যেসব ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা জায়েয
ইমাম নববী (রা) বলেনঃ মিথ্যা বলা মূরতঃ হারাম; কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে কতক গুলো শর্ত সাপেক্ষে জায়েয। সংক্ষেপে তা হলঃ উদ্দেশ্য সাধনের জন্যই মানুষকে কথা বলেতে হয়। ভাল উদ্দেশ্য যদি মিথ্যা ছাড়া লাভ করা যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে মিথ্যা কথা বলা হারাম; কিন্তু যদি তা মিথ্যা বলা ছাড়া লাভ করা না যায়, তবে সেক্ষেত্রে মিথ্যা কথা বলা জাযয়য। উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য যদি মুবাহ হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে মিথ্যা বলাও মুবাহ। আর যদি তা ওয়াজিব হয় তাহলে মিথ্যা বলাও ওয়াজিব। যেমনঃ কোন হত্যাকারী যালেমের ভয়ে কোন মুসলামান কোন ব্যক্তির কাছে পালিয়ে থাকে, অথবা ধন-সম্পদ লুট হয়ে যাওয়ার ভয়ে তা অন্যের কাছে সরিয়ে রাখে আ যালেম যদি কারো কাছে তা জানার জন্যে খোঁজ নেয় তখন মিথ্যা বলা ঐ ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব। এমনিভাবে কারো কাছে যদি কোন আমানত গচ্ছিত থাকে আর যালেম যদি তা ছিনিয়ে নিতে চায়, তবে তা গোপন করার জন্য মিথ্যা বলা ওয়াজিব। এসব ক্ষেত্রে রূপক ভাষার মাধ্যমে কাজ উদ্ধার করতে হবে। তার কথার সাথে সঠিক উদ্দেশ্য থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সে মিথ্যুক হবে না যদিও শব্দগুলো বাহ্যত মিথ্যার অর্থ প্রকাশ করে বা যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে তার দিক থেকে বিচার করলে মিথ্যাই মনে হয়। আর যদি চতুরতা পরিহার করে সরাসরি মিথ্যা কথা বলা হয় তবুও তা হারাম হবে না। এসব ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা জায়েয হওয়ার ব্যাপারে আলেমগণ উম্মে কুলসুম(রা) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস প্রমাণ হিসেবে পেশ করেছেন। হাদীসটি এখানে উল্লেখ করা হলঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি দু’দলের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে ভাল কথা বানিয়ে বলে কিংবা কল্যাণের কথা বলে সে মিথ্যুক নয়।” (বুখারী, মুসলিম)
মুসলিমের বর্ণনায় আছে, উম্মে কুলসুম বলেন, আমি তাঁকে কখনও মানুষকে চতুরতা অবলম্বন করার অনুমতি দিতে শুনি নি। তবে তিনটি ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছেনঃ যুদ্ধের ব্যাপারে, মানুষের মাঝে বিবাদ মিটিয়ে সন্ধি ও শান্তি স্থাপনে এবং স্বামী স্ত্রীর সাথে ও স্ত্রী স্বামীর সাথে কথোপকথনে।