অহংকার ও আত্মগর্ব সংক্রান্ত বর্ণনা

অহংকার ও আত্মগর্ব হারাম

[Note: এ অধ্যায়ের কুরআনের আয়াত গুলো পরে আপডেট করা হবে]

 

৬১২. আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যার অন্তরে অণু পরিমাণও অহংকার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। একজন বলল, যে কোন লোক তো চায় যে, তার কাপড়টা সুন্দর হোক, জুতাটা আকর্ষণীয় হোক (এটাও কি খারাপ)? তিনি বলেনঃ আল্লাহ নিজে সুন্দর। তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন। অহংকার হল, গর্বভরে সত্যকে অস্বীকার করা এবং মানুষকে হেয় জ্ঞান করা।   (মুসলিম)


৬১৩. সালামা ইবনুল আকওয়া (রা) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট বাম হাতে আহার করলে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ ডান হাতে খাও। সে বলল, আমি পারছি না। তিনি বলেনঃ তুমি যেন না পার। অহংকারই তার প্রতিবন্ধক ছিল। সে আর কখনো মুখ পর্যন্ত হাত তুলতে পারেনি। (মুসলিম)


৬১৪. হারিসা ইবনে ওয়াহাব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছিঃ আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামীদের বিষয়ে জানাব না? তারা হলঃ প্রত্যেক অহংকারী, সীমালংঘনকারী, বদবখত ও উদ্ধত লোক।

ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।


৬১৫. আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যে বিতর্ক হল। জাহান্নাম বলল, অহংকারী ও উদ্ধত যারা, তারাই আমার মধ্যে প্রবেশ করবে। জান্নাত বলল, আমার মধ্যে আসবে ঐসব লোক, যারা দুর্বল মিসকিন ও অসহায়। আল্লাহ উভয়ের মাঝে ফায়সালা করে দিলেনঃ জান্নাত! তুমি আমার রহমত। যে বান্দার প্রতি রহম করার আমার ইচ্ছা হবে, তোমার সাহায্যে আমি তার প্রতি রহম করব। আর জাহান্নাম! তুমি আমার শাস্তি। যাকে আমি ইচ্ছা করব, তোমার দ্বারা তাকে শাস্তি দেব। তোমাদের উভয়কে পূর্ণ করা আমার দায়িত্ব।  (মুসলিম)


৬১৬. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ ঐ লোকের প্রতি ফিরে তাকাবেন না, যে অহংকারবশে তার তহবন্দ (টাখনুর নীচে) ঝুলিয়ে দিল। (বুখারী, মুসলিম)


৬১৭. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ তিনি ধরনের লোকের সাথে আল্লাহ কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের পবিত্র করবেন না, তাদের প্রতি তাকাবেনও না এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তিঃ (১) বৃদ্ধ যেনাকারী, (২) মিথ্যাবাদী শাসক, (৩) অহংকারী দরিদ্য।   (মুসলিম)


৬১৮. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ সম্মানিত মহান আল্লাহ বলেন, “ইজ্জত ও মাহাত্ম হচ্ছে আমার পাজামা এবং অহংকার ও শ্রেষ্ঠত্ব আমার চাদর। যে ব্যক্তি এ দু’টির কোন একটিতে আমার সাথে সংঘর্ষ ও বিবাদে লিপ্ত হবে তাকে আমি অবশ্যই শাস্তি দেব।”  (মুসলিম)


৬১৯. আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ (অতীত কালে) এক লোক মূল্যবান পোশাক পরে মাথায় (বা চুলে) সিঁথি কেটে ও চালচলনে অহংকারী ভাব প্রকাশ করে হেঁটে যাচ্ছিল। এতে সে নিজেকে খুবই আনন্দিত ও গর্বিত অনুভব করছিল। হঠাৎ আল্লাহ তাকে মাটির নিচে দাবিয়ে দিলেন। কিয়ামত পর্যন্ত সে ভূগর্ভে দেবে যেতে থাকবে। (বুখারী, মুসলিম)


৬২০. সালামা ইবনুল আকওয়া (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ মানুষ এমনভাবে আত্মগর্বে লিপ্ত হয়ে পড়ে যে, অবশেষে তার নাম অহংকারী ও উদ্ধতদের মধ্যে লিপিবদ্ধ হয়, ফলে সে অহংকারী ও উদ্ধত লোকদের অনুরূপ আযাবে পতিত হয়।

ইমাম তিরমিযী এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন এবং বলেছেন, এটি হাসান হাদীস।


 

Was this article helpful?

Related Articles