এটা [বৈধ] যে কেউ কোন কিছু করার কসম খেলো এবং পরেও অন্যটা করা ভাল দেখল তাহলে সে ভালটা করিবে এবং তার কসমের কাফ্‌ফারা দিবে।

১০৬৯. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমার সাথীরা আমাকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে পাঠালেন তাহাদের জন্য পশুবাহন চাওয়ার জন্য। কারণ তাঁরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কষ্টের যুদ্ধ অর্থাৎ তাবূকের যুদ্ধে যাচ্ছিলেন। অনন্তর আমি এসে বললাম, হে আল্লাহ্‌র নাবী [সাঃআঃ]! আমার সাথীরা আমাকে আপনার কাছে এজন্য পাঠিয়েছেন যে, আপনি যেন তাহাদের জন্য পশুবাহনের ব্যবস্থা করেন। তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমি তোমাদের জন্য কোন সওয়ারীর ব্যবস্থা করিতে পারব না। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি রাগান্বিত। [কিন্তু কী কারণে তিনি রাগান্বিত] তা বুঝলাম না। আর আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর পশুবাহন না দেয়ার কারণে দুঃখিত মনে ফিরে আসি। আবার এ ভয়ও ছিল যে, নাবী [সাঃআঃ] না আমার উপরই অসন্তুষ্ট হন। তাই আমি সাথীদের কাছে ফিরে যাই এবং নাবী [সাঃআঃ] যা বলেছেন তা আমি তাহাদের জানাই। অল্পক্ষণ পরেই শুনতে পেলাম যে, বিলাল ডাকছেনঃ আবদুল্লাহ ইবনি কাইস কোথায়? তখন আমি তাহাঁর ডাকে সাড়া দিলাম। তখন তিনি বলিলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আপনাকে ডাকছেন, আপনি হাজির হোন। আমি যখন তাহাঁর কাছে হাজির হলাম তখন তিনি বলিলেন, এই জোড়া এবং ঐ জোড়া এমনি ছয়টি উটনী যা সাদ থেকে ক্রয় করা হয়েছে, তা গ্রহণ কর এবং সেগুলো তোমার সাথীদের কাছে নিয়ে যাও এবং বল যে, আল্লাহ তাআলা [রাবীর সন্দেহ] অথবা বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এগুলো তোমাদের যানবাহনের জন্য ব্যবস্থা করিয়াছেন, তোমরা এগুলোর উপর আরোহণ কর। আমি তখন সেগুলো নিয়ে তাহাদের নিকট গেলাম এবং বললাম যে, আল্লাহর নাবী [সাঃআঃ] এগুলোর উপর তোমাদের আরোহণের জন্য ব্যবস্থা করিয়াছেন। কিন্তু আমি তোমাদেরকে ছাড়বনা যতক্ষণ না তোমাদের কেউ আমার সঙ্গে তার কাছে যাবে সে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কথোপকথন শুনেছে। তোমরা এমন ধারণা যে, নাবী [সাঃআঃ] যা বলেননি আমি তা তোমাদের বর্ণনা করেছি। তখন তারা আমাকে বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আপনি আমাদের কাছে সত্যবাদী বলে পরিচিত। তবুও আপনি যা চান, আমরা অবশ্য করব। অনন্তর আবু মূসা [রাদি.] তাহাদের মধ্যেকার একদল লোককে সঙ্গে নিয়ে রওয়ানা হন এবং যারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কর্তৃক অপারগতা প্রকাশ এবং পরে তাহাদেরকে দেয়ার কথা শুনিয়াছিলেন, তাহাদের কাছে আসেন। তখন তারা সেরূপ কথাই বর্ণনা করিলেন যেমন আবু মূসা [রাদি.] বর্ণনা করেছিলেন।

[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৭৮ হাদীস নং ৪৪১৫; মুসলিম হাঃ ২৭/৩, ১৬৪৯]


১০৭০. যাহদাম [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আবু মূসা [রাদি.]-এর নিকট ছিলাম, এ সময় মুরগীর [গোশত] সম্বন্ধে আলোচনা উঠল। তথায় তাইমুল্লাহ গোত্রের এমন লাল বর্ণের এক ব্যক্তিও উপস্থিত ছিল, যেন সে মাওয়ালী [রোমক ক্রীতদাস]-দের একজন। তাকে খাওয়ার জন্য ডাকলেন। তখন সে বলিল, আমি মুরগীকে এমন বস্তু খেতে দেখেছি, যাতে আমার ঘৃণা জন্মেছে। তাই আমি শপথ করেছি যে, তা খাব না। আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, আস, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে হাদীস শুনাচ্ছি। আমি কয়েকজন আশআরী ব্যক্তির পক্ষে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট সাওয়ারী চাইতে যাই। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমি তোমাদের সাওয়ারী দিব না এবং আমার নিকট তোমাদের দেয়ার মত কোন সাওয়ারীও নেই। এ সময় আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট গনীমতের কয়েকটি উট আনা হলো। তখন তিনি আমাদের খোঁজ নিলেন এবং বলিলেন, সেই আশআরী লোকেরা কোথায়? অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] উঁচু সাদা চুলওয়ালা পাঁচটি উট আমাদের দিতে বলিলেন। যখন আমরা উট নিয়ে রওয়ানা দিলাম, বললাম, আমরা কী করলাম? আমাদের কল্যাণ হইবে না। আমরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট ফিরে এলাম এবং বললাম, আমরা আপনার নিকট সাওয়ারীর জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন আপনি শপথ করে বলেছিলেন, আমাদের সাওয়ারী দিবেন না। আপনি কি তা ভুলে গেছেন? আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি তোমাদের সাওয়ারী দেইনি বরং আল্লাহ তাআলা তোমাদের সাওয়ারী দান করিয়াছেন। আর আল্লাহ্‌র কসম, আমার অবস্থা এই যে, ইন্শাআল্লাহ্ কোন বিষয়ে আমি কসম করি এবং তার বিপরীতটি কল্যাণকর মনে করি, তখন সেই কল্যাণকর কাজটি আমি করি এবং কাফ্‌ফারা দিয়ে শপথ মুক্ত হই।

[বোখারী পর্ব ৫৮ অধ্যায় ১৫ হাদীস নং ৩১৩৩; মুসলিম ২৭/৩ হাঃ ১৬৩৯]


১০৭১. আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ! তুমি নেতৃত্ব চেয়ো না। কেননা, চাওয়ার পর যদি নেতৃত্ব পাও তবে এর দিকে তোমাকে সোপর্দ করে দেয়া হইবে। আর যদি না চেয়ে তা পাও তবে তোমাকে এর জন্য সাহায্য করা হইবে। কোন কিছুর ব্যাপারে যদি কসম কর আর তা ব্যতীত অন্য কিছুর মাঝে কল্যাণ দেখিতে পাও; তবে কসমের কাফ্‌ফারা আদায় করে তার চেয়ে উত্তমটি অবলম্বন কর।

[বোখারী পর্ব ৮৩ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৬৬২২; মুসলিম ২৭/৩, হাঃ ১৬৫২]

Was this article helpful?

Related Articles