে ছিলেন এবং বিলাল [রাদি.] তাহাঁর কাপড় প্রসারিত করে ধরলেন। এতে নারীগণ দান সামগ্রী ফেলতে লাগলেন
[বোখারী পর্ব ১৩ : /১৯ হাঃ ৯৭৮, মুসলিম পর্ব ৮ হাঃ ৮৮৫] ঈদের সলাত ও মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৫০৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] ও জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
ঈদুল ফিতরের সলাতে কিংবা ঈদুল আযহার সলাতে আযান দেয়া হত না।
[বোখারী পর্ব ১৩ : /৭ হাঃ ৯৬০, মুসলিম হাঃ ,] ঈদের সলাত ও মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৫০৮. রাবী হইতে বর্ণিতঃ
আমাকে আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন যে, ইবনি যুবায়র [রাদি.] এর বায়আত গ্রহণের প্রথম দিকে ইবনি আব্বাস [রাদি.] এ বলে লোক পাঠালেন যে, ঈদুল ফিত্রের সলাতে আযান দেয়া হতো না। এবং খুত্বাহ দেয়া হতো সলাতের পরে।
[বোখারী পর্ব ১৩ : /৭ হাঃ ৯৫৯, মুসলিম হাঃ ,] ঈদের সলাত ও মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৫০৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আবু বকর এবং উমার [রাদি.] উভয় ঈদের সলাত খুত্বাহর পূর্বে আদায় করিতেন।
[বোখারী পর্ব ১৩ : /৮ হাঃ ৯৬৩, মুসলিম হাঃ ,] ঈদের সলাত ও মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৫১০. আবু সাঈদ খুদ্রী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আযহার দিন ঈদগাহে যেতেন এবং সেখানে তিনি প্রথম যে কাজ শুরু করিতেন তা হল সলাত। আর সলাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন এবং তাঁরা তাঁদের কাতারে বসে থাকতেন। তিনি তাঁদের নসীহত করিতেন, উপদেশ দিতেন এবং নির্দেশ দান করিতেন। যদি তিনি কোন সেনাদল পাঠাবার ইচ্ছে করিতেন, তবে তাহাদের আলাদা করে নিতেন। অথবা যদি কোন বিষয়ে নির্দেশ জারী করার ইচ্ছে করিতেন তবে তা জারি করিতেন। অতঃপর তিনি ফিরে যেতেন। আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, লোকেরা বরাবর এ নিয়মই অনুসরণ করে আসছিল। অবশেষে যখন মারওয়ান মাদীনার আমীর হলেন, তখন ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিত্রের উদ্দেশ্যে আমি তাহাঁর সঙ্গে বের হলাম। আমরা যখন ঈদগাহে পৌঁছলাম তখন সেখানে একটি মিম্বার দেখিতে পেলাম, সেটি কাসীর ইবনি সাল্ত [রাদি.] তৈরি করেছিলেন। মারওয়ান সলাত আদায়ের পূর্বেই এর উপর আরোহণ করিতে উদ্যত হলেন। আমি তাহাঁর কাপড় টেনে ধরলাম। কিন্তু তিনি কাপড় ছাড়িয়ে খুত্বাহ দিলেন। আমি তাকে বললাম, আল্লাহ্র কসম! তোমরা [রাসূলের সুন্নাত] পরিবর্তন করে ফেলেছ। সে বলিল, হে আবু সাঈদ! তোমরা যা জানতে, তা গত হয়ে গেছে। আমি বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমি যা জানি, তা তার চেয়ে ভাল, যা আমি জানি না। সে তখন বলিল, লোকজন সলাতের পর আমাদের জন্য বসে থাকে না, তাই আমি খুত্বাহ সলাতের পূর্বেই দিয়েছি।
[বোখারী পর্ব ১৩ : /৬ হাঃ ৯৫৬, মুসলিম হাঃ ৮৮৯] ঈদের সলাত ও মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস