৫২২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ হলো। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] [সালাতে] দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ সূরা পাঠ করিলেন, অতঃপর রুকূ করিলেন, আর তা দীর্ঘ করিলেন। অতঃপর রুকূ হইতে মাথা তুলেন এবং অন্য একটি সূরা পাঠ করিতে শুরু করিলেন। পরে রুকূ সমাপ্ত করে সাজদাহ্ করিলেন। দ্বিতীয় রাকাআতেও এরূপ করিলেন। অতঃপর বললেনঃ এ দুটি [চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ] আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের অন্যতম। তোমরা তা দেখলে গ্রহণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সলাত আদায় করিবে। আমি আমার এ স্থানে দাঁড়িয়ে, আমাকে যা ওয়াদা করা হয়েছে তা সবই দেখিতে পেয়েছি। এমনকি যখন তোমরা আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে দেখেছিলে তখন আমি দেখলাম যে, জান্নাতের একটি [আঙ্গুর] গুচ্ছ নেয়ার ইচ্ছে করছি এবং জাহান্নামে দেখিতে পেলাম যে, তার একাংশ অন্য অংশকে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলছে। আর যখন তোমরা আমাকে পিছনে সরে আসতে দেখেছিলে আমি দেখলাম সেখানে আম্র ইবনি লুহাইকে যে সায়িবাহ [এর অর্থ বিমুক্ত, পরিত্যক্ত, বাঁধনমুক্ত। জাহিলী যুগে দেব-দেবীর নামে উট ছেড়ে দেয়ার প্রথা ছিল। এসব উটের দুধ পান করা এবং তাকে বাহনরূপে ব্যবহার করা অবৈধ মনে করা হত।] প্রথা প্রবর্তন করেছিল।
[বোখারী পর্ব ২১ : /১১ হাঃ ১২১২, মুসলিম ১০/ ২ হাঃ ৯০১] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৫২৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক ইয়াহুদী মহিলা তাহাঁর নিকট কিছু জিজ্ঞেস করিতে এলো। সে আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে বলিল, আল্লাহ্ তাআলা আপনাকে কবর আযাব হইতে রক্ষা করুন। অতঃপর আয়িশাহ্ [রাদি.] আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করেন, কবরে কি মানুষকে আযাব দেয়া হইবে? আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ তা হইতে আল্লাহ্র নিকট পানাহ চাই।
পরে কোন এক সকালে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] সওয়ারীতে আরোহণ করেন। তখন সূর্যগ্রহণ আরম্ভ হয়। তিনি সূর্যোদয় ও দুপুরের মাঝামাঝি সময় ফিরে আসেন এবং কামরাগুলোর মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করেন। অতঃপর তিনি সলাতে দাঁড়ালেন এবং লোকেরা তাহাঁর পিছনে দাঁড়াল। অতঃপর তিনি দীর্ঘ কিয়াম করেন। অতঃপর তিনি দীর্ঘ রুকূ করেন পরে মাথা তুলে দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে এ কিয়াম পূর্বের কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ করেন, তবে এ রুকূ পূর্বের রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন এবং সাজদাহ্য় গেলেন। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম করিলেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর দীর্ঘ রুকূ করিলেন। এ রুকূ প্রথম রাকআতের রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার রুকূ করিলেন এবং তা প্রথম রাকআতের রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। পরে মাথা তুললেন এবং সাজদাহ্য় গেলেন। অতঃপর সলাত শেষ করিলেন। আল্লাহ্র যা ইচ্ছে তিনি তা বলিলেন এবং কবর আযাব হইতে পানাহ চাওয়ার জন্য উপস্থিত লোকদের নির্দেশ দেন।
[বোখারী পর্ব ১৬ : /৭ হাঃ ১০৪৯-১০৫০, মুসলিম ১০/২, হাঃ ৯০৩] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস