কল্যাণের পথ প্রদর্শন এবং পুণ্য পথ কিংবা পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করার বিবরণ

মহান আল্লাহ বলেনঃ

তুমি তোমার রব -এর দিকে (লোকদের) আহবান জানাও (সূরা কাসাসঃ ৮৭)

মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ

তুমি তোমার রব-এর (নির্দেশিত) পথের দিকে আহবান জানাও কুশলতা ও সদুপদেশ সহকারে। (সূরা নাহ্‌লঃ ১২৫)

মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ

তোমরা সৎকাজ ও খোদাভীতির ব্যাপারে পরস্পরকে সাহায্য করো। (সূরা মায়েদাঃ ২)

মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ

তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল অব্যশই থাকতেই হবে, যারা (লোকদের) কল্যাণের দিকে ডাকতে থাকবে। (সূরা আলে ইমরানঃ ১০৪)

 

১৭৩. হযরত আবু মাসউদ উতবা ইবনে ‘আমর আনসারী বাদ্‌রী (রা) বলেনঃ রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজের পথনির্দেশ করে, সে ঠিক ততটাই বিনিময় পায়, যতটা বিনিময় ঐ কাজ সম্পাদনকারী নিজে বিনিময় করে থাকে।’ (মুসলিম)


১৭৪. হযরত আবু হুরাইরা (রা) বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি সঠিক পথের (হেদায়েতের) দিকে (লোকদের) আহবান জানায়, তার জন্য এ পথের পথিকদের পারিশ্রমীকের সমান পারিশ্রমিক রয়েছে। এতে প্রথমোক্তদের বিনিময় কিছুমাত্র কম হবে না। যে ব্যক্তি ভ্রান্ত পথে (গোমরাহীর) দিকে আহবান জানায়, তার উক্ত পথের পথিকদের গুনাহরই গুনাহ হবে। এতে তাদের গুনাহর কিছুমাত্র কম হবে না। (মুসলিম)


১৭৫. হযরত আবুল আব্বাস সাহ্‌ল ইবনে সা’দ সায়েদী বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার যুদ্ধের দিন বলেনঃ আমি আগামীকাল অবশ্যই এই পতাকা এমন এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেব যা মাধ্যমে আল্লাহ নিশ্চিত বিজয় এনে দেবেন। সে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাঁকে ভালোবাসেন। সাহাবীরা রাতভর চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করতে লাগলেন যে, কার হাতে এই পতাকা তুলে দেয়া হবে। সকাল বেলা সবাই পতাকা লাভের আশায় রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে হাজির হলেন। কিন্তু, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, আলী ইবনে আবু তালিব কোথায়? তাকে বলা হলোঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল! তিনি চোখের যন্ত্রণায় ভূগছেন। রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তার কাছে লোক পাঠাও।’ তারপর তাকে ডেকে আনা হলো। রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চোখে থুথু ছিটিয়ে দিলেন এবং তার আরোগ্যের জন্য (আল্লাহর কাছে) দোয়া করলেন। তিনি এতে এমনভাবে আরোগ্য লাভ করলেন যেন তার (চোখে) কোন রোগই ছিল না। আলী (রা) বললেনঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল! শত্রুরা আমাদের মতো (মুসলমান) না হওয়া পর্যন্ত আমি কি তাদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবো? রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাদের এলাকায় উপনীত না হওয়া পর্যন্ত এগুতে থাকবে। এরপর তাদেরকে ইসলামের দিকে আহবান জানাবে এবং আল্লাহর হক আদায়ের ব্যাপারে তাদের করণীয় নির্দেশ করবে। আল্লাহর কসম! তোমার  মাধ্যমে আল্লাহ একটি লোককেও সুপথ প্রদর্শন করলে সেটা তোমার জন্য (মূল্যবান) লাল উটের চেয়ে উত্তম। (বুখারী ও মুসলিম)


১৭৬. হযরত আনাস (রা) বর্ণনা করেন, একদা আসলাম বংশের জনৈক যুবক নিবেদন করলঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই; কিন্তু সে জন্যে আমার প্রস্তুতি নেবার মতো সঙ্গতি নেই। তিনি বললেনঃ তুমি অমুক লোকের সঙ্গে দেখা করো। সে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যুবকটি তার কাছে গিয়ে বললো, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমায় সালাম জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, তুমি যা কিছু সরঞ্জাম যোগাড় করেছ, তা আমায় দিয়ে দাও। লোকটি বললো, ‘হে অমুক (মহিলা)! একে আমার সমস্ত সরঞ্জাম দিয়ে দাও এবং তার কোন কিছুই রেখে দিও না। আল্লাহ্‌র কসম! তোমরা তার কোন কিছু রেখে না দিলে তাকে আল্লাহ্‌ তোমার জন্যে বরকতময় করে দেবেন।     (মুসলিম)


 

Was this article helpful?

Related Articles