জ্যোতিষী এবং ভাগ্য গণনাকারী প্রভৃতির কাছে গমণ করা নিষেধ

১৬৭০. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক লোক রাসূলুল্লাহ (স) কে গণকদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ঐগুলো কিছুই নয়। জনতা বলল, রাসূলুল্লাহ (স) ! তারা কখনো কখনো আমাদেরকে এমন সব কথা বলে যা প্রকৃতই সত্য হয়। রাসূলুল্লাহ (স) বললেন, এগুলো সত্য কথার একটি অংশ, যা জ্বীনেরা (ফেরেশতার কাছ হতে) আড়িঁ পেতে শুনে তা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে আসে এবং তাদের বন্ধুকে কানেকানে বলে দেয়। অতঃপর গণকরা নিজেদের মন হতে এর সাথে শত শত মিথ্যা কথা যুক্ত করে। ( বুখারী ও মুসলিম)

বুখারী অন্য বর্ণনায় হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (স) কে বলতে শুনেছেন যে, ফেরেশতারা ( তাঁদের প্রতি অর্পিত) আল্লাহর নির্দেশ নিয়ে শূন্য জগতে ছড়িয়ে পড়েন এবং জারিকৃত আসমানী নির্দেশ সম্পর্কে আলোচনা করতে থাকেন, শয়তান তখন চুরি কর তাদের কথা শুনে । অতঃপর সেগুলো গণকদেরকে কানে কানে বলে দেয়। এরপর গণকরা এর সাথে নিজেদের মন হতে হতে শত শত মিথ্যা কথা যুক্ত করে।


১৬৭১. হযরত সাফিয়া বিনত আবু ওবায়দা (রা) নবী করীম (স) -এর কোন স্ত্রীর মাধ্যমে নবী করীম (স) কর্তৃক বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি গণক বা হস্তরেখাবিদের কাছে গিয়ে কোন বিষয়ে জানতে চাইল এবং (সে যা বলল তা) বিশ্বাস করল, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার নামায মঞ্জুর হবে না।” ( মুসলিম )


১৬৭২. হযরত কাবীসা ইবনে মুখারিফ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (স) কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘ইয়াফাহ’ -রেখা টানা ‘তাইরাহ’ -অশুভ আলামত এবং পাখি উড়িয়ে শুভাশুভ নির্ধারণ করা আল্লাহদ্রোহিতামূলক কর্ম। (আবু দাউদ)

তিনি বলেছেনঃ ‘আত-তারক’ অর্থ পাখি হাঁকানোর মধ্যে দিয়ে শুভ অথবা অশুভ ফল নির্ণয় করা। পাখি উড়ে যদি ডান দিকে যায় তবে শুভ লক্ষণ আর যদি বাম দিকে যায় তবে অশুভ লক্ষণ মনে করা হয়। আলইয়াফাহ অর্থঃ হস্তলিপি, হাতের রেখা বা চিহ্ন। জাওহারী সিহাহ নামক অভিধানে বলেছেনঃ আল-জিবত অর্থ মূর্তি, গণক ও যাদুকর। (আবূ দাউদ)


১৬৭৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নক্ষত্র থেকে জ্যোতিষী ইলম অর্জন করে সে প্রকারন্তরে যাদুবিদ্যা অর্জন করল। যত অধিক জ্যোতিষী বিদ্যা অর্জন করবে তত অধিকই যেন যাদুবিদ্যা অজর্ন করল। ( আবু দাউদ )


১৬৭৪. হযরত মুয়াবিন ইবনে হাকাম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি সবে মাত্র অজ্ঞাতার যুগ পরিত্যাগ করেছি। আল্লাহ তায়ালা আমাকে ইসলাম কবুলের তাওফিক দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে বেশ কিছু ব্যক্তি গণকের নিকট যায়। তিনি বললেন, তুমি তাদের কাছে যেও না। আমি বললাম, আমাদের কোন কোন লোক পাখি উড়িয়ে শুভাশুভের পূর্ব লক্ষণ নির্ণয় করে। তিনি বললেনঃ এটি হল, তাদের অন্তরের একটি ধারনা মাত্র। সুতরাং সেটি তাদের ক্ষতি করতে পারবে না। আমি বললাম, আমাদের কিছু লোকেরাতো রেখে টেনে শুভাশুভ নির্ণয় করত? হস্তরেখা তিনি বললেন, নবীদের মধ্যে থেকে একজন এরূপ করতেন। যার রেখা সেই নবীর রেখার সাথে মিলবে তা ঠিক হবে। না হয় ঠিক হবে না।”( মুসলিম )


১৬৭৫. হযরত আবু মাসউদ বাদরী (রা) থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেছেন) রাসূলুল্লাহ (স) কুকুরের মূল্য, ব্যভিচারিনীর উপার্জন ও গণকের উপার্জন থেকে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম)


 

Was this article helpful?

Related Articles